নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
খুব বেশি দিনের নয় ক্রিকেটে তাদের পথচলা। তবে শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে তাদের আগমনী বার্তা ঠিতই টের পেয়েছিল বিশ^। খুব দ্রæতই তা পেয়েছে বিধ্বংসী রূপ। হাঁটি-হাঁটি, পা-পা করে আজ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আফগানিস্তানের উত্থান চোখে পড়ার মতো।
ক্ষুদ্র ফরমাটে দলটির আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে এরই মধ্যে পেছনে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশকে। সাকিব আল হাসানদের থেকে তিন ধাপ ওপরে রশিদ খানের দল। মাঠের ক্রিকেটে ব্যবধান হয়ে উঠছিল আরও বেশি। পাত্তাই পাচ্ছিল না বাংলাদেশ। শুধু কি টি-টোয়েন্টি, ঘরের মাঠে তাদের কাছে টেস্ট ম্যাচেও পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। টানা চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হারার পর অবশেষে এলো এক জয়। যে জয় শুধু ‘বড়’-ই নয়, আত্মবিশ^াস ফোরানোরও বটে।
চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজের আগে একমাত্রও টেস্টেও হেরেছিল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে আফগানরা হয়ে উঠেছিল যেন বিভীষিকা। তবে সেই ধারা ভেঙে গতপরশু চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। জয়টি যদিও সহজে আসনি। ম্যাচের রঙ বদলেছে অনেকবার। আফগানরা ঝড়ো শুরু করেছিল, বাংলাদেশ ম্যাচে ফিরেছে বোলারদের সৌজন্যে। পরে রান তাড়ার শুরুটাও হয়েছিল বাজে। সাকিবের ৪৫ বলে ৭০ রানের অপরাজিত ইনিংস দলকে নিয়ে গেছে জয়ের ঠিকানায়। সবকিছু মিলিয়েই ম্যাচ শেষে স্বস্তিই ঝরে সাকিবের কণ্ঠে, ‘বড় জয় এটি। গত কয়েক মাসের পারফরম্যান্স যদি বিবেচনা করেন, টি-টোয়েন্টিতে আমরা মোটেও ভালো করতে পারছিলাম না। আমাদের উন্নতি করা খুব জরুরি ছিল। এটি নিয়ে কাজ করছিলাম আমরা।’
এই জয়ের আত্মবিশ^াস নিয়েই এখন ঢাকায় বাংলাদেশ দল। আগামীকাল ফাইনালে আবার এই আফগানিস্তানের বিপক্ষেই খেলতে হবে বাংলাদেশকে। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটে আফগান স্পিনারদের আরেকটু বেশি সহায়তা পাওয়ার কথা। চ্যালেঞ্জটি তাই হবে আরও কঠিন। তবে এই জয় থেকেই বিশ্বাস পাচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, এই জয় আমাদের অনেক অনুপ্রেরণা জোগাবে, ফাইনালের জন্য আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। মিরপুরে কন্ডিশন যদিও আলাদা হবে। আফগানিস্তানকে আবারও হারাতে নিজেদের সেরা চেহারায় থাকতে হবে আমাদের।’
আর স্বস্তির এ জয়ে মিলেছে কাক্সিক্ষত মোমেন্টামও। আর এ মোমেন্টাম দিয়েই আগামীর পথ পাড়ি দিতে চায় বাংলাদেশ। ফাইনাল তো বটেই। ম্যাচ শেষে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত সংবাদ সম্মেলনেও স্পষ্ট জানিয়েছেন মোমেন্টাম পাওয়ার কথা, ‘আসলে এমন ম্যাচ জিতলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। তার উপর ওদের বিপক্ষে অনেকগুলো ম্যাচ হেরেছি আমরা। এ ম্যাচ অবশ্যই আত্মবিশ্বাস এনে দিবে। এতে আমরা মোমেন্টাম পেলাম। আশা করি এ মোমেন্টাম কাজে লাগিয়ে ফাইনালে ভালো কিছু করব।’
ভাগ্য ফেরাতে টাইগাররা ফিরে আসে সাগরিকায়। বিপর্যস্ত অবস্থায় বহু সুখস্মৃতি দিয়েছে যে মাঠ। এক সময় যাকে ‘পয়া’ মাঠই বলত সবাই। যদিও আফগানিস্তানের কাছে টেস্ট হারে সে নামে কিছুটা হলেও কালি লেপেছে। ব্যকফুটে থাকা দলটি শুরুতেই মুখোমুখি হয় জিম্বাবুয়ের। আর শুরু থেকেই দাপট দেখিয়ে কি দারুণ জয়ই না এনে দিলেন মাহমুদউল্লাহরা। সেদিনের ম্যাচের চিত্রই পাল্টে দিল বাংলাদেশকে। মনে করিয়ে দিল এমন বহুবারই তারা বাংলাদেশের কাছে হেরে মোমেন্টাম দিয়ে গেছে টাইগারদের।
এইতো, ২০১৪ সালে আগে যখন বাংলাদেশ একের পর এক হারে ক্লান্ত, তখনই দেশে ডেকে আনা হয় জিম্বাবুয়েকে। সেবার ওয়ানডে ও টেস্ট দুই সিরিজেই তাদের হোয়াইটওয়াশ করে আত্মবিশ্বাস মিলে বাংলাদেশের। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে যায় ২০১৫ বিশ্বকাপে। পায় সর্বোচ্চ সাফল্য। এরপর সে ধারা টিকে ছিল অনেক দিন। মাঝে বিক্ষিপ্ত ভাবে হারলেও জয় কখনোই অধরা হয়ে ওঠেনি। এর আগেও এমন অনেকবারই হয়েছে।
আর শুধু সে ম্যাচেই নয়, পরের ম্যাচে তারা আফগানিস্তানকে হারিয়ে সুবিধা করে দেয় বাংলাদেশকে। জানিয়ে দেয়, টানা জয়ের বিশ্বরেকর্ড যতই করুক, এ দলটি অজেয় কিছু নয়। শুধু মাঠে সেরাটা খেললেই হয়। সঙ্গে আফগানদের আত্মবিশ্বাসে আঘাত ফেলে যায়। আর জিম্বাবুয়ের দেখানো পথে হেঁটেছে বাংলাদেশ। এদিনের শুরুটা খারাপ হলেও গুছিয়ে নিতে খুব একটা সময় নেয়নি তারা। এরপর দারুণ লড়াই করেই জিতেছে দলটি। আর তাতে টাইগারদের আত্মবিশ্বাসের পারদ এখন অনেক উঁচুতে। আর প্রাপ্ত এ মোমেন্টামকে সহজে হারাতে চান না মোসাদ্দেক, ‘টি-টোয়েন্টিতে আসলে কোন কিছুই বলা যায় না। নির্দিষ্ট দিনে যে ভালো খেলবে সেই জিতবে। যে কোন সময় বদলে যেতে পারে মোমেন্টাম। তাই আমাদের সেরাটা দিয়েই লড়তে হবে। আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। এটা কাজে লাগাতে হবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।