মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের আসাম রাজ্যে আজ শনিবার জাতীয় নাগরিক পঞ্জি তথা এনআরসি প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার বাংলা সংস্করণে পার্থ প্রতীম মৈত্রের আসাম এনআরসি: উৎকণ্ঠার অবসান নাকি উৎকণ্ঠার সূত্রপাত? শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এখানে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হলো।
আজ ৩১ অগাস্ট, দীর্ঘদিনের উৎকণ্ঠার অবসান। অথবা আজ ৩১ অগাস্ট, দীর্ঘদিনের জন্য উৎকণ্ঠার শুরু। আজই প্রকাশিত হয়েছে এনআরসি বিষয়ক শেষ বা আপাতত শেষ সংযোজন এবং বিয়োজন তালিকা। গত ৩০ জুলাই, ২০১৮-য় যে পূর্ণাঙ্গ খসড়া প্রকাশিত হয়েছিল, সেখানে আবেদনকারীদের মধ্যে প্রায় একচল্লিশ লক্ষ মানুষের নাম তালিকাচ্যুত ছিল। এরপরেও হঠাৎ অনাগরিক হয়ে যাওয়া চল্লিশ লক্ষ মানুষের ক্রোধ এবং ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয়নি। যে বিস্ফোরণের আশঙ্কায় সরকার বাধ্য হয়েছিল তালিকা প্রকাশের অব্যবহিত আগে ঘোষণা করতে যে, এই তালিকায় নাম না থাকা মানেই ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণ অন্ধকার হয়ে যাওয়া নয়। এরপরও অনেক সুযোগ থাকবে তালিকায় নাম তোলার। নাম ওঠেনি অথবা উঠলেও কেটে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় মৃতবৎ জীবিত রয়েছেন আসামের মানুষ, বিশেষত নিম্নবর্গের মানুষ, যারা এই কর্মযজ্ঞের যূপকাষ্ঠের বলি।
অতএব মানুষ আতঙ্কিত হলেও, চূড়ান্ত বিক্ষুব্ধ হলেও, নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন, তার কারণ ক্লেইমস অ্যান্ড অবজেক্টিভস বলে একটি পর্যায় অবশিষ্ট ছিল, যেখানে তারা পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানাতে পারেন। পাশাপাশি, যাদের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে তাদের নামের বিরুদ্ধেও অবজেকশন জানানোর জন্য হাজির থেকেছে একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী, যারা এই তথাকথিত বিদেশীর সংখ্যাকে পঞ্চাশ লক্ষের ওপরে পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। ফলে যে উৎকন্ঠা নিয়ে এতদিন অপেক্ষা করেছেন আসামের মানুষ, সেই উৎকন্ঠার এবার অবসান হওয়ার কথা।
কিন্তু ভারতবর্ষের রাজনীতির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, কোন ইস্যুরই চূড়ান্ত সমাধান হয়ে যায় না। কিছুদিন পরপর ঘুরে ফিরে সেই ইস্যুটিকে খুঁচিয়ে তোলা হয়। নাগরিক চিহ্নিতকরণের চূড়ান্ত পর্যায়েও প্রকৃত ভারতীয় এবং প্রকৃত বিদেশির মধ্যে একটি বড় অন্তর রয়েছে, তার নাম বিচার ব্যবস্থা। যে বিচার ব্যবস্থার সুপ্রিম কোর্টের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এনআরসির কার্য সম্পন্ন হচ্ছে। আপাতত আজকের তালিকায় যাদের নাম অপ্রমাণিত ভারতীয় বা অনাগরিক হিসাবে চিহ্নিত হবে, তারা এক শ' কুড়ি দিনের মধ্যে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।
ট্রাইব্যুনালের কথায় পরে আসছি। কিন্তু শাসক দল বিজেপি, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মুখপাত্ররা হঠাৎ অতি উৎসাহী হয়ে যাতে প্রকৃত ভারতীয়ের নাম বাদ না পড়ে, তার জন্য উৎকন্ঠিত। সংবাদ সম্মেলন করে তারা এও জানাচ্ছেন যে প্রতীক হাজেলার অদক্ষতার এবং অপরিণামদর্শিতার জন্য ত্রুটিমুক্ত তালিকা হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। বিজেপির বক্তব্য, এই তালিকা থেকে এমন অসংখ্য মানুষ বাদ গেছেন যারা প্রকৃত ভারতীয়, এবং অসংখ্য নাম রয়েছে যেগুলি প্রকৃত বিদেশি। ফলে এই মুহূর্তে ত্রুটিমুক্ত নাগরিকপঞ্জি আশা না করাই ভালো।
বিজেপির আরো বক্তব্য যে ৪০ লক্ষ তালিকাচ্যুত মানুষের মধ্যে ৩৬ লক্ষ পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছেন। বাকি যে চার লক্ষ আবেদন করেননি, তারা হয় ক্লেইমসের বিষয়টি বুঝতে পারেননি, অথবা তারা প্রকৃত বিদেশি এবং ইচ্ছাকৃতভাবে নতুন করে আবেদন জানাননি। মনে হতে পারে, কে ইচ্ছাকৃতভাবে আবেদন জানাননি আর কে বোঝার অক্ষমতার জন্য, তা কী করে বোঝা যাবে? বিজেপির কাছে এ সমস্যা জলবৎ তরলং। যারা হিন্দু, তারা প্রকৃত ভারতীয় আর মুসলিম, মানে বাঙালি মুসলিমরা হলেন বিদেশি।
আসলে উগ্র হিন্দুত্বের লাভ দেখতে গিয়ে বিজেপি পড়ে গেছে ‘মাইনকার চিপায়’। এনআরসিবিষয়ক যে অঙ্কটি কষতে ভুল করেছিল বিজেপি তা হলো, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষের মধ্যে বিভাজনের সমস্যা শুধুমাত্র ধর্মীয় নয়, ভাষারও। ফলে এক ভাষাভাষীর লোকের সঙ্গে অন্য ভাষাভাষী লোকের বৈরিতা এনআরসির ডাটা ভেরিফিকেশনের সময় বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে। যেহেতু ধরেই নেওয়া হয়েছে যে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে মূলত বিদেশিরা আসামে প্রবেশ করেছেন এবং তারা মূলত বাঙালি, ফলে বাঙালি পরিচিতি দেখলেই এক ধরনের সন্দেহপ্রবণতা এনআরসি সেবা কেন্দ্রগুলির সাধারণ কর্মচারীদের মধ্যে নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে বিরূপ মনোভাব হিসেবে কাজ করেছে।
ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রেও তাই। এবং এই যে আজ খিলঞ্জিয়া স্বার্থরক্ষার প্রেক্ষাপটে আসাম চুক্তির ধারা বিশেষের প্রসঙ্গ উঠছে, সেটিও মূলত এই কারণেই। আসামের মূল দ্বন্দ্ব ছিল ভাষাগত বৈরিতা। যখন থেকে আরএসএস আসামে ক্রিয়াশীল হয়েছে, তখন থেকে খুব ধীরে ধীরে এটি ধর্মীয় বিভাজনের দিকে পাশ ফিরে শুয়েছে। কিন্তু ভাষাগত বৈরিতার জায়গাটি থেকেই গেছে। এনআরসি ঝাড়াই-বাছাই এর সময় মূলত মুসলিম জনসংখ্যাই বাদ পড়বে সবচেয়ে বেশি, বিজেপির এই অনুমান সম্ভবত বুমেরাং হতে চলেছে। অধিকাংশ না হোক, একটা বড় সংখ্যক হিন্দু নাম তালিকাচ্যুত হতে চলেছে, এটা তাদেরও আশঙ্কা।
এই হিসেবের গরমিল তারা এনআরসি প্রক্রিয়ার মাঝামাঝি সময় থেকে বুঝতে পারে। ফলে বিকল্প হিসেবে তারা ‘সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল’ আনার প্রলোভন দেখায়, যেটি আবার অসমিয়া জাতিসত্তার কাছে প্রতারণা বলে মনে হয় এবং তারা এর সার্বিক বিরোধিতায় নেমে পড়ে। তবু ২০১৪ সালকে ভিত্তি বর্ষ ধরে বৃহত্তর হিন্দু ধর্মসম্প্রদায় যারা বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে এই দেশে প্রবেশ করেছেন, তাদের এই দেশেই নাগরিকত্ব বিধানের ব্যবস্থা করা হবে বলে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দেয়। যদিও লোকসভায় পাশ করার পর, রাজ্যসভায় সে বিল আর তোলাই হলো না। ‘সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিল, ২০১৬’, যেটি লোকসভায় পাশ করা হয়েছিল, সেখানে কিন্তু নাগরিকত্ব বিধানের কোনো সহজ পন্থার কথা বলা ছিল না। বিলে শরণার্থী হিন্দুদের ধরে বিতাড়িত করে দেয়া হবে না, এইটুকু নিশ্চয়তা দেয়া ছিল।
আর আজ যারা এনআরসি প্রক্রিয়ায় বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত হবেন, তাদের ট্রাইব্যুনালের কাছে অ্যাপিল করতে হবে, অথবা সরকার ট্রাইব্যুনালে কেসগুলো রেফার করবে। প্রতিটি কেসের সব ডকুমেন্টের অরিজিনাল পেশ করতে হবে ট্রাইব্যুনালে। চিহ্নিত বিদেশিকে নোটিস ধরাতে হবে। ৪০-৫০ লাখ চিহ্নিত বিদেশী, তাদের অধিকার থাকবে প্রয়োজনে নতুন ডকুমেন্ট পেশ করে নিজের দাবিকে মজবুত করার, এমনকি উকিল পর্যন্ত নিয়োগ করার।
দাবি উঠেছে যে এনআরসি কর্তৃপক্ষকে ‘কজ অব রিজেকশন’ জানিয়ে দিতে হবে, অর্থাৎ কেন তার নাম বাতিল করা হয়েছে তা জানাতে হবে, যার ভিত্তিতে তিনি অ্যাপিল করবেন ট্রাইব্যুনালে। ফলে ৪০-৫০ লক্ষ মানুষের কেস বিচার করতে অনন্ত সময় লেগে যাবে। উপরন্তু ট্রাইব্যুনাল তো রায় দেয় না, মত দেয়। তাই ট্রাইব্যুনালের রায় পছন্দ না হলে যাঁদের সঙ্গতি আছে, তাঁরা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করতে পারেন। সেখানেও সন্তুষ্ট না হলে সুপ্রিম কোর্ট, অর্থাৎ যে কোর্ট থেকে বল গড়াতে শুরু করেছিল।
চূড়ান্ত এইসব দেশহীন নাগরিকত্বহীন না-মানুষদের নিয়ে কী করা হবে, তা আমাদের দেশ শাসকদের অজানা। শোনা যাচ্ছে, গোয়ালপাড়া জেলায় সরকার বিপুল পরিমাণ জমি অধিগ্রহণ করেছে ক্যাম্প তৈরি করে তালিকাচ্যুত আবেদনকারীদের সুরক্ষিত রাখার জন্য। যাঁরা বিজেপির সদিচ্ছায় এবং সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিল-এর কার্যকারিতায় অতিরিক্ত আস্থাবান, তাদের শুধু এটুকু বলার যে, এই বিল নিয়ে অনেক আলোচনা পর্যালোচনার পর ঠিক হয়েছে যে ভারতীয় ভূখণ্ডে অবৈধভাবে প্রবেশ করা অমুসলিম মানুষটিকে প্রথমে ঘোষণা করতে হবে যে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। দ্বিতীয়ত, তাঁকে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে এদেশে চলে এসেছেন এবং আবেদন করতে হবে নাগরিকত্বের জন্য। ছয় বছর তাঁর ভারতবাসের প্রমাণ দিতে হবে।
সবচেয়ে বড় সমস্যা হবে এদের কোথায় থাকতে দেয়া হবে তা নিয়ে। কারণ এদের আসামে রাখার মানে এনআরসি-কে নস্যাৎ করার সমতুল্য। এতদিন ধরে অসমিয়া জনগণকে এনআরসির হাওয়া দিয়ে আজ হঠাৎ যদি বলা হয় এনআরসি পর্বতের মূষিক প্রসবমাত্র, তাহলে তাদের পক্ষে সেটা মেনে নিতে আগ্রহী হওয়ার কোনো কারণ নেই।
কিন্তু তার চেয়েও বেশি যে সমস্যাটি অনেককে ভাবিয়ে তুলছে, তা হলো আসামের অধিকাংশ মানুষই ভারতীয়ত্বের প্রমাণপত্র দাখিল করেছেন। দাবি করেছেন যে তারা ভারতীয় নাগরিক। ট্রাইব্যুনাল যদি এনআরসি এবং প্রশাসনের প্রেফারেন্স অনুযায়ী তাঁদের বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে, তখন তাদের নতুন করে দাবি করতে হবে তাঁরা আসলে ভারতীয় নন। একবার ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণের প্রচেষ্টা এবং তারপরে সেই একই ব্যক্তির বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রমাণের প্রচেষ্টা, এই দুইয়ের মধ্যে স্বার্থের সংঘাত হবে কিনা তা আইনজ্ঞরা বলতে পারবেন। কিন্তু এইটুকু বলাই যায় যে যাঁরা ভারতীয় হিসেবে এনআরসি-তে আবেদন দাখিল করেছেন, তাঁরা পুনরায় বাংলাদেশি হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে চেষ্টা করলে আইনের চোখে বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবেন।
একদিকে আসাম-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চল দখলে রাখার হাতছানি, সে উদ্দেশ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল তাকে তুলে রাখতে হয়। অন্য দিকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করিয়ে সারা ভারতবর্ষে মুসলিম নির্বাসনকারী হিন্দু মসিহা হয়ে দখল মজবুত করা। এই দুই বিপরীতমুখী লাভের হাতছানিতে বিজেপি কোন পথ বেছে নেয় সেটাই দেখার। শাসক সব সময়ে শরণার্থী এবং অনুপ্রবেশকারী নামে দুটি আলাদা গোষ্ঠীর অস্তিত্ব সৃষ্টি করে, স্থায়ী বাসিন্দাদের তাদের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলে। আসামের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এনআরসি প্রক্রিয়ায় শরণার্থী, অনুপ্রবেশকারী এবং খিলঞ্জীয়া নামে তিনটি ভাষিক ও ধর্মীয় বিভাজন করে একের বিরুদ্ধে অন্যকে লড়তে উৎসাহিত করে আসছে।
ভারতের অন্য রাজ্যগুলোও এতে প্রলুব্ধ হচ্ছে। ফলে দেশব্যপী এক দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের সূচনাকাল উপস্থিত। অমিত শাহেরা হুংকার দিচ্ছেন, আসামের পর এবার সারা ভারতে এনআরসি চালু হবে। সব অনুপ্রবেশকারীদের ভারত থেকে খেদানো হবে। সুকৌশলে ২০২১-এর সেন্সাসের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়ে পপুলেশন রেজিস্টার তৈরি করার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করার পরিকল্পনা সম্পূর্ণ।
উল্টোদিকে, কেউ কেউ ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করেছেন, এই নতুন গেজেট নোটিফিকেশনের সঙ্গে এনআরসি-র কোনও সম্পর্ক নেই। এটা তো এনপিআর, ন্যাশন্যাল পপুলেশন রেজিস্টার। ২০২১- এর সেন্সাসের জন্য পপুলেশন ডাটা সংগ্রহ করা। এনআরসি প্রক্রিয়ার প্রথম পর্যায় যাদের মনে আছে তারা জানেন যে একই প্রক্রিয়ায় ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ভোটার লিস্টের ভিত্তিতে লিগ্যাসি ডাটাবেস তৈরি করা হয়েছিল, যার ওপর দাঁড়িয়ে আসামে এনআরসি প্রক্রিয়া চলেছে। এনপিআর তারই সর্বভারতীয় সংস্করণ।
“In pursuance of sub-rule(4) of rule 3 of the Citizenship (Registration of Citizens and Issue of National Identity Cards) Rules, 2003, the Central government hereby decides to prepare and update the Population Register…… ”
এটাই তো লেখা আছে এই গেজেট নোটিফিকেশনে? উদ্দেশ্য, বিধেয় এবং পদ্ধতি বিচারে এনআরসির সঙ্গে এর পার্থক্য কোথায়? মনে রাখতে হবে, এই পপুলেশন রেজিস্টার এনুমারেশন থেকে আসামকে বাদ রাখা হয়েছে। কেননা এনপিআর এবং এনআরসির মধ্যে কোনো তফাত নেই।
আজ ৩১ অগাস্ট, ভাগ্যবান আসামবাসী, যারা অবশেষে নাগরিকত্বের ছাড়পত্র পেলেন, তাদের দীর্ঘদিনের উৎকণ্ঠার অবসান। অথবা আজ ৩১ অগাস্ট, ভাগ্যহীন আসামবাসী, যাদের নাম তালিকাচ্যুত হলো, তাদের দীর্ঘদিনের জন্য উৎকণ্ঠার শুরু। আরও বহুদূর যেতে হবে তাদের। যাদের সঙ্গতি নেই তারা ট্রাইব্যুনালেই নিঃস্ব হয়ে, হাইকোর্ট-সুপ্রিমকোর্টের দিবাস্বপ্ন দেখবেন, আর ঈশ্বরকে অভিশাপ দেবেন। তাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে সরকারি ডিটেনশান ক্যাম্প।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।