মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আজাদ কাশ্মীর দখলের স্বপ্ন না দেখার জন্য ভারতকে সতর্ক করেছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর। গতকাল ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পুলওয়ামার মতো মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে ভারত আবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করতে পারে। কিন্তু আমাদের সৈন্যরা সীমান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ভারতের যে কোনো অপতৎপরতা রুখে দিতে আমরা প্রস্তুত।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গফুর আরও বলেন, কারফিউ সরিয়ে নেয়ার পর কাশ্মীরি জনগণ ব্যাপক প্রতিক্রয়া দেখাবে।
জনগণের বিক্ষোভ দমানোর নামে ভারতীয় বাহিনী নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে আজাদ কাশ্মীরে ঢুকে যেতে পারে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। তিনি বলেন, ভারত এটিই চাচ্ছে যে, কাশ্মীর পরিস্থিতির অবনতি হোক, আর তারা এ সুযোগে নিয়ন্ত্রণ রেখা পার হবে।
ভারতের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সেনাবাহিনীর এ মুখপাত্র বলেন, ভারতের আজাদ কাশ্মীর দখলের স্বপ্ন কখনও পূরণ হবে না। দেশবাসীকে আমরা কথা দিচ্ছি, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জনগণকে হতাশ করবে না। ৯/১১-এর পর থেকে কাশ্মীরিদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে ভারত জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করছে বলেও অভিযোগ করেন জেনারেল আসিফ গফুর।
লাদাখে একদিকে উৎসব, অন্যদিকে ক্ষোভ
ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে দুভাগ করে দুটি পৃথক কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল করা হয়েছে বেশ কয়েকদিন আগে। তা নিয়ে কাশ্মীরের মানুষদের মধ্যে যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে অনেক প্রতিবেদনই গত কয়েকদিনে বিবিসিসহ নানা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু যে লাদাখ অঞ্চলকে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য থেকে পৃথক করে দেয়া হল, সেখানকার মানুষ কী বলছেন? কী প্রতিক্রিয়া সেখানকার মানুষের? সেটা জানতে বিবিসি গিয়েছিল লাদাখে।
কাশ্মীর উপত্যকা, জম্মু আর লাদাখ - এই তিনটি অঞ্চল নিয়েই ছিল জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য। এর মধ্যে জম্মু এবং কাশ্মীর উপত্যকাকে নিয়ে একটি আর লাদাখকে আলাদা করে দিয়ে আরও একটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল তৈরি করেছে ভারত সরকার। লাদাখের একটা অংশ - লেহ্-তে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বৌদ্ধ। আর ১৯৯৯ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের জন্য সুপরিচিত কার্গিল জেলার বেশিরভাগ মানুষই মুসলমান। বৌদ্ধ অধ্যুষিত লেহ্-র মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই জম্মু কাশ্মীর রাজ্য থেকে আলাদা হতে চাইছিলেন। তাই যখন ভারতের পার্লামেন্ট তাদের সেই দীর্ঘদিনের দাবি মেনে নেয়, তারপর থেকে সেখানে চলছে উৎসব। চিরাচরিত পোশাকে সেজে মানুষ সেখানে নাচ করছেন।
লেহ্-র বাজারে যখন নাচ হচ্ছে, তখনই পাশের জেলা কার্গিলের মূল বাজারে হাজির নজিরবিহীন সংখ্যায় নিরাপত্তার বাহিনীর সদস্যরা। একটু প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখলেই আটক করা হচ্ছে। কয়েকজনকে বিবিসি সংবাদদাতাদের সামনেই আটক করল পুলিশ।
ওখানকারই এক ব্যবসায়ী শাহনাজ ভার বলছিলেন, ‘এর আগে কার্গিল বাজারে একসঙ্গে এত কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী আর জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের উপস্থিতি দেখিনি আমি। মানুষের মনে ক্ষোভ রয়েছে। শিক্ষিত যুবক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ বলছেন যে কারো সঙ্গে কথা না বলে কেন এরকম একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হল!’
শহর থেকে দূরে, পাকিস্তানি সীমানার থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরের শেষ ভারতীয় গ্রাম লাতু-র বাসিন্দা আসগর আলি। তার ক্রিকেট প্রেম সর্বজনবিদিত। তাই তাকে ক্রিকেট চাচা বলে ডাকে সকলে। তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল যখন তিনি গ্রামের মাঠে ব্যাটিং করছিলেন। দেখে মনে হচ্ছিল তিনি যেভাবে বলগুলোকে মেরে বাউন্ডারির বাইরে পাঠাচ্ছিলেন, সেটা যেন কোনও একটা রাগের বহিঃপ্রকাশ!
পরে বলছিলেন, ‘বছর কুড়ি আগে যুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল ৪৫। সৈনিকরা আহত হয়ে পড়ে থাকত। আর আমি গিয়ে তাদের উদ্ধার করে আনতাম। গ্রামের অনেকেই আহত সৈনিকদের উদ্ধার করে নিয়ে আসতেন। তারপরে সৈনিকদের পৌঁছে দিতাম তাদের ছাউনিতে। সবরকমভাবে বাহিনীকে সাহায্য করছিলাম। কিন্তু সেই কার্গিলের বাসিন্দাদের সঙ্গে সুবিচার করা হল না এটা।’
কার্গিলের সিনিয়ার সাংবাদিক সাজ্জাদ কার্গিলী বলছিলেন, ‘লাদাখ অঞ্চল আবহমানকাল থেকেই সরাসরি কাশ্মীরের সঙ্গেই যুক্ত জোজিলা পাসের মাধ্যমে। বরফ যতক্ষণ না পড়ছে, ততক্ষণ কাশ্মীরের সঙ্গেই আমাদের মূল যোগাযোগ। যে কোনো প্রয়োজনে, তা খাবার মজুদ করা হোক বা অন্য কোনও দরকার, আমরা কাশ্মীরেই যাই।’
কিন্তু সরকারের সিদ্ধান্তে এখন কাশ্মীরকে লাদাখের থেকে পৃথক হয়ে যেতে হল। সূত্র : বিবিসি ও জিয়ো নিউজ উর্দু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।