Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এ সপ্তাহের কবিতা

| প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

এ সপ্তাহের কবিতা

 


খোদেজা মাহবুব আরা
তপ্ত স্মৃতি

গেছো মৌয়ালির ছেঁড়া বুক ফুরে
বেরিয়ে এসেছে অর্ধেক হৃদপিন্ড
বাকীটা বাঘের পেটে,
স্মৃতিটা আজও দাপিয়ে বেড়ায়
কঁচি বউটার উথাল পাতাল বুকে,
যেন সদ্য তীক্ষè হিং¯্রতায় ফালি করে রাখা কোন অভুক্তের আহার,
বহুদিন অনাহারের তীব্রতায় দন্ডিত প্রানীর প্রতিশোধ
সহসাই ফুরিয়ে গেল বউটার আনন্দ দিন,
সযতেœ মুড়ে রাখা স্মৃতিকাঁটায় রক্তাক্ত সকাল বিকাল,
এখন অন্ধকার মগ্ন জীবন,
প্রায় বিকল লালিত স্বপ্ন মুখর দিন,
জীবন এমনই হঠাৎ ফুৎকারে নিভে যায়
আশ্বাসের দীপ তারপর চোখ বুজে থাকা,
ধুকে ধুকে কোন ভাবে দিন গড়ায় শেষ পথে,
শেষ প্রান্তে।

শাহিদ উল ইসলাম
একদিন আমি প্রজাপতি হবো

এই যে আমি শূককীট অবহেলা অনাদরে আছি মিশে তোমাদের সংসারে
তাই বলে ভেবো নাকো কোন একদিন এই আমি মূককীট হবো না;
এবং প্রজাপতি হয়ে মেলবো না ডানা ঐ অনাদীর আকাশে!
বয়সী গোলাপের পাপড়ির মত যেদিন যাবো ঝরে পৃথিবীর বুক থেকে
কবরে শায়িত মূককীট আমি আবারো সেজদায় নত হবো; কারণ
প্রজাপতি জীবনের আকাঙ্ক্ষায়। একদিন আমি প্রজাপতি হবো!
কেননা আমার জন্য অপেক্ষায় সত্তুর রঙ্গিন ফুল বুকে প্রেম
পুষে বসে আছে আমারই পথ চেয়ে, আছে সুপেয় শীতল জলগ্রোত
যা যা চাই কী নেই সেথায়?
একদিন আমি প্রজাপতি হবো এবং সেজদায় নত হবো বারবার
মাতালের মত; পাগলের মত! এই যে আমি শূককীট অবহেলা অনাদরে
আছি মিশে তোমাদের সংসারে তাই বলে
ভেবো নাকো কোন একদিন এই আমি মূককীট হবো না;
এবং প্রজাপতি হয়ে মেলবো না ডানা ঐ অনাদীর আকাশে!

রওনক জাহান তানি
বিস্মৃত কতকথা

ধলেশ্বরী তীরে সেই যে ভাবটা জমেছিলো
আজো একাগ্র মনে ভেবে যাই।
সেটা কি আদৌ ভাবই ছিলো নাকি অন্য কিছু।
মনের গহীনে মন রেখে বলেছিলে নিগূঢ স্পষ্ট বিস্মৃতকথা।
আসলেই কি সেই সব বিস্মৃতকথা ছিলো
নাকি ভানটা ধরেছিলে আমাকে বিস্মৃত করার জন্য।
আজো তুমি ধরা পড়লে না সেই সব দিনের মতো।
ধরা পড়লো না সেই সব বিস্মৃত কথা মালায়।
পড়ে রইলো ধলেশ্বরী পড়ে রইলো তীর
আর সেই কথা মালা যা একদা বিস্মৃতই ঠেকেছিলো
আমার কাছে। এখন বিস্মিত হয় সেই কথা ভেবে।

রাজা গালিব
অশ্বখুরের আওয়াজ

প্রতিদিনই অশ্বখুরের আওয়াজ শুনি
সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা-রাতে খটখটাখট,
মুগুর ভাঙে পিঠের পরে, বাজি ফুটে
এক নিয়মে বন্ধ্যা হাতে পটপটাপট,
হায়দরি হাক মুখেমুখে, খুনি চোখে
মৃত্যু ডাকে, আয়রে নবীন ঝটপটাঝট,
পায়ের ধ্বনি তুমুল ভারে, কাঁপন ধরায়
ধরার বুকে, দম্ভভরে ঘটঘটাঘট।
দিনেদিনে কচি পাতার বাড়ন্তদের
শিষ গুনেছি, রাখবো উঁচু মায়েরই মান,
রক্তে বারুদ বীজ বুনেছি স্বপ্ন রচি
দেশপ্রেমেরই, মাটি ও মা দুই-ই সমান।
ওইযে দেখো তারার মেলায়, বজ্রঘাতে
আকাশ ভাঙে, স্বপ্ন ছড়ায় মুঠিমুঠি,
দামাল ছেলে একাত্তরে যেমন করে
মুক্তি নিতে করছিলো রে ছুটোছুটি।
ওইযে দেখো সবুজ জমিন লাল করে দেয়
রক্ত ঢেলে- বুকে ছিল জমা যত,
এদিকসেদিক ছুটোছুটি, যায় তেড়ে যায়-
টগবগিয়ে, আর করা যায় ক্ষমা কত?

পাপেল কুমার সাহা
আপেক্ষিকতা

শুনেছি একটা ভালো শুরু নাকি
অর্ধেক কাজ সমাপ্ত করে।
ভালোতো! সুন্দর উদ্দেশ্যে তবে শুরু হোক
তাৎপর্যময় জীবনের অন্বেষণ।
তবে আমি খুব ভালো করেই জানি,
এই তাৎপর্যময় জীবন অন্বেষণের একপর্যায়
আমার প্রাণের শেষ নিঃশ^াস হবে,
আমার শেষ পরিণতি।
শেষ পরিণতির কথা ভেবে
সামনে এগিয়ে যাওয়া,
দূরদর্শিতার চরম পরীক্ষা মাত্র!
সহজ সত্য, আমিতো দূরদর্শী নই,
আমি বিধাতার দন্ডে দন্ডিত একজন দূর্বল পথিক।
তারপরেও নিস্তব্ধ প্রার্থনা আমার একমাত্র পুঁজি !!
নিস্তব্ধ প্রার্থনায় আর তাৎপর্যময় জীবন অন্বেষণের
এই পথে পেয়েছি, মানসিক উৎকর্ষতার স্পর্ধায়
স্তম্ভিত হওয়ার সুখকর কিছু অভিজ্ঞতা।
সুখকর এই অভিজ্ঞতার জন্য, আমি কিন্তু মহোল্লাসে
উল্লসিত হয়নি কখনো!!
বরং বারংবার থমকে দাঁড়িয়েছি,
আমার প্রতি আমার, প্রতিশ্রæতি ভঙ্গের ধৃষ্টতার
সরাসরি দৃশ্যমান অবস্থা দেখে।
যাই হোকতবুও হাসি! তবুও পথচলি!
উদ্দেশ্য রজনীগন্ধাসুরভি যেখানে আপেক্ষিকতা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন