পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে মানবিক সংকট ও সেখানকার নাগরিকদের অবরুদ্ধ জীবনযাপনের বিষয়টি জাতিসংঘে উপস্থাপন করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শুক্রবার জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে দেয়া ভাষণে পাক প্রধানমন্ত্রী কাশ্মীর ইস্যুটি বিশ্ব নেতাদের সামনে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন।
প্রায় ৫০ মিনিটের দীর্ঘ ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিন-ইসলায়েলে বৈরি সম্পর্ক, বিশ্বব্যাপী মুসলিম নির্যাতন ও ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে চলমান প্রোপাগান্ডা ও ইসলামফোবিয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার আওয়াজ তুলেছেন। জাতিসংঘে ইমরান খানের ভাষণের পর ২৪ ঘন্টার মধ্যেই কাশ্মীরের পরিস্তিতি পাল্টে যায়। রাজপথে নেমে আসে মজলুম কাশ্মিরীরা। মসজিদে মসজিদে মোদি বিরোধী ¯েøাগান শুরু হয়।
ইমরান খানের ভাষণকে কেন্দ্র করে পাকিস্তারে জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম ডন হেডলাইন করেছে ‘জাতিসংঘে ইমরান খানের বক্তব্য ৯২ সালের বিশ্বকাপ জয়ের মতোই স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ এদিকে খানের বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন পাকিস্তানের শীর্স্থস্থানীয় ওরামায়ে কেরাম। ধর্মীয় মহলেও তিনি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হচ্ছেন।
পাকিস্তানের মুসলিম পন্ডিত ও শীর্ষস্থানীয় আলেম মাওলানা জাহিদ-উর-রাশদী ইমরান খানের সফলতার জন্য দোয়া করে এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, জাতিসংঘ অধিবেশনে ইমরান খানের বক্তব্য শুধু পাকিস্তান নয়, গোটা মুসলিম বিশ্বের অন্তরের আওয়াজ ছিল। আমি দুয়া করি, পাকিস্তানের চাওয়া-পাওয়া পূরণে তিনি সফলতা লাভ করুন।
বিশ্বজুড়ে ইসলামফোবিয়া মোকাবেলায় পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ও তুরস্কের উদ্যোগে টিভি চ্যানেল প্রতিষ্ঠা একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেছেন তিনি ।
তিনি বলেন, আমি শুনলাম, ইমরান খান, মাহাথির মোহাম্মদ ও এরদোগান সম্মিলিতভাবে একটি টিভি চ্যানেল খোলার উদ্যোগ নিয়েছেন, এই খবর শুনে আমি সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছি। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে ইসলাম ও উম্মতের অনেক বড় খেদমত হবে।
পাকিস্তানের অন্যতম শীর্ষ আলেম ও সাবেক বিচারপতি মাওলানা তাকি উসমানি এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ইমরান খান জেনারেল এসেম্বলিতে যে ভাষণ প্রদান করেছেন; বিশেষ করে নিজ আত্মবিশ্বাস, সাহসিকতা এবং বাকপটুতার সঙ্গে পশ্চিমাবিশ্বকে ইসলামফোবিয়ার ভয়াবহতা এবং কাশ্মীর বিষয়ে যেভাবে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন-এর জন্য সে মুবারকবাদ পাওয়ার যোগ্য। আর তিনি তার এই ভাষণের মাধ্যমে কাশ্মীর-সংকটের ব্যাপারে নিজ ইচ্ছা এবং দৃঢ় সংকল্প প্রকাশ করেছেন, যা সকল পাকিস্তানি জনগণের হৃদয়ের আওয়াজ।
পাকিস্তানের প্রসিদ্ধ ইসলামি স্কলার ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাওলানা তারিক মাসুদ এক বক্তৃতায় বলেছেন, ইমরান খান জাতিসংঘ অধিবেশনে পুরো পাকিস্তান, বিশেষ করে কাশ্মীরের মুসলিমদের মুখপত্র হিসেবে চমৎকার ভাষণ দিয়েছেন। বিশ্ব নেতাদের সামনে কাশ্মীরে চলমান জুলুম ও অত্যাচারের বিবরণ তুলে ধরেছেন। অবশ্যই তাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ইসলামকে সন্ত্রাসী ধর্মের যে তকমা লাগানো হয়েছে, তার বিরুদ্ধে ইমরান খানের দলিলভিত্তিক আলোচনা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। পুরো জাতির উচিৎ- প্রধানমন্ত্রীর শুকরিয়া জ্ঞাপন।
তবে ইমরান খানের বক্তব্যকে কান্ডজ্ঞানহীনতা আখ্যা দিলেন পাকিস্তানের অন্যতম বিরোধীদলীয় নেতা ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (এফ) প্রেসিডেন্ট মাওলানা ফজলুর রহমান।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলেন তিনি বলেন, তার বক্তব্য ভালো হোক কিংবা খারাপ; ইমরান খানকে জায়েজ প্রধানমন্ত্রী মানতে পারছি না। ২৫ জুলাই ইমরান খানের ক্ষমতা গ্রহণের তারিখ থেকে আমরা যে সংকটে ভুগছি, কোন বক্তব্য সেই সংকট নিরসন করতে পারবে না।
কাশ্মীরের পক্ষে তার বক্তব্য, কাশ্মীরকে বিক্রি করার অপরাধের ওপর পর্দা দেওয়ার অপচেষ্টা বলে উল্লেখ করেন মাওলানা ফজলুর রহমান।
এছাড়াও পাকিস্তানের ওলামা কাউন্সিলের নেতা তাহির মাহমুদ আশরাফী, মাওলানা তারিক জামিল, মাওলানা জিয়াউদ্দিন কাদেরীসহ স্থানীয় ওলামায়ে কেরাম ইমরান খানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।