পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামীয়া ফাযিল মাদরাসার আলোচিত ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার মামলার কাক্সিক্ষত রায় আজ। অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নুসরাত রাফি হত্যা মামলার রায় মাত্র ৬ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হচ্ছে। এদিকে এই রায়কে ঘিরে তাদের পরিবারে চলছে অজানা আতঙ্ক। তারা তাদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করার আহবান জানান। জানা যায়, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এই নরকীয় হত্যাকান্ডটি ঘটে। শুরুতেই গত ২৭শে মার্চ মাদরাসার প্রিন্সিপাল সিরাজ-উদ-দৌলা কতৃক তার কার্যালয়ে যৌন হয়রানীর শিকার হন নুসরাত। এই ঘটনায় তার মা শিরিন আক্তার বাদি হয়ে সোনাগাজী থানায় প্রিন্সিপাল সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে সিরাজকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এই ঘটনায় সিরাজের পক্ষে বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেয় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। সিরাজের বিপক্ষে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে নুসরাতের পরিবারের উপর একের পর এক চাপ আসতে থাকে। সিরাজের উপর থেকে অভিযোগ তুলে নিতে তার লেলিয়ে দেয়া মুখশধারী ক্যাডার বাহিনি ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে নুসরাতকে ডেকে নিয়ে মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে যায়, পরে তাকে কেরোসিন দিয়ে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তার দগ্ধ শরীর নিয়ে নিচে নেমে এলে পুলিশ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়,পরে সেখান থেকে ফেনী সদর হাসাপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থার অবনতি দেখে তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধিন অবস্থায় ১০ এপ্রিল মারা যায় নুসরাত।
এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল তার বড় ভাই নোমান ৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। মামলায় ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মো শাহআলম ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। তদন্তে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় পিবিআই অন্য ৫ জনকে অব্যাহতি দেয়ার অনুমতি দিলে আদালত তা অনুমোদন করেন।
গত ২৮ মে ফেনীর সনিয়ির জুড়িশিয়িাল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেনের আদালতে সোনাগাজী ইসলাময়িা ফাজিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল সিরাজ উদ-দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসনে শামীম (২০), কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ কাউন্সিলর (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়রে (২১), জাবের হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসনে (১৯), হাফজে আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দনি (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহনি ওরফে চম্পা/শম্পা (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতখোর উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসনে ওরফে মামুন (২২), সোনাগাজী উপজলো আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমনি (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীম (২০) কে আসামী করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভেিযাগপত্র দাখলি করনে তদন্ত র্কমর্কতা। ৩০ মে বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইন অভিযোগপত্র মামলার নথি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে পাঠিয়ে দেন। গত ১০ জুন মামলাটি অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করে।
জবানবন্দি, সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক শুনানির পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণার জন্য ২৪ অক্টোবর দিন ধার্য্য করেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারিক মামুনুর রশিদ। বাদিপক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু বলেন, মাত্র ৬১ কার্য্য দিবসে আলোচিত নুসরাত হত্যার মামলার রায় নিস্পত্তি হতে চলেছে। যা দেশের ইতিহাসে নজিবিবিহীন।
তিনি আশা করেন, এই মামলা দিবালোকের মত পরিস্কার। আসামিরা সর্বচ্চ শাস্তি পাবে। এদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী কামরুল হাছান বলেন, এই বিষয়ে আমি বেশি কিছু বলতে চাই না, কোর্ট ন্যায় বিচারে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
নুসরাতের মামলার নিস্পত্তির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে শিরিন আখতার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা আর দিক-নির্দেশনা না থাকলে এত দরত সময়ে হত্যাকান্ডের বিচার হওয়া সম্ভব হতো না। তিনি আমাদের পাশে ছিলেন বলেই আসামিদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সান্তনা দিয়েছিলেন, এ হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। আমি সে কথাটি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে রায়ের জন্য অপেক্ষা করে আছি।
শিরিন আখতার বলেন, যতজন অপরাধী আমার মেয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল, সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। তিনি বলেন সকল আসামিকে ফাঁসি না দিয়ে পুড়িয়ে মারা হোক। কারণ আমার মেয়েকে যেভাবে পুড়িয়ে মেরেছে এদেরকে সেভাবে যন্ত্রনা দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়। তিনি জোর দাবি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।