Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মানবতাবিরোধী অপরাধে সু চির বিচার হতে হবে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৩ পিএম

মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ পর্যবেক্ষক ইয়াং লি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনে দেশটির সেনাবাহিনীর জাতিগত শুদ্ধি অভিযানে নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি।

কারণ তিনিই দেশটির সর্বোচ্চ নেত্রী। মিয়ানমারের বেসামরিক নেতা, একবার নোবেল বিজয়ী গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পরিচিত।

তিনি রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর সামরিক বাহিনীর হামলার কারণে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন বলে মঙ্গলবার জাতিসংঘের তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। খবর এএফপি ও ট্রেইট টাইমসের।

১৯৯১ সালে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি নোবেল পুরস্কার পান। তবে পুরস্কার পাওয়ার সময় তিনি দেশটিতে গৃহবন্দি হিসেবে ছিলেন। সু চির ছিল দীর্ঘদিন আন্দোলনের ইতিহাস। তবে তার আন্দোলন সহিংস ছিল না, যা নোবেল কমিটি উল্লেখ করেছে।

মঙ্গলবার জেনেভায় জাতিসংঘের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থাকে দেয়া এক প্রতিবেদনে মিয়ানমারে স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির তদন্তকারীদের একটি প্যানেল বলেছে- মিয়ানমারে ৬ লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গা নির্যাতনের মুখোমুখি হচ্ছে।

এ ব্যাপারে সু চি তার দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। নোবেল কমিটি তাদের বিবৃতিতে সু চিকে নোবেল পুরস্কার দেয়ার তিনটি কারণ উল্লেখ করেছিল, যার প্রতিটি লঙ্ঘন করেছেন তিনি।

১৯৯১ সালে অং সান সু চিকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়ে নোবেল কমিটি বলেছিল, অং সান সু চিকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য তার অহিংস সংগ্রামের কারণে এটি দেয়া হচ্ছে।

তিনি নিপীড়নের বিরুদ্ধে একজন আদর্শ হিসেবে পরিণত হয়েছেন। বিশ্বের বহু মানুষের গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম মানবাধিকার ও জাতিগত শান্তি বজায় রাখায় তার শান্তিপূর্ণ সমর্থন ও অবিরত প্রচেষ্টার জন্যই এ পুরস্কার।

এখন তার ক্ষমতায়নে মিয়ানমারের পরিস্থিতি ভিন্ন। আর তার সরকারই যখন রোহিঙ্গাদের নির্যাতন নিপীড়নের জন্য দায়ী, তখন নিপীড়ক হিসেবে তার নামও চলে আসে।
রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মম নির্যাতনের কারণে ২০১৬ সালেই সু চির নোবেল শান্তি পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়ার দাবি ওঠে। সেই সময় অনলাইনে তার নোবেল শান্তি পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়ার জন্য এক আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন লক্ষাধিক মানুষ।

মঙ্গলবার মিয়ানমার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের এ রিপোর্টকে ‘একতরফা অভিযোগ’ এবং ‘ভুল তথ্য’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

জেনেভাতে জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত কিউ মো তুন এই প্যানেলকে নিরপেক্ষতার অভাবের অভিযোগ করেছেন এবং বলেছেন, এই প্রতিবেদনের ফলে মিয়ানমারের অর্থনৈতিক অসুবিধা হবে।

মিয়ানমারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ পর্যবেক্ষক ইয়াং লি বলেন, বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে সামরিক বাহিনী রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক অঞ্চলে হেলিকপ্টার গানশিপ, ভারী আর্টিলারি এবং ল্যান্ড মাইন ব্যবহার করছে। রাখাইনে পুরুষদের মারাত্মক নির্যাতন করা হয়েছে এবং রাখাইন গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তদন্তকারীরা বলেন, সেনা পদক্ষেপের বিষয়ে অং সান সু চির কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না।

তবে মিয়ানমারের পার্লামেন্টে ৬০ শতাংশ আসন নিয়ন্ত্রণকারী একটি দলের প্রধান হিসেবে তিনি এমন একটি সরকারকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যেসব আইন পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখে। বিদ্যমান পরিস্থিতি এবং মানবাধিকারের জন্য সু চির ব্যাপক ও বিস্তৃত দায়িত্ব ছিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ