শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
পূর্বে প্রকাশের পর
আক্কাদীয় শিল্পকলা : দক্ষিন মেসোপটেময়ায় উরুক যুগের প্রথম দিকে সুমেরীয়রা আসে। সেই সময় বা তারও পূর্ব হতে টাইগ্রিস নদীর উচ্চ অববাহিকা অঞ্চলে সেমেটিক জাতির মানুষের বাস ছিলো যারা কালক্রমে আক্কাদীয় সম্রজ্যের প্রতিষ্ঠা করে। রাজা সারগন ছিলেন এই সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। বিভিন্ন ভাস্কর্য হতে আক্কাদীয়দের আকৃতি সম্বন্ধে ধারনা করা যায়। তাদের মুখে সাধারনত দাঁড়ি ও মাথার চুল ঘাড় পর্যন্ত লম্বা ছিলো।
আক্কাদিয় যুগের স্থাপত্য সম্বন্ধে খুব বেশী তথ্য আবিষ্কৃত না হলেও বহু ভাস্কর্যের নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে। ভাস্কর্যগুলো সাধারনত, ব্রোঞ্জ ও পাথর দিয়ে তৈরী হতো যা ছিলো খুবই উন্নত। ভাস্কর্যগুলোর রূপ ছিলো পার্থিব।
নিও সুমেরিয়ান শিল্পকলা : উত্তর পূর্ব দিক হতে আগত গুটি নামে এক বর্বর জাতির আক্রমনে আক্কাদীয় সাম্রাজ্যের পতন হয়। এ জাতির একজন শাসকের নাম ছিলো গুতিয়া। তার অসংখ্য ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছিলো। এগুলোর বেশীর ভাগই দাড়ানো বা উপষ্টি অবস্থায়।
ব্যাবিলনীয় শিল্পকলা : সুমেরীয়দের পতনের পর আমেরাইট জাতি সুমের ও আক্কাদ জয় করে ব্যাবিলনীয় সভ্যতা গড়ে তোলেন। আমেরাইটদের নিজের সংস্কৃতি বিশেষ উন্নত ছিলো না, তারা মেসোপটেমিয়ার সম্রাজ্য পতন করে সুমেরীয়দের সভ্যতা সংস্কৃতিকেই গ্রহন করেছিলো। খ্রীষ্টপূর্ব ১৭৯২ - ১৭৫০ অব্দের মধ্যে ব্যবিলনের রাজা হাম্বুরাবি গোটা মেসোপটেমিয়াকেই ব্যবিলনের এককেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থার অধীনে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন।
আসিরীয় শিল্পকলা : টাইগ্রিস নদীর উচ্চ ববাহিকা অঞ্চলে বহু প্রাচীনকাল হতে একটি জাতি বাস করতো। তাদের প্রধান দেবতা ছিলো অসুর। অসুর দেবতার নামানুসারে সেই জাতি আসিরিয় নামে পরিচিত। মেসোপটেমীয় অন্যান্য নির্মাণের মতো আসেরীয়রাও নির্মানের উপকরন হিসেবে কাদামাটির ইট ব্যবহার করতো। এ সময়ের অধিকাংশ ভাস্কর্যই ছিলো রিলিফ ভাস্কর্য। এ সময়ের ভাস্কর্যগুলোতে হিংস্রভাব প্রকাশ পেয়েছে। মানুষের সমস্ত সুকোমল বৃত্তিকে নির্মাতিত করে আসিরীয় সম্রাটগন রাক্ষুসে বা রক্তলোলুপ ভাবটিকে তীব্রভাবে প্রকাশ করার জন্য যেন শিল্পীদের নিযুক্ত করেছিলেন। ভাস্কর্যগুলোর অভিব্যক্তিতে কঠোর ও অনমনীয় ভাব। এসব ভাস্কর্যের অভিব্যক্তিতে প্রকাশ পেয়েছে উদ্ধত প্রকৃতির শাসকের ক্ষমাহীন বা নির্মম ভাব।
আসিরীয়ান ভাস্কর্যের অন্যতম নিদর্শন মেলে খ্রীষ্টপূব ৭২০ অব্দে। এ সময়ে নির্মিত ভাস্কর্য লামাস্সু তে অদ্ভুত আকৃতি লক্ষ্যনীয়। এর মুখমন্ডল মানুষের মতো এবং দেহকানেডর আকার সিংহের মতো। পিঠের উপরে ঈগলের পাখাযুক্ত। ‘ডাইং লায়নস’ নামক ভাস্কর্যটিতে তীরবিদ্ধ মরোম্মুখ একটি সিংহী অঙ্কিত হয়েছে। এর তুলনা বিশ্বের শিল্পভান্ডারে দুর্লভ। তিনটি তীর সিংহীর পৃষ্ঠদেশ ভেদ করে চলে গিয়েছে। তবু সে দেহের সমস্তভার ন্যস্ত করে সম্মুখে অগ্রসর হওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছে। এখানে আহত সিংহীর বাঁচার জন্য চোখে ফুটে উঠেছে তার অসহায়ত্ব।
মেসোপটেমিয় সভ্যতা তার সর্বোচ্চ উচ্চতায় প্রবেশ করেছিল ৩০০০-৩৫০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে। কিন্তু প্রাকৃতিক দিক থেকে এলাকাটি সুরক্ষিত না হওয়ায়, ৩৩৩ সনে এসে সভ্যতাটি বহিঃশত্রুদের আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন জনগোষ্ঠির অন্তঃকলহের জেরে ধীরে ধীরে সভ্যতাটির অবলুপ্তি ঘটে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।