মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
দুই মাসেরও বেশি সময় পর পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হল জম্মু-কাশ্মীর। সোমবার থেকে আংশিকভাবে চালু করা হয়েছে মোবাইল পরিষেবাও। প্রশাসন সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করছে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রতিদিন জোর গলায় বলছেন, গত দুই মাসে কাশ্মীরিদের গায়ে একটি বুলেটও লাগেনি। কাশ্মীর নিয়ে বিরোধীদের আশঙ্কা মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে। এ অবস্থায় সমাজকর্মীদের একটি দল স¤প্রতি সেখান থেকে ঘুরে এসে জানালেন উল্টো চিত্রের কথা। সরেজমিন পরিদর্শন শেষে তারা জানালেন, ভালো আছি বলতে বাধ্য করা হচ্ছে কাশ্মীরিদের। শনিবার দিল্লিতে আনুষ্ঠানিকভাবে রিপোর্ট প্রকাশ করেন তারা। সরকার যে দাবি করছে তার সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই বলে জানিয়েছেন ওই সমাজকর্মীরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভালো আছি বলতে বাধ্য করা হচ্ছে কাশ্মীরিদের। তবে অহিংস পথে প্রতিবাদ জারি রেখেছে তারা। সরকার অনুরোধ করলেও স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদে দোকানপাট ও হোটেল বন্ধ রেখে অসহযোগ আন্দোলন চলছে কাশ্মীরে। সত্যাগ্রহের মাধ্যমে তারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। চার সমাজকর্মীর দলে আছেন মনোবিদ অনিরুদ্ধ কালা, জনস্বাস্থ্য কর্মী ব্রিনেল ডি সুজা, সাংবাদিক রেবতী লাউল ও সমাজকর্মী শবনম হাসমি। তারা কাশ্মীরে ছিলেন ২৫-৩০ সেপ্টেম্বর, জম্মুতে ৬-৭ অক্টোবর। তারা সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার মধ্যে আছেন- রাজনীতিক, আমলা, গৃহবধ‚, স্কুলশিক্ষক, ব্যবসায়ী, ফল বিক্রেতা, ট্যাক্সিচালক, ছাত্র, কবি, চাষি, শিশু, সাংবাদিক, সমাজকর্মী, ক্যাটারিং ব্যবসায়ী। আছেন পন্ডিত, শিখ, খ্রিষ্টানরাও। শ্রীনগর থেকে বারামুলা, অনন্তনাগ থেকে বাদগাম এবং জম্মু সর্বত্র একই প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন তারা। দোকানপাট খোলা রাখতে, ঘর থেকে বের হতে বাধ্য করা হচ্ছে তাদের। এর মাধ্যমে তারা যে ভালো আছে, সেটাই প্রমাণ করতে চাইছে সরকার। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল হওয়ার পরে জম্মুতে মানুষ উল্লাস করছে- এমন একটি ছবি সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরা হয় বারবার। তবে সেটা অনেকটাই সত্য নয়। সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ‘কাশ্মীরের থেকেও কম সংখ্যক মানুষ জম্মুতে মুখ খুলেছেন। তাদের বাধ্য করা হচ্ছে বলতে যে, তারা খুশি!’ লেখকরা বলছেন, যে অতীতে কাশ্মীরীরা যেভাবে প্রক্রিয়া দেখিয়েছে এবারের ধরনটি তারচে আলাদা। কাশ্মীরের জনগণ আর ভারত রাষ্ট্রের সঙ্গে লেনদেন করতে চায় না। সেই জায়গাটি নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টে বলা হয়, কাশ্মীরের সর্বস্তরের মানুষ- কট্টরপন্থী থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদী, যারা হয় পাকিস্তানের সঙ্গে যোগদান না হয় আজাদি চায়, অথবা যারা ভারতপন্থী- সম্মিলিত যন্ত্রণা ও মানসিক আঘাতের শিকার হয়েছে। এগুলো বেশিরভাগ কাশ্মীরীকে নীরব প্রতিবাদকারীতে পরিণত করেছে। রিপোর্টে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয় যে এই নীরব প্রতিবাদ ও আইন অমান্য হলো আসন্ন প্রবল ঝড়ের আগের শান্ত অবস্থা মাত্র। টিম জানায় যে তারা জম্মুতে ভিন্ন অবস্থা দেখেছেন। সেখানে কাশ্মীর উপত্যকার মতো একই ধরনের অবরোধ আরোপ করা হয়নি। সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা বহাল। দোকানপাট ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানও খোলা। সেখানে কোন আইন অমান্য নেই। কিন্তু বেশিরভাগ ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন যে তাদের প্রতিষ্ঠান ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। রিপোর্টে ভারত সরকার, বিচারবিভাগ, নাগরিক সমিতি, মিডিয়া ও মনবাধিকার সংগঠনগুলোর মন্তব্যও তুলে ধরা হয়েছে। এতে অবিলম্বে অনুচ্ছেদ ৩৭০ ও ৩৫এ পুনর্বহাল ও জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্য মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে সরকারের প্রতি যোগাযোগের সকল ব্যবস্থা খুলে দেয়া, রাজনৈতিক নেতা ও নাগরিক এক্টিভিস্টদের মুক্তি এবং সেনা ও প্যারামিলিটারি বাহিনীকে প্রত্যহারের আবেদন জানানো হয়। রাজ্যটিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সেখানকার বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বানজানানো হয়। বিভিন্ন আদালতে দায়ের করা মামলাগুলো জরুরিভিত্তিতে নিষ্পত্তি করতে বিচারবিভাগের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে রিপোর্টে। গণতন্ত্রের প্রতি কাশ্মীরের জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং তাদের মনে যে অবমাননা ও প্রতারণার অনুভুতি তৈরি হয়েছে তা দ‚র করতে নাগরিক সমাজের সদস্যদের প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের জনগণের সঙ্গে বিজড়িত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। টিম জানায় যে তারা ৮ দিনে ৫টি জেলা সফর করেছে। তারা রাজনীতিবিদ, আমলা, আবাসন ব্যবসায়ী, স্কুল শিক্ষক, বিক্রেতা, ফল-বিক্রেতা, ট্যাক্সি-ইউনিয়ন নেতা, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কবি, লেখক, কৃষক, শিশু, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের কর্মী, বিয়ের ক্যাটারার, পন্ডিত, শিখ ও খ্রিস্টানসহ বহু মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। জিয়ো নিউজ, এবিপি, সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।