Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্রোধ চরমে, যেকোনো সময় বিস্ফোরণ

বিক্ষোভ দমাতে জম্মু ও কাশ্মীরে পুলিশের ধরপাকড় অব্যাহত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০২ এএম

কাশ্মীরের জনমনে ক্রোধ চরম পর্যায়ে রয়েছে। যেকোনো সময় সেই ক্রোধের চ‚ড়ান্ত বিস্ফোরণ ঘটতে পারে ব্যাপক হিংসাত্মক কার্যকলাপে। ভারতের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এমনটিই জানিয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারকে। কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনীতে এখন পর্যন্ত বিশৃঙ্খলা দেখা না-গেলেও, গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে ফুঁসছে জম্মু-কাশ্মীরের একাংশ। ৩৭০ বিলোপের পর কাশ্মীরিদের মধ্যে একটা উদ্বেগ কাজ করছে। কাশ্মীর সম্পর্কে অভিজ্ঞতা রয়েছে বা সেখানে কাজ করেছেন, এমন একাধিক অবসরপ্রাপ্ত নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কাশ্মীরে উত্তেজনার আশঙ্কা করছেন। কেন্দ্র যাতে কাশ্মীর নিয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপগুলো দ্রুত শুরু করে, সেই পরামর্শও তারা দিয়েছেন। উদ্বেগে থাকা কাশ্মীরের মানুষকে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের লাভজনক দিকগুলো বোঝাতে হবে। যাতে সাধারণ মানুষের মন থেকে বিভ্রান্তি দূর হয়। ভারতের একটি পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ৪ অগস্ট থেকে কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। প্রথমসারির নেতারাও নানাভাবে বন্দী হয়ে রয়েছেন। হয় গৃহহন্দী নয়তো কারাগারে। ফলে, সেখানকার সাধারণ মানুষ নেতৃত্বহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছে। যে কারণে শ্রীনগরে বিক্ষিপ্ত কিছু সংঘর্ষ ছাড়া এখনো সে অর্থে উত্তেজনা মাথাচাড়া দিতে পারেনি। শান্তিপূর্ণই রয়েছে কাশ্মীর। পাথর ছোড়ার মতো বিক্ষোভ দমনে যদিও ভিতরে ভিতরে কাশ্মীর পুলিশের ধরপাকড় অব্যাহত রয়েছে। কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীও নিয়মিত বাড়ি বাড়ি রেইড করছে। খবরে বলা হয়, ভারত-শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরে বিক্ষোভ দমাতে ধরপাকড় অব্যাহত রয়েছে। রাজ্যের প্রধান নগরী শ্রীনগরে নিরাপত্তা বাহিনী ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার কর্মকর্তারা জানান, গত শনিবার শ্রীনগরের নানা জায়গায় বিক্ষোভের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে উস্কানি রোধে সোমবার রাতভর নগরীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এ ৩০ জনকে আটক করা হয়। এবং দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে তরুণদের আটক করছে। গত ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকে কাশ্মীর অঞ্চলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যদিও ভারত সরকার তার একদিন আগে থেকেই হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করে পুরো কাশ্মীর নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে রেখেছে। তারপরও মাঝেমধ্যেই স্থানীয়রা ভিড় করে বিক্ষোভ করছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর দিকে পাথর নিক্ষেপ করছে। নগরীর সেসব স্থানে গত কয়েকদিনে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ওই সব স্থানে সোমবার রাতে অভিযান চালানো হয় বলে জানান নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা। স্থানীয় সরকার থেকেও বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নতুন করে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার ফলে ভারতের সব অঞ্চলের অধিবাসীরাই এখন সেখানে সম্পত্তি কিনতে পারবে এবং সরকারি চাকরির জন্যও প্রতিযোগিতায় নামতে পারবে। এতে বহিরাগতদের ঢল বাড়ার আশঙ্কায় আছে কাশ্মীরিরা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাশ্মীর সিদ্ধান্তের বিরোধিতার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে শ্রীনগরের সৌরা এলাকা। সেখানে অধিবাসীদের অধিকাংশই নরেন্দ্র মোদীকে ‘জালিম’ বা ‘দেশদ্রোহী’ আখ্যা দিয়েছে। এলাকাটির এক অধিবাসীর কথায়, “আমাদের কোনো কণ্ঠ নেই। আমাদের ভেতরে ভেতরে বিস্ফোরণ ঘটছে।” গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে আছেন বলে জানান তিনি। তার উক্তি, “বিশ্বও যদি আমাদের কথা না শোনে তাহলে আমরা কি করব, বন্দুক হাতে তুলে নেব?” কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত সরকারের ধরপাকড় এবং কড়াকড়ির মধ্যে কাশ্মীর অঞ্চলে খুবই সীমিত আাকারে কয়েক ডজন মানুষের ছোট ছোট বিক্ষোভ হচ্ছে বলে সোমবার জানিয়েছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ। বাবা-মায়েরা সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকায় বাচ্চাদেরকে মঙ্গলবারও স্কুলে পাঠায়নি। রয়টার্সের সাংবাদিকরা শ্রীনগরের তিনটি স্কুলে পরিদর্শন করে কোনো ছাত্রছাত্রীকে দেখতে পাননি। শিক্ষকরা ডিউটিতে আসলেও ক্লাসরুম ফাঁকা দেখে ফিরে গেছে বলে জানিয়েছেন স্কুলের কর্মকর্তারা। কর্তৃপক্ষ সোমবারেই সব স্কুল খোলা এবং বাস সার্ভিস চালুর নির্দেশ দিলেও এখনো সেখানে বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি। বিস্ফোরণোন্মুখ পরিস্থিতিতে কেউই ঝুঁকি নিয়ে কাজে বেরোনোর সাহস করছে না বলে জানিয়েছেন এক বাস চালক। এনডিটিভি, রয়টার্স।



 

Show all comments
  • Majumder Nazrul ২২ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৪৫ এএম says : 0
    মায়ানমারের নিকৃষ্ট হায়েনার চাইতে অধম বৌদ্ধ প্রানীগুলুর সাথে ভারতীয় গোসন্তানগুলোর পার্থক্য কোথায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Descent Person ২২ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৪৮ এএম says : 0
    মুসলিমদের উচিত প্রতি ওয়াক্ত নামাযের পর আল্লাহর কাছে কাশ্মীর, ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইয়েমেন বাংলাদেশসহ সকল মুসলিমদের মুক্তির জন্য দোয়া করা। কারো না কারো দোয়া মহান আল্লাহ ঠিকই কবুল করবেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Enayet Ali ২২ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৪৮ এএম says : 0
    আজ কাশ্মীর গরীব দুঃখী টাকায় যে অস্ত্র কেনা সেই অস্ত্র ব্যবহার করছে তাদের বুকে। হে আল্লাহ্ তুমি সকল কাশ্মীরিদের রক্ষা করো। ( আমিন)
    Total Reply(0) Reply
  • AAbdul Hhamid ২২ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৪৮ এএম says : 0
    কোন কিছুই এমনি এমনি অাসে না অার সাধীনতা সেটাতো অামরা জানি অামাদের ৩০লক্ষ শহীদের বিনিময়ে পেয়েছি দোয়া রইলো কাশ্মীরি ভাই বোনের জন্য আল্লাহ তোমাদের দয়া করুক এই মূর্তীপূজারীদের থেকে রক্ষা করুক বিশ্বাসঘাতকদের থেকে ইনশাআল্লাহ তোমরা জয়ী হবা এখন তোমাদের একটা মুজিব দরকার পাবে ইনশাআল্লাহ
    Total Reply(0) Reply
  • Rafiqul Alam ২২ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৪৯ এএম says : 0
    কাশ্মীরে যা ঘটছে তা সম্পূর্ণ অমানবিক ও অগণতান্ত্রিক। এখন আর বুঝতে বাকি নেই যে কাশ্মীরি জনগণ জাতিগত নৃশংসতার শিকার। দিল্লি নিজেদের যতই গণতান্ত্রিক ও সেক্যুলার বলুন না কেন, কাশ্মীরেই তাদের আসল রূপ প্রকাশ পাচ্ছে। একটি কারাগারেও অন্তত থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে, কিন্তু এখানে দেখছি তাও কেড়ে নিয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Shamsher Islam ২২ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৫০ এএম says : 0
    আপনারা মজলুম আল্লাহ আপনাদের পাশে আছে। আল্লাহ আপনাদের কে হানাদারদের বিরুদ্ধে শক্ত হস্তে ধংস করার তৌফিক দান করুক। আপনারা ঝাপিয়ে পড়ুন। শহীদি মর্যাদা লাভ করুন
    Total Reply(0) Reply
  • Jakir Al Faruki ২২ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৫০ এএম says : 0
    জাতিসংঘ কি করছে? মানবতা যখন ইন্ডিয়ান যবরদখলকারী শক্তির বুটের নিচে। কাশমিরের প্রতিজন সন্তান হারা মায়ের সাথে সংহতি প্রকাশ করছি।
    Total Reply(0) Reply
  • anisul ২৩ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৩৩ পিএম says : 0
    সন্ত্রাসবাদ দমন করার প্রশ্নে পাকিস্তানের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ এশিয়া প্যাসিফিক গ্র‌ুপ। সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার কারণে পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত চূডান্ত করল ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সে শাখা সংগঠন এশিয়া প্যাসিফিক গ্র‌ুপে। পাকিস্তান কালো তালিকায় ঢোকার ফলে এর ওপর আন্তর্জাতিক সংগঠনের নানা বিধিনিষেধ জারি হবে। আগেই ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স ধূসর তালিকায় রাখে পাকিস্তানকে। এর পরের ধাপই হল কালো তালিকা। এশিয়া প্যাসিফিক গ্র‌ুপের ১১টি প্যারামিটারের মধ্যে ১০টিতেই ব্যর্থ হয়েছে ইমরান খানের দেশ। ক্যানবেরায় এশিয়া প্যাসিফিক গ্র‍ুপের চলতি বৈঠকে পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করা নিয়ে আলোচনা হয়। শুক্রবারেই এই সংগঠন তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে বলে আগে থেকেই নির্দিষ্ট ছিল। পাকিস্তানের হয়ে কথা বলতে এশিয়া প্যাসিফিক গ্র‌ুপে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পাক স্টেট ব্যাংকের গর্ভনর রেজা বকির। পাকিস্তানের কাজকর্মে যে এই সংগঠন খুশি নয়, তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • alim ২৪ আগস্ট, ২০১৯, ৯:৩৭ পিএম says : 0
    "বিশ্বও যদি আমাদের কথা না শোনে তাহলে আমরা কি করব, বন্দুক হাতে তুলে নেব?" হ্যাঁ বন্দুক তোল আর ইন্ডিয়ান মার।ইন্ডিয়ান রা ভীতু জাতি।
    Total Reply(1) Reply
    • anisul ২৬ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৪২ পিএম says : 4
      হাঁ রে তোর কাছে গুলি কেনার পয়সা আছে তো? :)

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাশ্মীর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ