বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পটুয়াখালীর বাউফলে দৈত্যাকৃতির দনব গাড়ির উৎপাতে অতিষ্ট জনসাধারন। সারা উপজেলায় অবৈধ ভাবে দাপিয়ে চলছে এই পন্য পরিবহনের যানটি। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন মাঝেমধ্যে সকল যানবাহনের কাগজপত্র নিরীক্ষার উদ্যোগ নিলেও অবৈধ ভাবে পরিচালিত (স্থানীয় নামের) রুস্তুম, হামজা, উলকা বা টলি নামের যানবাহনটি বন্ধে কোন বাস্তব পদক্ষেপ নেই।
কৃষিকাজের ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি এই যন্ত্রটি পন্য পরিবহনের কাজে ব্যবহার করে একদিকে দুর্ঘটনার কবলে ঠেলে দিচ্ছে জনসাধারনকে অন্যদিকে গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য তৈরী করা সড়ক ব্যবস্থাকে সল্পতম সময়ের মধ্যে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানাযায়, রুস্তুম, হামজা, উলকা, বা টলি নামে স্থানীয় ভাবে পরিচিত এইসব যন্ত্র মূলত চাষাবাদের কাজে ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি। চাষাবাদের মাঠে চলাচলের এই যন্ত্রটিকে একশ্রেণির মুনফা লোভী লোক রাজনৈতিক আশ্রয়ে অতিরিক্ত চাকা সংযোজন করে ট্রাক হিসেবে ব্যবহার করছেন। ৬চাকা বিশিষ্ট এই গাড়িগুলো ৮ফিট চওড়া এবং ৪০ফিট লম্বা। সড়কে চলাচলের কোন বৈধতা না থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে অবাধে চলাচল করছে দৈত্যাকৃতির ওই যানটি।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বাউফল উপজেলায় অন্তত ১৫০/২০০টি এমন যান রয়েছে। ৬চাকা বিশিষ্ট দৈত্যাকৃতির যানটির চালকের কোন ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক স্বিকৃতি না থাকলেও মুনাফা লোভীদের ছত্রছায়ায় সকল সড়কে ফ্রি-স্টাইলে দাপিয়ে বেরাচ্ছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি) বাউফল অফিসের একজন উপ সহকারি প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “ওই দানব আকৃতির যান রাস্তায় চলাচলের সময় রাস্তা কাঁপতে থাকে। পাকা রাস্তার বেহাল দশা করেছে এই দৈত্যাকৃতির যান ট্রলি। শিঘ্রই এই দৈত্যাকৃতির যান ট্রলি সড়কে চলাচল নিষিদ্ধ না করলে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিধ্বস্ত হয়ে পরবে”।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, “বৈধ সড়কে চলাচলকারী অবৈধ টলি গাড়ী বন্ধের জন্য একাধিকবার প্রশাসনের শরনাপন্ন হয়েও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি”। অভিযোগ রয়েছে এটি যারা ব্যবহার করছেন তাঁরা সবাই প্রভাবশালী। আবার অধিকাংশ টলি চলছে সরকারি দলের নেতা কিংবা জনপ্রতিনিধিদের ছত্র-ছায়ায়।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, এই যানের চাকায় পিস্ট হয়ে ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে এই উপজেলায়।
বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অবদুল মেতালেব হাওলাদার গত ১২সেপ্টেম্বর তাঁর ফেইসবুক আইডি থেকে দৈত্যাকৃতির যানটির চলাচল বন্ধে একটি পোষ্ট দিয়ে তাতে তিনি লিখেন, “আমাদের দেশে সম্ভাবত ভারত থেকে মাহিন্দ্রা ট্রাক্টর সরকার আমদানি করছে কৃষকের স্বার্থে, যাতে কৃষক আধুনিক চাষাবাদে যুক্ত হয়ে কৃষিকাজ করতে পারে, এবং সহজে ফসল ঘড়ে তুলতে পারে। কিন্তু সরকারের সেই চিন্তা বা কাজ কি বাস্তবায়িত হচ্ছে ? না কোন ভাবেই তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না বরং দেশের পাঁকা রাস্তা, কাঁচা রাস্তা সব শেষ। সব শেষ এই মাহিন্দ্রা ট্রাকটর দিয়া। আমার কথার সাথে কতৃপক্ষের লোকজন বা দেশের মানুষ একমত হবেন কি না জানিনা তবে এটাই বাস্তব, এটাই সত্য।
কৃষি কাজের জন্য বা কৃষকদের জন্য বা কৃষি পন্য বহন এর জন্য মাহিন্দ্রা ট্রাকটরের জুড়ি নাই কিন্তু এই যান বাহন দিয়া কোন কৃষক কি কৃষি কাজ করছে ? হাতে গোনা কিছু কৃষক কৃষি কাজ করলেও অধিকাংশ মাহিন্দ্রা ব্যবহার হচ্ছে ব্যবসায়িক কাজে ।
পাকা রাস্তা, কাঁচা রাস্তা বাঁচাতে চাইলে মাহিন্দ্রা ট্রাকটর আমদানি নিষিদ্ধ করা হউক। কোন কারনে নিষিদ্ধ করা না হলেও ব্যবসায়িক কাজে এই যান ব্যবহার বন্ধ করা হোক”।
পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগে সহ সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ জনাব হাওলাদারের ওই পোষ্টের একটি কমেন্টে লিখেছেন, “আপনার মন্তব্যের সাথে একমত পোষণ করে বলছি এই মাহিন্দ্রা বা টলি যানবাহন হিসেবে ব্যবহার করার কোন সুযোগ নাই। এই টলি শুধু জনগণের চলাচলের রাস্তা নষ্ট করে না, অনেক নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। সর্বশেষ ওই দৈত্যাকৃতির দনব গাড়ি দ্বারা দুর্ঘটানা কবলিত হয় বাউফল উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর গাড়ী। যদি এই মাহিন্দ্রা ট্রাক্টর কৃষিকাজ ছাড়া যানবাহন হিসেবে রাস্তায় চলাচল করে তাহলে সরকারের রেজিস্ট্রেশন ব্যতিরেকে কিভাবে চলছে এটা আমার প্রশ্ন” ?
এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিজুষ চন্দ্র দে এই প্রতিবেদককে জানান, “এ ব্যাপারে অবশ্যই খোঁজ নিয়ে অতিদ্রæত যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে”।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।