Inqilab Logo

বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কারফিউ উঠে গেলে কাশ্মীরে রক্ত ঝরবে

পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ হলে বিশ্বকে ভুগতে হবে জাতিসংঘে ভাষণে ইমরান খান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

ভারত যখন কাশ্মীর থেকে কারফিউ তুলে নেবে তখন সেখানে ‘রক্তক্ষয়’ ঘটবে বলে বিশ্বকে সতর্ক করে দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণে ইমরান একথা বলেন। তাছাড়া, দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে পুরোদস্তুর যে কোনো যুদ্ধ বা সংঘাতের নেতিবাচক পরিণতি যে বিশ্বকেও ভোগ করতে হবে তাও ইমরান স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। ভারত সরকার গত ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিয়ে ওই অঞ্চলকে কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে রেখেছে। কাশ্মীর অঞ্চলে গণহারে ধরপাকড়, যোগাযোগ বন্ধ করে রাখা এবং কারফিউ জারি করে ভারত বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা নেয়ায় উত্তেজনা বেড়েছে। পরবর্তীতে সেখানে কিছু কড়াকড়ি শিথিল হলেও আটক বিশিষ্ট কাশ্মীরি নেতারা এখনো ছাড়া পাননি এবং মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবাও চালু হয়নি। কাশ্মীরের এ পরিস্থিতি বিশ্বের সামনে তুলে ধরা এবং এ ইস্যুতে কিছু করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাগাদা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দেন ইমরান।

আবেগঘন বক্তব্যে তিনি বলেন, ৮০ লাখ কাশ্মীরিকে পাহারা দিয়ে রেখেছে ৯ লাখ ভারতীয় সেনার বাহিনী। কারফিউ উঠে গেলে কী হবে? কাশ্মীরিরা কি চুপচাপ তাদের মর্যাদার এই পরিবর্তন মেনে নেবে? কারফিউ উঠে গেলে যা হবে তা হচ্ছে, রক্তবন্যা বয়ে যাবে। মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে। আর সেনারা কী করবে? তারা তাদের দিকে গুলি ছুড়বে.. আরো মৌলবাদের দিকে ঝুঁকবে কাশ্মীরিরা। ইমরান বলেন, ‘আমার একথা ভুল হলে সর্বোত্তম কিছু ঘটার আশা করা যায়। কিন্তু সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্যও তৈরি থাকতে হবে’। তিনি বলেন, যদি দুটি দেশের মধ্যে প্রচলিত যুদ্ধ শুরু হয় তাহলে সাত গুণ ছোট একটি দেশের সামনে দুইটি বিকল্প থাকে। হয় আত্মসমর্পণ নয়তো শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়া। যখন কোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশ শেষ অবধি লড়াই চালিয়ে যায় তখন এর পরিণাম মানচিত্রের সীমানা ছাড়িয়ে যায়। দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের লড়াইয়ের প্রভাব তখন পুরো দুনিয়ার ওপর পড়ে। সমগ্র বিশ্বকে এর ফল ভোগ করতে হয়।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি জাতিসংঘের জন্য একটি পরীক্ষা। এই সংস্থা কাশ্মীরি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের গ্যারান্টি দিয়েছিল। এখন আত্মতুষ্টিতে না ভুগে বরং যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার সময় এসেছে। এজন্য সবার আগে ভারতকে দখলকৃত কাশ্মীরে আরোপ করা কারফিউ তুলে নিতে হবে। সব বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার দিতে হবে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা কাশ্মীরের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ দ্রুত প্রত্যাহার চায়। পাকিস্তান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ওয়াশিংটনের এমন মনোভাবের কথা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক কর্মকর্তা অ্যালিস ওয়েলস সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দেখতে চাই- বিধিনিষেধ তুলে নেয়া আর আটককৃতদের মুক্তি। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনের প্রাক্কালে সম্প্রতি নিউইয়র্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

এসব বৈঠকের পর তৃতীয় বারের মতো ট্রাম্প জানান, কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে রাজি আছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক কর্মকর্তা অ্যালিস ওয়েলস বলেন, উভয় পক্ষ চাইলে মধ্যস্থতায় রাজি আছেন ট্রাম্প। তবে ভারত দীর্ঘদিন ধরেই বাইরের কোনও পক্ষের ভূমিকা প্রত্যাখ্যান করে আসছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কাশ্মীরে রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের ব্যাপক হারে গ্রেফতার ও সেখানকার বাসিন্দাদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের ঘটনায় উদ্বিগ্ন। দিল্লির সর্বোচ্চ পর্যায়ে এই উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য আসার একদিনের মাথায় শুক্রবার জাতিসংঘে দেয়া বক্তব্যে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের নীতির সমালোচনায় সরব হন ইমরান খান। সূত্র : রয়টার্স, ডন, এনডিটিভি।



 

Show all comments
  • Zakariya Zakariya ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:০৭ এএম says : 0
    সাবাস মহান নেতা ইমরান খান । কাশ্মীরের মজলুমদের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর জন্য ধন্যবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • Sharmin Akter ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:০৭ এএম says : 0
    সঠিক
    Total Reply(0) Reply
  • Azizul Hakim ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:০৮ এএম says : 0
    ইমরান খানের ভাষন এ অধিবেশনের সেরা ভাষন
    Total Reply(0) Reply
  • Labony Reza ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:০৮ এএম says : 0
    A great speech, it shows how well educated he is
    Total Reply(0) Reply
  • Jibon Vai ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:০৯ এএম says : 0
    আমি জানিনা জাতিসংঘের ইতিহাসে এরকম চমৎকারপূণ বক্তব্য আর কেউ রেখেছিল কিনা.. তার প্রতিটি কথায় লজিক চিল, যা আমাকে মুগ্ধ করেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Shahed Akboer ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:১০ এএম says : 0
    ইমরান সঠিক বলেছে পারমানবিক যুদ্ধ শুরু হলে তা দুই সিমান্তে থাকবে না ছড়িয়ে পড়তে পারে সব কানে
    Total Reply(0) Reply
  • মাসুকুর রহমান ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:১১ এএম says : 0
    বর্তমান সমাজে আপনার মতো সাহসী নেতার নেতৃত্বের প্রয়োজন আছে
    Total Reply(0) Reply
  • Re Za ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:১১ এএম says : 0
    মুসলমানদের অবদান পশ্চিমারা সবই জানে, ওরা জাহালিয়া যুগ থেকে শুরু করে কিয়ামতের আগ পর্যন্ত মুসলিমদের শান্তি তে থাকতে দিবে না। তাই মুসলমান রা এক হওয়ার জন্য ঐক্য গড়ে তুলাই জরুরি প্রয়োজন৷
    Total Reply(0) Reply
  • Emam Hasan ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:১১ এএম says : 0
    হে আল্লাহপাক উজিরে আজম ইমরান খান সাহেবের সিনাকে ইসলামের পক্ষে শক্তিশালী করে দিন আমীন।
    Total Reply(0) Reply
  • আনোয়ার আলী ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৬:১৯ এএম says : 0
    আমরা মনে করি কাশ্মীরকে ভারতের কবল থেকে মূক্ত করে স্বাধীনতা দিয়ে দেওয়াই উত্তম। এটা পাক ভারত সহ পারশ বর্তী সকল দেশের জন্য নিরাপদ
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ