Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এবার ঝাড়খন্ড থেকে কথিত অবৈধ অভিবাসীদের তাড়ানোর ঘোষণা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪৮ পিএম

এ বছরের শেষের দিকে বিধানসভা নির্বাচন। এমন সময় কথিত ‘অবৈধ অভিবাসী’ ইস্যুতে রাজনৈতিক উত্তেজনাকে উস্কে দিয়েছেন ভারতের ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী রাঘুবর দাস। তিনি মঙ্গলবার বলেছেন, রাজ্যের বৈধ মুসলিম অধিবাসীদের কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা কেড়ে নিচ্ছে বাংলাদেশের অবৈধ অভিবাসীরা। তাই তার রাজ্যেও নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি করার দাবি উত্থাপন করেছেন। এ খবর দিয়ে অনলাইন হিন্দুস্তান টাইমস বলছে রাজ্যের রাজধানী রাঁচিতে মঙ্গলবার একটি মিডিয়া হাউজ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি।

সেখানে রাঘুবর দাস বলেছেন, ঝাড়খন্ডে এনআরসি বাস্তবায়ন করার জন্য আমিও আবেদন করেছি। পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ ঘটছে বাংলাদেশের অবৈধ নাগরিকদের। তারা পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ঝাড়খন্ডের সাঁওতাল অঞ্চলে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। আর এখন তারা পুরো রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। ঝাড়খন্ডের বৈধ মুসলিম নাগরিকদের অধিকারকে খেয়ে দিচ্ছে তারা। তিনি আরো বলেন, এসব বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসীদের সনাক্ত করা হবে এবং বিজেপি সরকার তাদেরকে তাদের দেশে ফেরত পাঠাবে।

এ সময় ঝাড়খন্ডের বিধানসভা নির্বাচনে নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে এনআরসি অন্তর্ভুক্ত করবে কিনা বিজেপি- এমন প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রাঘুবর দাস বলেন, বিষয়টি এরই মধ্যে দলীয় মেনিফেস্টোতে আছে। উল্লেখ্য, এই রাজ্যে বসবাস প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ মানুষের। এর মধ্যে প্রায় ৭০ লাখ তফসিলি উপজাতি। এই রাজ্যটি বিহার থেকে আলাদা করে আনা হয়েছে। এর পূর্বে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত। ঝাড়খন্ড রাজ্যে বসবাসকারীদের মধ্যে শতকরা প্রায় ১৫ ভাগ মুসলিম। শতকরা প্রায় ৬৮ ভাগ হিন্দু। এখন পর্যন্ত আসামই একমাত্র রাজ্য, যেখানে এনআরসি সম্পন্ন হয়েছে। এরপর অন্য কিছু রাজ্যে এই এনআরসি করার দাবি উঠেছে।

সারা ভারতে অবৈধ অভিবাসীদের প্রতিরোধে এনআরসি বাস্তবায়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন সম্প্রতি বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। তবে ২০১৭ সালের আগস্টে রাঘুবর দাস প্রথমবারের মতো ঘোষণা দেন যে, দেশ থেকে বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসীদের সনাক্ত করে তাদেরকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। ওই সময় তিনি অভিযোগ করেন, ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকে উৎসাহিত করে কিছু রাজনৈতিক দল। এসব অভিবাসীকে ভোটার পরিচয়পত্রের মতো পরিচয়ের প্রমাণপত্র পেতে সহায়তা করে সরকারের দুর্নীতিবাজ কিছু কর্মকর্তা। এ জন্য ঝাড়খন্ডের স্বরাষ্ট্র, জেল ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ২০১৮ সালের জুনে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এনআরসির কাজ শুরু করার অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছে। তবে এই আবেদনের জবাব এখনও আসেনি বলে জানিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক ডিপার্টমেন্টের অতিরিক্ত সচিব ইগনাতিয়াস কুল্লু।

গোড্ডা থেকে নির্বাচিত বিজেপি দলীয় এমপি নিশিকান্ত দুবে ২০০৯ সাল থেকেই বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কণ্ঠ জোরালো করেছেন। তিনি এবার বলেছেন, এনআরসি করার যে আবেদন করা হয়েছে তাতে অজান্তেই ভুল রয়ে গেছে। এই আবেদনটি ছিল শুধু সাহেবগঞ্জ এবং পাকুর জেলার জন্য। কিন্তু এই দুটি জেলায় এনআরসি করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। তাই এখন রাজ্যের উচিত একটি রিভাইস করা চিঠি পাঠানো। তাতে পুরো রাজ্যে এনআরসি করার অনুমোদন চাইতে হবে। তার দাবি ঝাড়খন্ডে বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা হতে পারে ৪০ লাখ। এর মধ্যে সাঁওতাল পরগনার ৬টি জেলায় তাদের সংখ্যা হবে ১৫ লাখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ