মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
অধিকৃত কাশ্মীরের পরিস্থিতি বুঝতে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলা তো দূরের কথা, উপত্যকার ভিতরে ঢুকতেই পারলেন না প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী-সহ বিরোধী নেতারা।
গতকাল শনিবার শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকেই তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হল। এদিকে, শুক্রবার জুমার নামাজের পরেই সেখানে শুরু হয়েছিল প্রচন্ড বিক্ষোভ। বিক্ষুব্ধদের দমনে ছররা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে নিরাপত্তা বাহিনী।
কাশ্মীর যাত্রায় রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআইয়ের ডি রাজা, ডিএমকের তিরুচি শিবা, আরজেডির মনোজ ঝা এবং তৃণম‚ল নেতা দীনেশ ত্রিবেদী-সহ মোট ১২ জন। তাদের পরিকল্পনা ছিল, ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর উপত্যকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখে সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা করা। তবে এ দিন তাতে সফল হননি তারা। শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে সোজা দিল্লির বিমান ধরতে হয় তাঁদের। এ দিনের প্রতিনিধিদলে ছিলেন কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা ও গুলাম নবি আজাদ। শ্রীনগরের বিমান ধরার আগে দিল্লিতে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়েছিলেন আজাদ। কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সেখানে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। আজাদের কথায়, ‘আমরা সকলেই দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল ও নেতা। আমরা আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে যাচ্ছি না। জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি খুবই আশঙ্কাজনক। ২০ দিন ধরেই উপত্যকা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ২০ দিন ধরে সেখান থেকে কোনও খবর মিলছে না। অথচ সরকার বলছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তা-ই যদি হয়, তবে আমাদের সেখানে যেতে দেওয়া হচ্ছে না কেন? এ ধরনের দ্বিচারিতা কখনও দেখিনি... পরিস্থিতি যদি এতই স্বাভাবিক হত, তবে আমাদের সেখানে যেতে দেওয়া হচ্ছে না কেন?’
এদিকে, কাশ্মীরে শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়েছিল। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের সৌরা এলাকায় ওই বিক্ষোভ চলাকালীন হঠাৎ করেই তা হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা পাথর ছোঁড়া শুরু করলে এর জবাবে ছররা গুলি আর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে নিরাপত্তা বাহিনী।
বিবিসি’র প্রতিবেদক জানান, তিনি অন্তত দু’জনকে আহত হতে দেখেছি। কিন্তু প্রশাসনের তরফ থেকে আহতের সংখ্যা জানানো হয়নি। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর দু’সপ্তাহ আগে এই সৌরা এলাকাতেই শুক্রবারের নামাজের পরে প্রথম বড়সড় বিক্ষোভ হয়েছিল। সেদিন কোনো ঝামেলা হয়নি। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়। সেখানে তখন কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই এক জায়গায় গলির ভেতর নিরাপত্তা বাহিনী ঢুকতে চেষ্টা করে। তখনই অশান্তি শুরু হয়।
সৌরাতে একটা ব্যবস্থা রয়েছে। যখনই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ বাঁধে, তখনই সব বাড়ি থেকে টিন বাজানো শুরু হয়ে যায়। আর সব মানুষ বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে সংঘর্ষে নেমে পড়ে। এদিনও সে রকম ঘটনাই ঘটেছে। পুলিশ আর কেন্দ্রীয় বাহিনীর দল গলির ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করতেই পাথর ছোঁড়া শুরু হয় একদিকে আর অন্যদিকে সব বাড়ি থেকে টিন বাজানো হয়। সবাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ওই গলি দিকে দৌড়াতে থাকে। একদিক থেকে পাথর ছোঁড়া হচ্ছে, অন্যদিক থেকে ছররা গুলি, কাঁদানে গ্যাস আর গোলমরিচের গোলা ছোঁড়া হচ্ছিল। এতে দু’জন ছররা গুলিতে আহত হয়েছে। একজনের চোখ থেকে রক্ত বেরুচ্ছিল আর অন্য একজনের ঘাড়ে ছররা গুলির আঘাত লেগেছিল। ওই সংঘর্ষ প্রায় দু’ঘন্টা ধরে চলেছে। এখনও পর্যন্ত প্রশাসন নির্দিষ্ট করে আহতদের সংখ্যা জানায়নি।
দু’দিন ধরেই একটা পোস্টার লাগানো হয়েছিল শহরের নানা জায়গায় যে, শুক্রবারের নামাজের পর বিক্ষোভ হবে। সবাইকে আহ্বান জানানো হয়েছিল শ্রীনগরে জাতিসংঘের কার্যালয়ের দিকে মিছিল করে যাওয়ার জন্য। হুরিয়ত কনফারেন্সের নামে ওই পোস্টার লাগানো হয়েছিল। কিন্তু জাতিসংঘের কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার একটি বাদে সব রাস্তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সকাল থেকেই। সেখানে ব্যাপক নিরাপত্তা জারি করা হয়েছিল। ফলে সেদিকে কোনও মিছিল যেতে পারেনি। সূত্র : বিবিসি, টিওআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।