Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ওয়াশিংটন আমাদের পিঠে ‘ছুরি মেরেছে’ : কুর্দি বিদ্রোহী

এরদোগানের এক টেলিফোন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:২৪ পিএম

সিরিয়ায় কুর্দি নিয়ন্ত্রিত বেশ কিছু এলাকা থেকে আমেরিকা হঠাৎ করে গত রোববার রাতে তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছে। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে তুরস্ক যেকোনো সময় সামরিক অভিযান শুরু করতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে জড়াতে চায় না। খবর বিবিসির।
হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে বলছে, তুরস্ক খুব শিগগির তাদের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা অনুযায়ী উত্তর সিরিয়ায় সামরিক অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে। মার্কিন সৈন্যরা ওই সংঘাতে জড়াতে চায় না। আইএসকে পরাজিত করার পর ওই অঞ্চলে মার্কিন সৈন্যরা আর থাকবে না। এরদোগানের এক টেলিফোনে কুর্দিদের ত্যাগ করলো ট্রাম্প।
মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ফলে তুরস্কের জন্য কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান চালানোর সুযোগ তৈরি হলো। অথচ কিছু দিন আগ পর্যন্তও কুর্দি নেতৃত্বাধীন এসডিএফ মিলিশিয়ারা ছিল মার্কিন বাহিনীর প্রধান মিত্র।
সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে এসডিএফ মিলিশিয়ারা মার্কিনিদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। তবে সম্প্রতি কুর্দি যোদ্ধাদের অভিযোগ, নিজেদের স্বার্থ হাসিলের পর ওয়াশিংটন তাদের অঙ্গীকার পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন আমেরিকা তাদের সৈন্যদের সরিয়ে নেয়ার পর ক্ষুব্ধ কুর্দিরা বলেছেন, ওয়াশিংটন তাদের পিঠে 'ছুরি মেরেছে'।
এসডিএফের একজন মুখপাত্র আরবি টিভি চ্যানেল আল হাদাতকে বলেছেন, আমেরিকা আমাদের আশ্বস্ত করেছিল, যে এই অঞ্চলে তুরস্কের সামরিক অভিযান তারা করতে দেবে না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে আমরা বিস্মিত হয়েছি। এসডিএফের জন্য এটা পিঠে ছুরি মারার শামিল।
এ বছর জানুয়ারি মাসেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, তুরস্ক যদি কুর্দি বাহিনীগুলোর ওপর আক্রমণ চালায় তা হলে তুরস্ককে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেয়া হবে।
কিন্তু গত রোববার হোয়াইট হাউস, মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের কথা জানিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতে দৃশ্যত এ নীতির পরিবর্তন হচ্ছে এবং এতে কুর্দি যোদ্ধাদের কোনো উল্লেখই ছিল না।
তুরস্ক এসডিএফকে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী বলে মনে করে এবং সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে এসডিএফকে হটিয়ে তুরস্ক তাদের ভাষায় একটি ''নিরাপদ এলাকা'' প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর।
বিবিসির মার্টিন পেশেন্স বলছেন, মি. ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন সৈন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনতে চাইছিলেন। এর আগেও তিনি মার্কিন সৈন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পদত্যাগ করার পর তিনি পিছিয়ে এসেছিলেন।
জানা যাচ্ছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়েপ এরদোয়ানের এক টেলিফোন আলাপের পরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ সিদ্ধান্ত নেন।
হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, কুর্দি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আইএস সদস্য আছে বলে সন্দেহ করা হয় এমন ১২ হাজার লোক বন্দী আছে- যার মধ্যে অন্তত চার হাজার হচ্ছে বিদেশি যোদ্ধা, এবং এই বন্দীদের দায়িত্ব এখন তুরস্কই নেবে।
বিবিসির বিশ্লেষক জোনাথন মার্কাস বলছেন, রোববারের সিদ্ধান্ত সিরিয়ায় মার্কিন নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন, এবং মি. ট্রাম্প হয়তো পেন্টাগন ও পররাষ্ট্র দফতরের পরামর্শ উপেক্ষা করে এ পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
মি. মার্কাস বলছেন, এর ফলে কুর্দিরা হয়তো সিরিয়া বাশার আল আসাদের সরকারের সাথে একটা সমঝোতায় আসতে বাধ্য হবে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সুযোগে ঐ অঞ্চলে আবার ইসলামিক স্টেটের পুনরুত্থানও ঘটতে পারে- বলছেন বিবিসির এই বিশ্লেষক।
বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য সংবাদদাতা মার্টিন পেশেন্স অবশ্য বলছেন, হয়তো আমেরিকান সামরিক বাহিনী, এবং কূটনীতিকদের দিক থেকে এ ব্যাপারে আপত্তি আসবে, এমনও হতে পারে পেসিডেন্ট ট্রাম্প তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনও করতে পারেন।

তুরস্কের সামরিক অভিযান কত বড় হতে পারে?
ইরাকে কুর্দি টিভিতে বলা হয়েছে, সোমবার সিরিয়া সীমান্তে তুরস্ক বিশাল সংখ্যায় সৈন্য সমাবেশ করেছে। প্রাথমিকভাবে যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তাতে তুরস্কের এই সামরিক অভিযান স্বল্প মাত্রার হবে। তাল আবিয়াদ শহর থেকে আল-আইন পর্যন্ত ৬০ মাইল এলাকায় তুরস্কের সৈন্যরা ঢুকবে।



 

Show all comments
  • Shahab uddin ৯ অক্টোবর, ২০১৯, ৯:১৮ পিএম says : 0
    Sinta kortasi
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তুরস্ক

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ