Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চুক্তিহীন ব্রেক্সিট-আগাম নির্বাচন আটকে গেল দুটোই

হাউজ অব কমন্সে দুই দফা পরাজিত হয়েছেন বরিস জনসন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:০২ এএম

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বুধবার রাতে হাউজ অব কমন্সে দুই দফা পরাজিত হয়েছেন। আগাম নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে যে প্রস্তাব এনেছিলেন সেটি দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় খারিজ হয়ে গেছে। এর আগে সংসদ সদস্যরা ‘নো-ডিল ব্রেক্সিট’ বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে চুক্তি ছাড়া বেরিয়ে যাবার বিষয়টি আটকে দিয়ে একটি বিল পাশ করেছেন পার্লামেন্ট। এই বিলটি এনেছে বিরোধী দলগুলো, তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির একদল বিদ্রোহী এমপি। ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটেনে রাজনৈতিক সংকট যেরকম চরমে পৌঁছেছে, তা সা¤প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন। এই বিলের মাধ্যমে ব্রেক্সিট প্রশ্নে সরকারের ভ‚মিকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।

এ বিলের মাধ্যমে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে একটি সমঝোতা করে পার্লামেন্টে নিয়ে আসতে না পারেন, তাহলে তাকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে ফিরে যেতে হবে এবং অনুরোধ জানাতে হবে যে ব্রেক্সিটের সময়সীমা ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়া হয়। এ অনুরোধ জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইউরোপীয় ইউনিয়নে যে চিঠি পাঠাবেন, সেটার ভাষা কী হবে তা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে এই বিলের মাধ্যমে।
‘নো-ডিল ব্রেক্সিট’ আটকে দিয়ে পার্লামেন্টে যে বিল পাশ করা হয়েছে সেটি এক অর্থে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে আতœসমর্পণ বলে বর্ণনা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। এ বিল পাশ হবার পরে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আগামী ১৫ অক্টোবর নির্বাচনের প্রস্তাব আনেন। কিন্তু ব্রিটেনে এখন যে ‘ফিক্সড টার্ম পার্লামেন্ট অ্যাক্ট’ রয়েছে সেখানে বলা আছে যে, একটি পার্লামেন্ট যে মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হবে সে মেয়াদ পর্যন্ত থাকবে। যদি আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হয় তাহলে দুই-তৃতীয়াংশ পার্লামেন্ট সদস্যের সমর্থন লাগবে। কিন্তু আগাম নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়েছে। আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব রেখে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘সরকারের আনা একের পর এক প্রস্তাব যদি পার্লামেন্ট পাশ না করে, তাহলে সরকার পরিচালনা করা পুরোপুরি অসম্ভব।’
মি. জনসন বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে এটা নজিরবিহীন যে সরকার নির্বাচন দিতে চাইছে আর বিরোধী দল সেটি প্রত্যাখ্যান করছে। তবে বিরোধী দল লেবার পার্টি বলছে, তারা আগাম নির্বাচনের বিরোধ নয়। গত দুই বছর যাবত লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু এই মুহ‚র্তে লেবার পার্টির অগ্রাধিকার হচ্ছে ‘নো ডিল ব্রেক্সিট’ বন্ধ করা।
‘নো ডিল ব্রেক্সিট’ আটকে দিয়ে হাউস অব কমন্সে যে বিল পাশ হয়েছে সেটি এখন হাউজ অব লর্ডসে যাবে। এরপর রানীর সম্মতির জন্য সেটি পাঠানো হবে। এই সবগুলো ধাপ পার হবার যখন পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে যে ‘নো ডিল ব্রেক্সিট’ আর হচ্ছে না, তখন নির্বাচনের ব্যাপারে বিরোধী দল লেবার পার্টির কোন আপত্তি নেই।
বরিস জনসনের ভাইয়ের পদত্যাগ
এদিকে এমপি ও মন্ত্রী উভয় অবস্থান থেকেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ভাই জো জনসন। ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে চলমান বিতর্কের মধ্যেই এক টুইট বার্তায় পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি জানান, রাজনীতিও ছেড়ে দিচ্ছেন তিনি।
অরপিঙ্গটন থেকে নির্বাচিত এমপি জো জনসন টুইট বার্তায় বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহ ধরে পারিবারিক বিশ্বস্থতা ও জাতীয় স্বার্থ নিয়ে আমি চাপের মধ্যে ছিলাম। এটি আমার জন্য অসমাধানযোগ্য একটি উদ্বেগ। এখন সময় এসেছে অন্য কারো আমার এমপি ও মন্ত্রী পদ গ্রহণ করার।’ তিনি আরো বলেন, ‘তিন জন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে দীর্ঘ ৯ বছর মন্ত্রী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়ে আমি সম্মানিত।’ সূত্র : বিবিসি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্রিটেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ