মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আঞ্চলিক উত্তেজনা কমিয়ে আনতে সউদী আরব ইরানের সঙ্গে প্রথমবারের মতো একটি বৈঠকের আয়োজন করতে ইরাকি প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদিকে সবুজ সংকেত দিয়েছে মিডল ইস্ট আইয়ের খবরে বলা হয়েছে।
ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আব্বাস আল-হাসনাওয়ি নামে এক কর্মকর্তা মঙ্গলবার বলেন, তেহরান ও রিয়াদের নেতৃবৃন্দের বৈঠকের আয়োজন করতে মধ্যস্থতায় ভূমিকা রাখছেন আবদুল মাহদি। আলোচনার শর্ত জানতে দুপক্ষের সঙ্গেই তিনি যোগাযোগ রক্ষা করছেন।
কয়েকটি দেশের নেতাদের মাধ্যমে ইরানি প্রেসিডেন্টকে বার্তা পাঠাচ্ছেন সউদী আরব বলে সোমবার ইরানি সরকারের এক মুখপাত্রের দাবির পর হাসনাওয়ি এমন দাবি করেন।
মিডল ইস্ট আইকে তিনি নিশ্চিত করেন যে, সউদী তেল স্থাপনায় ভয়াবহ হামলার পর উত্তেজনা কমাতে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছেন আবদুল মাহদি।
তবে তেল স্থাপনায় ওই হামলার দায় প্রতিবেশী ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা স্বীকার করলেও ইরানকে অভিযুক্ত করছে সউদী আরব ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। এতে সউদী-ইরানের সংঘাতের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, দুপক্ষের মধ্যে যোগাযোগের চ্যানেল হিসেবে কাজ করছেন ইরাকি নেতারা। সরকারে আমাদের সুন্নি ভাইয়েরা সউদী ও ইরানের শিয়াদের মধ্যে মধ্যস্থতায় কাজ করছে।
এই ইরাকি কর্মকর্তা আরও বলেন, আলোচনার প্রক্রিয়া শুরুর আগে সউদী আরবের শর্ত রয়েছে। ইরানেরও একই অবস্থা। দুপক্ষের মধ্যে এসব শর্ত সংক্রান্ত যোগাযোগকারী হিসেবে কাজ করছি আমরা। মতাদর্শ, সম্প্রদায় এবং তাদের আঞ্চলিক জোট মাথায় নিয়ে দুই বিপরীত পক্ষকে এক জায়গায় হাজির করা সহজ কোনো কাজ নয়।
হাসনাওয়ি বলেন, সউদী আরব ও ইরানের মধ্যে একটি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন আবদুল মাহদি। যার মধ্যস্থতা ও তত্ত¡াবধান করবে ইরাকি সরকার। আর তাদের বৈঠকের জন্য সবচেয়ে অনুকূল জায়গা হচ্ছে বাগদাদ।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সিংহাসনের উত্তরসূরি মোহাম্মদ বিন সালমানসহ সউদী আরবের উসকানিমূলক বক্তব্য কমে গেছে। এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে সউদীরা সবুজ সংকেত দিয়েছেন এবং আবদুল মাহদি এ বিষয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সৌদি যুবরাজের সঙ্গে আলোচনায় বসতে গত সপ্তাহে জেদ্দায় গিয়েছিলেন আবদুল মাহদি। হাসনাওয়ি বলেন, দুপক্ষের মধ্যের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রেরও সায় রয়েছে।
বৈঠকের সময়সীমা নিয়ে আলোচনা করতে ইরাকের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ফালিহ আল-ফাইয়াদ বর্তমানে ওয়াশিংটন সফরে রয়েছেন।
‘ইয়েমেন, সিরিয়া ও ইরাকসহ এ অঞ্চলে যদি একটি সম্ভাব্য চুক্তি হয়, তবে তাতে আমেরিকানদের কোনো সমস্যা নেই’ জানালেন হাসনাওয়ি। তিনি জানান, বৈঠকের স্থান নিয়ে এখনও কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলেও বাগদাদই হবে সবচেয়ে ভালো জায়গা।
তার মতে, বৈঠকের জন্য বাগদাদই হবে সবচেয়ে ভালো জায়গা। তবে এখানেই বৈঠক হবে, সেটি আমি নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। শুরুতে দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তার পর একটি চুক্তি হবে। সউদী আরব ও ইরানের নেতারা সেই চুক্তিতে সই করতে বৈঠক করবেন।
কাজেই আলোচনা শুরু করতে দুপক্ষের কাছ থেকেই বিভিন্ন শর্ত দেয়া হবে। এই ইরাকি কর্মকর্তার মতে, সউদী আরবের শর্ত হচ্ছে, ইয়েমেন ও সিরিয়ায় নিজেদের ভূমিকা ইরানকে কমিয়ে আনতে হবে। এ ছাড়া হুতি বিদ্রোহীদের সমর্থন দেয়াও বন্ধ করতে হবে।
এ ছাড়া সিরিয়ায় বিরোধীদের সঙ্গে সংকট দেশটির সরকারকে মিটিয়ে ফেলতে হবে। সর্বদলীয় সম্মতিতে সিরিয়ায় একটি সংবিধানও লিখতে হবে বলে শর্তে উল্লেখ থাকবে।
রোববার সিবিএস চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সউদী যুবরাজ বলেছেন, সামরিক ব্যবস্থার চেয়ে একটি রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধান ভালো হবে। এ সময় প্রতিবেশী ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের সমর্থন দেয়া বন্ধ করতে ইরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সৌদি ও ইরানের মধ্যে একটি যুদ্ধের অর্থ হচ্ছে বৈশ্বিক অর্থনীতির বিপর্যয় ঘটা বলে মন্তব্য করেন যুবরাজ।
গতকাল মঙ্গলবার (১ অক্টোবর, ২০১৯) ইরানি পার্লামেন্টের স্পিকার আলী লারিজানি আল-জাজিরা টেলিভিশনকে বলেন, আলোচনায় সউদী যুবরাজের স্পষ্ট আগ্রহকে ইরান স্বাগত জানিয়েছে।
তিনি বলেন, তেহরানের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যুবরাজ বিভিন্ন ইস্যুকে সমাধান করতে চাইছেন বলে যে খবর শোনা যাচ্ছে, তাতে আমাদের সায় রয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য সউদী আরবের প্রধান আঞ্চলিক মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ একটি বহুপক্ষীয় আলোচনার আভাস দিয়েছেন।
সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মুসাবি বলেন, ভুল বোঝাবুঝির অবসানে একটি গ্রুপে কিংবা আলাদাভাবে বিশেষভাবে আমিরাতসহ দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠকে আমরা প্রস্তুত। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ছায়াযুদ্ধের ক্ষেত্র হওয়া থেকে দেশকে রক্ষা করতে গত কয়েক মাস ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আবদুল মাহদি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।