মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
অধিকৃত কাশ্মীর স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেছেন, ভারত তার সর্বশেষ হাতিয়ার ব্যবহার করে ফেলেছে, তারা আলোচনার আর কোন দরজা খোলা রাখেনি। তারা যুদ্ধের উস্কানি দিচ্ছে। দু’দেশের কাছে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে।
পরিস্থিতি যুদ্ধের দিকে মোড় নিলে তাতে কেউ জিতবে না। শুধু পাকিস্তান আর ভারতই নিঃশেষ হয়ে যাবে না, বরং বিশ্বে বিপর্যয় নেমে আসবে। আর পাকিস্তান শেষ নিঃশ্বাস অবধি কাশ্মীরি ভাইদের সাথে থাকবে। ইমরান খান গতকাল সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এসব কথা বলেন।
দীর্ঘ ২৪ মিনিটের ভাষণে ইমরান খান বলেন, আমরা বিশ্বের মানুষকে জানাতে চাই কাশ্মীরের মানুষের ওপর কী ধরনের নির্যাতন হচ্ছে আর কাশ্মীরিদের জানাতে চাই যে, তোমরা একা নও, সমগ্র পাকিস্তানের জনগণ তোমাদের সাথে আছে। তিনি কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসঙ্ঘের অধিবেশন বসবে। তার আগ পর্যন্ত আমরা পাকিস্তানের জনগণ রাস্তায় নেমে এসে দাঁড়াব। বিশ্বকে জানাব যে, পাকিস্তানিরা নির্যাতিত-বঞ্চিত কাশ্মীরি ভাইদের সাথে রয়েছে। তিনি আগামী শুক্রবার বেলা ১২টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী-শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং দেশের সব মানুষের প্রতি রাস্তায় এসে দাঁড়ানোর কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে আধা ঘণ্টা করে আমরা কাশ্মীরি ভাইদের সাথে সংহতি প্রকাশে রাস্তায় থাকব। তিনি বলেন, এক এক সপ্তাহে একেকটি বিষয়কে নিয়ে আমরা রাস্তায় দাঁড়াব কাশ্মীরিদের সাথে সংহতি প্রকাশের জন্য।
ইমরান খান বলেন, সারা বিশ্বের সোয়া শ’ কোটি মুসলমান এবং বিশ্বের সব শান্তিকামী মানুষ তাকিয়ে আছে জাতিসঙ্ঘের দিকে। তারা কী করে। তারা কাশ্মীরের মানুষের সাথে ওয়াদা করেছিল রেফারেন্ডামের মাধ্যমে মাধ্যমে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেবে। গণভোট হবার কথা ছিল যে, তারা ভারতের সাথে যেতে চায় না পাকিস্তানের সাথে। সে অধিকার তাদের দেয়া হয়নি। এখন যে জুলুম হচ্ছে কাশ্মীরিদের ওপর এবং যে নির্যাতন হতে যাচ্ছে তার প্রতিকার করার দায়িত্ব জাতিসঙ্ঘের। তাদের ওপর দায়িত্ব তারা এখন দুর্বলদের সাহায্য করবে, না বড় বড় শক্তিগুলোর বাজার সংরক্ষণে তাদের পাশে দাঁড়াবে। বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে তাদের দিকে।
ইমরান খান বলেন, অহঙ্কারবশত ভারত যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, তাতে আমার বিশ্বাস, কাশ্মীরের মানুষকে সুযোগ দিয়ে দিয়েছে স্বাধীন হবার। তাদের সিদ্ধান্ত যে ভুল তা একদিন প্রমাণিত হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তাদের শেষ অস্ত্র তারা ব্যবহার করে ফেলেছে, তাদের হাতে আর কোন অপশন নেই। এখন যা করার আমরা করব, বিশ্ব করবে।
তিনি আরো বলেন, এক সময় বসনিয়ার গণহত্যা চালানো হয়েছে। গণমাধ্যমে আস্তে আস্তে প্রকাশ পাবার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বে সচেতনতা তৈরি হয়েছে, জনমত তৈরি হয়েছে এবং সবশেষে গণহত্যা বন্ধ হয়েছে। আমরাও কাশ্মীরে যে নির্যাতন-নিষ্পেষণ চলছে তা বিশ্বের দরবারে অতীতেও তুলে ধরেছি, বর্তমানে তুলে ধরছি এবং আগামীতেও তুলে ধরব।
জাতিসঙ্ঘের কথা উল্লেখ করে ইমরান খান বলেন, কাশ্মীরিদের রক্ষায় সবচেয়ে বড় অবদান রাখার কথা তাদের। কিন্তু জাতিসঙ্ঘ শক্তিশালীদের পক্ষাবলম্বনে ব্যস্ত। আমরা ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসঙ্ঘে অধিবেশনে বিষয়টি উত্থাপন করব। বিশ্বের যেখানেই পাকিস্তানি আছে, সেখানেই তারা কাশ্মীরি জনগণের পক্ষে জনমত তৈরির জন্য কাজ করবে। আমাদের বিদেশে যেবস স্থানে মিশন আছে, সবাই কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও করে যাবে।
ইমরান খান বলেন, আমরা এক যুগ সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছি। আমাদের সময় এসেছে সিদ্ধান্ত গ্রহণের। আমরা বেকারত্ব, ব্যবসা-বাণিজ্য, আবহাওয়া পরিবর্তনসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত, একই সমস্যা ভারতেরও। তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, আসুন বসে আলোচনার মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করি। কিন্তু সব সময় তারা এক এক অজুহাতে এড়িয়ে গেছে এবং আমাদের ওপর নাশকতার অভিযোগ এনেছে। আমরা তার পরও বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। বলেছি, আপনারা এক পা অগ্রসর হোন আমরা দুই পা এগোবো। আফগানিস্তান শান্তির পথে এগিয়ে গেছে। সেখানে সামরিক সমাধানের পরিবর্তে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সমাধানের পথে এগিয়ে গেছে। আমরাও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করি।
কাশ্মীর স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত লড়ার অঙ্গীকার
কাশ্মীর স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে সব পদক্ষেপ নেয়া হবে জাতির কাছে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গতকাল একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত কাশ্মীর স্বাধীন না হবে, প্রতিটি ফোরামে আমি এ বিষয়ে সর্বোচ্চ আওয়াজ তুলবো। এটি জাতির সঙ্গে আমার ওয়াদা।
নিজেকে ‘কাশ্মীরি দূত’ আখ্যায়িত করে ইমরান খান বলেন, কাশ্মীর স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত আমার চেষ্টা চলবে। কাশ্মীরি জনগণের কাছেও আমি ওয়াদা করছি, কাশ্মীর ইস্যুটি নিয়ে আমি সারাবিশ্বে কাজ করব।
তিনি বলেন, কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের মনোভাব বুঝতে পেরেছিলেন। যদি পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা না হতো, তাহলে আমাদের সঙ্গেও সেই আচরণ করা হতো, যা এখন কাশ্মীরি মুসলমানদের সঙ্গে করা হচ্ছে। আরএসএসের মতাদর্শী নরেন্দ্র মোদি ভারতীয় মুসলমানদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বানাতে চান বলেও অভিযোগ করেন ইমরান খান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।