Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

লেস্টার তারকা হামজা চৌধুরীর গল্প

ইংল্যান্ডের জাতীয় দলে খেলা আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১১:৪৩ এএম

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একমাত্র ফুটবলার হামজা চৌধুরী ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে খেলেন। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হামজা লেস্টার সিটির হয়ে চলতি মৌসুমে ৭ ম্যাচেই মাঠে নেমেছেন। সিলেটের হবিগঞ্জের অধিবাসী মা আর ক্যারিবিয়ান বাবার সন্তান হামজার বেড়ে ওঠা ইংল্যান্ডে। তবে নিজের দেশকে কখনো ভুলে যাননি তিনি। ছোটবেলায় সুযোগ পেলেই ছুটে আসতেন বাংলাদেশে। অনর্গল বাংলায় কথা বলতে পারেন। একজন মুসলিম হিসেবে ধর্মীয় রীতি-নীতি পালনেও যথেষ্ট সচেতন তিনি। গতকাল হামজাকে নিয়ে দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইংলিশ বার্তা সংস্থা বিবিসি।

যাতে উঠে এসেছে তার বাংলাদেশে কাটানো বাল্য স্মৃতি, পারিবারিক ও ধর্মীয় জীবন, ফুটবল ক্যারিয়ার নিয়ে চাওয়া-পাওয়ার কথা।
মায়ের অবদান

হামজা চৌধুরীর ফুটবলার হওয়ার পেছনে বড় অবদান তার মা রাফিয়া চৌধুরীর। তিনিই ছেলেকে ফুটবলার বানাতে চেয়েছিলেন। হামজার বয়স যখন ৫ বছর তখন রাফিয়া চৌধুরী স্থানীয় একটি ক্লাবে ছেলেকে ভর্তি করিয়ে দেন। হামজা বলেন, ‘মা সব সময়ই নতুন ও ভিন্ন আইডিয়া নিয়ে আসতো।’ সাত বছর বয়সে তিনি লেস্টার সিটির খেলা দেখতে যান চাচা ফারুকের সঙ্গে। সেদিন হয়ত জানতেন না এক সময় তিনিও লেস্টার সিটির জার্সি গায়ে জড়াবেন। হামজার কাছে এটি ‘স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো’ ব্যাপার।
বাংলাদেশে কাটানো দিনগুলো

ছেলেবেলায় সব সময়ই কাজিনদের সঙ্গে বেশ আনন্দে সময় কাটতো হামজার। তাদের সঙ্গে পার্কে খেলাধুলা আর ভিডিও গেমস খেলতেন। খিদে পেলেই ছুটে আসতেন মায়ের কাছে। ডাইনিং টেবিলে তার পছন্দের খাবার প্রস্তুতই থাকতো। ভাত-তরকারি, সমুচা আর মিষ্টি চা। তবে শৈশবে বাংলাদেশে কাটানো দিনগুলোর স্মৃতি হমজার কাছে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। সিলেটে তার গ্রামের বাড়িতে এলে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতেন হামজা। তিনি বলেন, ‘আমার বাল্যকালের কিছু স্মৃতি বাংলাদেশে। এখানে যা খুশি তাই করতে পারবেন। আপনি দেখবেন রাত ১০টায় ছেলেরা রাস্তায় হাঁটাহাটি করছে। কেউ কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছে না। স্বাধীন আর পুরোপুরি নিরাপত্তা নিয়েই তারা ঘুরে বেড়ায়। আমি বাংলা বলতে পারি এটা দেখে বাংলাদেশের লোকজন খুব অবাক হতো। ছোটবেলায় আমার চুল আফ্রিকানদের মতো ছিল কিছুটা। তাই আমি ছিলাম সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। প্রতিবার ছুটিতে দুই-তিন সপ্তাহের জন্য আমি পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে বেড়াতে যেতাম। ওটা ছিল দারুণ আর স্পেশাল কিছু। আমার মাতৃভূমি ও তার সংস্কৃতি খুবই সুন্দর।’

পরিবার, ধর্মীয় বিশ্বাস আর ফুটবল

স্কুল ক্লাসের পর নিয়মিত নামাজ আদায় করতেন হামজা। ফুটবলটাও চলতো সমান তালে। তিনি বলেন, ‘আমি আর আমার ছোট বোন প্রায়ই মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার স্কুলের ক্লাস শেষে কুরআন শিক্ষা নিতাম। আমি খুব খুশি যে আমার বাবা-মা আমাকে এমন গুরুত্বপূর্ণ একটা শিক্ষা দিয়েছেন। আমি ড্রেসিং রুম থেকে বের হওয়ার সময় আয়াতুল কুরসীসহ ছোট ছোট দোয়া পড়ি। আম্মু আমাকে এটা করতে বলেন।’
ফুটবল নিয়ে স্বপ্ন

ইংলিশ ফুটবলে খেলা মাত্র দ্বিতীয় দক্ষিণ এশিয়ান হামজা। অপরজন অ্যাস্টন ভিলার নেইল টেইলর। হামজার আশা, ইংলিশ ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়া থেকে আরো ফুটবলার আসবে। এখন তার প্রধান লক্ষ্য ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে খেলা। ইতিমধ্যেই অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে খেলেছেন। হামজা বলেন, ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন। আমি এখনো সেখানে খেলার মতো যোগ্যতা অর্জন করিনি। আমাকে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে।
সূত্র : মানবজমিন



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফুটবল

২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ