পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চাঞ্চল্যকর বরগুনার রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি হওয়া মিন্নি ৪৮ দিন পর বরগুনা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। সব আইনি প্রক্রিয়া ও দাফতরিক কাজ শেষে গতকাল বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে কারাগার থেকে মুক্তি পান মিন্নি। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় মুক্তির পর কারা ফটকে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা বলেননি। তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সরাসরি মইঠা এলাকায় বাবার বাসায় নেয়া হয়।
কারাগার থেকে মিন্নি বের হওয়ায় সময় উপস্থিত ছিলেন মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর ও তার আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম। এ সময় বাবার হাত ধরে কারাগার থেকে বের হন মিন্নি। মিন্নি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে কারাগার প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয় উৎসুক জনতা। কারাগার প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সদস্যরাও।
বেলা ১২টার দিকে হাইকোর্টের দেয়া মিন্নির জামিন আদেশের কপি বরগুনার আদালতে এসে পৌঁছানোর সাথে সাথেই মিন্নির পক্ষে জামিননামা দাখিল করেন তার আইনজীবী। এরপর সব দাফতরিক কাজ শেষ করে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে জামিন আদেশ নিয়ে কারাগারে যান আইনজীবী। কারাগারের সকল প্রক্রিয়া শেষ করে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে বাবার সাথে মিন্নি করাগার থেকে বেড়িয়ে আসেন।
মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, মিন্নিকে দেয়া হাইকোর্টের অন্তবর্তী জামিনের আদেশের স্বাক্ষরিত কপি বেলা ১২টার দিকে বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এসে পৌঁছে। পরে মিন্নির পক্ষে জামিননামা দাখিলের অনুরোধ করা হয়। বিচারক জামিননামা গ্রহণ করে কারা কর্তৃপক্ষকে রিলিজ অর্ডার পাঠান। সব দাফতরিক কাজ শেষে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে কারামুক্ত হন মিন্নি।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে এ মামলার ১৪ আসামিকে হাজির করা হয়। পরে আদালতের কার্যক্রম শেষে এ মামলায় গ্রেফতার ৬ কিশোরকে যশোর শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে এবং অন্যদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর ধার্য করা হয়েছে।
রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী মিন্নিকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত চেয়ে করা রাষ্ট্রপক্ষের আপিল আবেদনের ওপর সোমবার নো-অর্ডার দেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত। এর ফলে মিন্নির জামিনে মুক্তিতে বাঁধা কাটে। চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত এ আদেশ দেন।
গত ২৯ আগস্ট মিন্নিকে কেন জামিন দেয়া হবে না মর্মে জারি করা রুলের চ‚ড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ দুই শর্ত দিয়ে মিন্নির অন্তবর্তী স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করে রায় দেন। জামিনে থাকাবস্থায় মিন্নি তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের জিম্মায় থাকবেন এবং জামিনে থাকাবস্থায় তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। এই দুই শর্তের ব্যাত্যয় ঘটলে মিন্নির জামিন বাতিল হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন হাইকোর্ট।
এরই মধ্যে গত রোববার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। একই সাথে রিফাত হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। পুলিশের এ চার্জশিটে মিন্নিকে ৭ নম্বর আসামি করা হয়।
এদিকে, রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় সেখানকার সাংসদ পুত্র সুনাম দেবনাথকে আসামি না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া আসামিরা। গতকাল দুপুরের দিকে আদালত থেকে ফেরার সময় আসামিরা সাংবাদিকদের দেখে এই প্রতিক্রিয়া দেখান।
সাংবাদিকদের কাছে আসা মাত্রই এক আসামি উচ্চস্বরে বলেন, সুনাম দেবনাথ কিন্তু আমাদের লিডার। আদালতের কার্যক্রম শেষে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় আবার সাংবাদিকদের সামনে উচ্চস্বরে বলেন, অন্যায় অবিচার হচ্ছে। যে করছে, তারে দেছে সাত নাম্বার। মিন্নি কেন সাত নাম্বার? সুনাম দেবনাথ কেন আসামি নাই। সুনাম দেবনাথ নির্দেশদাতা, সে কেন আসামি নাই।
অভিযোগ প্রসঙ্গে সুনাম দেবনাথ গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, এটা আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এই ষড়যন্ত্র করছে। আমার নাম কি ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে এসেছে, রিমান্ডে কোনো আসামি বলেছে? আপনারা বুঝতে পারছেন এটা আমার বিরুদ্ধে কী রকম ষড়যন্ত্র।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।