পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরো তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ১০ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকে গতকাল ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ডিবি। মামলার তদন্ত চকবাজার থানা থেকে ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ১০ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যান্যদের গ্রেফতার এবং হত্যাকান্ডের প্রকৃত চিত্র বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ ও গোয়েন্দারা। একই সাথে উদ্ধারকৃত ভিডিও ফুটেজসহ অন্যান্য আলামত খতিয়ে দেখছে তদন্তের সাথে জড়িতরা। পুলিশ সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
আবরার হত্যায় আরো ৩ জন গ্রেফতার
বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরো তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- শামসুল আরেফিন রাফাত (২১), মো. মনিরুজ্জামান মনির (২১) ও মো. আকাশ (২১)।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মাসুদুর রহমান জানান, গতকাল বিকেলে রাজধানীর ঝিগাতলা থেকে রাফাতকে, ডেমরা থেকে মনিরকে ও সন্ধ্যায় ৬টায় গাজীপুরের বাইপাল থেকে আকাশকে গ্রেফতার করা হয়। রাফাত বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ১৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী। মনির বুয়েটের পানিসম্পদ বিভাগের ১৬তম ব্যাচের এবং আকাশ একই ব্যাচের সিই বিভাগের ছাত্র। গ্র্রেফতারকৃতরা সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। আজ তাদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
ছাত্রলীগের ১০ নেতা ৫ দিনের রিমান্ডে
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১০ নেতাকে ৫ দিন করে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরীর আদালত এই আদেশ দেন। গতকাল দুপুর ২টার দিকে গ্রেফতারকৃত ১০ শিক্ষার্থীকে আদালত চত্বরে নিয়ে আসা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক কবীর হোসেন হায়দার তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। পরে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
হত্যার দায় স্বীকার ১০ জনের
আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ছাত্রলীগের ১০ নেতা-কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক অবস্থায় জিজ্ঞাসাবাদে ওই ১০ জন জানিয়েছে, আবরারের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। রোববার বিকেলে তিনি বাড়ি থেকে বুয়েটের হলে ফেরেন। কয়েক ঘণ্টার মাথায় রাত আটটার দিকে আবরারসহ দ্বিতীয় বর্ষের সাত-আটজন ছাত্রকে শেরেবাংলা হলের দোতলার ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে পাঠান তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাত-আটজন নেতা। তারা আবরার ফাহাদের মুঠোফোন নিয়ে ফেসবুক ও মেসেঞ্জার ঘেঁটে দেখেন। এরপর ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে আবরারকে পেটাতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আরও কয়েকজন নেতা-কর্মী আসেন। তারা আরেক দফা পেটান আবরারকে। পেটানোর একপর্যায়ে আবরার নিস্তেজ হয়ে পড়েন। তখন ছাত্রলীগের নেতারা আবরারের হলের সহপাঠীদের ডেকে আনেন এবং তাদের দিয়ে নিথর দেহটি দোতলা ও নিচতলার মাঝামাঝি সিঁড়িতে নিয়ে রাখেন। এরপর ছাত্রলীগের নেতারা বাইরে যান রাতের খাবার খেতে। পরে যখন নিশ্চিত হলো আবরার বেঁচে নেই, তখন সিঁড়ি থেকে লাশ নিয়ে রাখা হয় হলের ক্যান্টিনে। তিনি আরো বলেন, তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ওই ১০ জন জিজ্ঞাসাবাদে সকল তথ্যই প্রকাশ করেছে। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে আরো বিস্তারিত জানা যাবে বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
ঘটনায় জড়িত যারা
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, আবরারকে প্রথম দফা পেটানোর ঘটনায় ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপ-সম্পাদক ও পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র অমিত সাহা, উপদপ্তর সম্পাদক ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র মুজতাবা রাফিদ, সমাজসেবা বিষয়ক উপসম্পাদক ও বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ইফতি মোশারফ ওরফে সকালসহ তৃতীয় বর্ষের আরও কয়েকজন। দ্বিতীয় দফায় পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনীক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম ওরফে জিয়নসহ কয়েকজন। তারা সবাই বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রাসেলের অনুসারী।
তদন্ত করে অমিত সাহাকে আইনের আওতায় আনা হবে
ইচ্ছাকৃতভাবে বুয়েট শিক্ষার্থী অমিত সাহাকে মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়নি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন। তিনি বলেন, মামলা দায়েরের সময় যারা আসামি থাকেন, তদন্তের পর তাদের মধ্য থেকে কেউ বাদ যেতে পারেন আবার কেউ যুক্ত হতে পারেন। অমিত সাহার নাম ইচ্ছা করে বাদ দেয়া হয়নি। তদন্তের পরে যদি মনে হয় সে জড়িত, তাহলে তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। মঙ্গলবার দুপুরে ডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যায় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।