মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রাজ্যপাল বলছেন, কাশ্মীর স্বাভাবিক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেই কথা সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও জানিয়েছেন। আবার এ দিনই জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের এক বড় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উপত্যকার বিভিন্ন জায়গা থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৪১০০ জনকে গ্রেফতার বা আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এ পর্যন্ত ৬০৮ জনের বিরুদ্ধে বিতর্কিত জনসুরক্ষা আইনে মামলা দেয়া হয়েছে। তাদের প্রায় সকলকেই উপত্যকার বাইরে উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের নানা জেলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ধারাবাহিক এই গ্রেফতারি অভিযান এখনো চলছে। সুতরাং গ্রেফতারির সংখ্যা বাড়বে। তিনি জানিয়েছেন, গ্রেফতার হয়েছেন মূলত তরুণেরা। রাজনৈতিক নেতা, হুরিয়ত নেতা, বিভিন্ন নাগরিক ও ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতা- প্রশাসন যাদের ‘বিপজ্জনক’ মনে করেছেন, তাদেরই গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে সরকারিভাবে আটকের সংখ্যা জানানো না হলেও প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আটকের প্রকৃত সংখ্যা ৪১০০-রও অনেক বেশি। বিভিন্ন থানার লক-আপ ভরে যাওয়ার পরে বহু তরুণকে নিরাপত্তা বাহিনীর শিবিরগুলোতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যাদের সংখ্যা পুলিশ কর্মকর্তার হিসেবের বাইরে থেকে গিয়েছে। সেখানে কোউকে যেতে দেয়াও হচ্ছে না। বহু পরিবারই জানে না নিরাপত্তা বাহিনী তুলে নিয়ে যাওয়ার পরে তাদের ছেলে কোথায় আছে।
প্রশাসনের মুখপাত্র প্রিন্সিপাল সচিব রোহিত কনসাল অবশ্য এই গ্রেফতার অভিযানকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘আটক করা হচ্ছে, ছেড়ে দেয়াও হচ্ছে। থানা পর্যায়ে এমন প্রক্রিয়া চলছেই।’’ রোববার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কাশ্মীরের বিজবেহারায় বিক্ষোভকারীদের ছোড়া পাথরে প্রাণ হারিয়েছেন ট্রাক চালক মুহাম্মদ ইয়াকুব। কাচ ভেঙে পাথর তার মাথায় লাগে। পুলিশ জানিয়েছে, খালি ট্রাক নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ইয়াকুব। বিক্ষোভকারীরা ভেবেছিলেন সেটা নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রাক। আততায়ীকে চিহ্নিত করে খুনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এদিন সকাল থেকে শ্রীনগরের পুরনো শহরের বেশ কিছু এলাকা থেকেও চলাফেরায় বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হয়েছে। রাজৌরিতে সকালে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার মহড়ার সময়ে দুর্ঘটনায় বিএসএফ-এর এক জন অ্যাসিসট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর এবং এক জন হেড কনেস্টবল আহত হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাদের।
পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ায় সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অনেকে আটকে যান এর ফলে। সোমবার প্রশাসন জানিয়েছে, পুঞ্চ থেকে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে একটি বাস পাকিস্তানের রাওয়ালকোট গেছে। তার ৪৬ জন যাত্রীর মধ্যে ৪০ জনই ঈদের ছুটিতে এ দেশে এসে আটকে পড়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার নিয়ে টানা ২৩ দিন মোবাইল ফোনের সংযোগ বন্ধ। ইন্টারনেটও। বাস চলাচল কবে শুরু হবে, খবর নেই। তার মধ্যেই উপত্যকার বাইরের স্বজনদের সঙ্গে দু’টি কথা বলতে লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে প্রশাসনের গড়ে দেয়া টেলিফোন বুথের সামনে লাইন দিচ্ছেন উদ্বিগ্ন কাশ্মীরিরা। সেখানে ৫০০ লোক পিছু সিআরপি-র বরাদ্দ পাঁচটি মোবাইল ফোন। দোকান-পাট, বাজার, এমনকি ওষুধের দোকানও বন্ধ। স্কুল খুললেও ছাত্রদের সেখানে পাঠানোর সাহস করেননি অভিভাবকেরা। এর পরে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সেগুলো। রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক রোববারও বলছেন, কাশ্মীর শান্ত। তবে সেখানকার বাসিন্দাদের কথায়, এ যেন কবরের শান্তি।
দুই লাশ উদ্ধার
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে অধিকৃত কাশ্মীর। এর মাঝেই সোমবার পুলওয়ামা থেকে গুর্জর সম্প্রদায়ের দু’জন অপহৃত হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাদের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করা হয় পুলওয়ামার ত্রালের ঘন জঙ্গল থেকে। প্রশাসন সূত্র জানায়, সোমবার সন্ধায় রাজৌরি জেলা খেকে আবদুল কাদের কোহালি এবং শ্রীনগর থেকে মনজুর আহমেদ নামের দুই পশুপালককে অপহরণ করে পুলওয়ামার নিজেদের অস্থায়ী তাঁবুতে নিয়ে যায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। রাতেই অপহৃত দু’জনের খোঁজে নামে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল দিলবাগ সিংহ সংবাদমাধ্যমকে জানান, মঙ্গলবার সকালে এই দুই ব্যক্তির ছিন্নভিন্ন দেহ মেলে পুলওয়ামার জঙ্গলে। দু’জনের দেহই ত্রালের ঘন জঙ্গলের ভেতরে ফেলে রেখে যায় আততায়ীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।