নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশেষায়িত জার্সি থেকে শুরু করে দর্শক প্রতিক্রিয়া কিংবা মাঠ ছাড়ার ধরন, সব কিছুতেই মিশে থাকল বিদায়ের বার্তা। অন্তত, দেশের মাটিতে শেষ ওয়ানডে ম্যাচ? কিন্তু তেমন কোনো ঘোষণাই এল না। বরং ম্যাচ শেষে ক্রিস গেইল জানিয়ে দিলেন, অবসরের সিদ্ধান্ত নেননি। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচটির শুরু থেকেই চলছিল গেইলের বিদায়ের গুঞ্জন। এমনিতে তার জার্সি নম্বর ৪৫। এ দিন খেললেন ৩০১ নম্বর জার্সি গায়ে, যেটি এই দিন পর্যন্ত তার ওয়ানডে ম্যাচের সংখ্যা। ধারণা করা হলো, ৩০১ ওয়ানডে খেলেই তাহলে থামছেন!
ক্যারিবিয়ানদের হয়ে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে খেলার রেকর্ড গড়েছেন এই সিরিজেই। রানের রেকর্ডেও ব্রায়ান লারাকে ছাড়িয়ে গেছেন এই সিরিজে। সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি, বেশি ছক্কা, সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড তার ছিল আগে থেকেই। সবকিছু মিলিয়েই সামনে তার আর পাওয়ার আছে সামান্যই। ৪০ ছুঁইছুঁই ব্যাটসম্যান চার বছর পরের বিশ্বকাপ পর্যন্ত থাকছেন না নিশ্চিতভাবেই।
ব্যাটিংয়ের ধরনেও মনে হলো, রাঙিয়ে যেতে চান শেষটা। একটু ধীরস্থির শুরুর পর ঝড় তুললেন। বোলারদের আছড়ে ফেললেন মাঠের নানা প্রান্তে। সিরিজে আগের দুই ম্যাচ মিলিয়ে ১১ রান করতে খেলেছিলেন ৫৫ বল। এই ম্যাচে ৮ চার ও ৫ ছক্কায় ৪১ বলে ৭২। এটি যদি তার শেষ ইনিংস হয় তবে শেষটাও থাকল তার মতই দাপুটে। আউট হয়ে যখন ফিরছেন, ভারতীয় ক্রিকেটাররা গিয়ে অভিনন্দন জানালেন তাকে। করমর্দন করলেন সবাই। বিরাট কোহলি গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন। ড্রেসিং রুমে ফেরার সময় দর্শকেরা সবাই দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানাল। গেইল ব্যাট তুলে, ব্যাটের মাথায় হেলমেট রেখে উঁচিয়ে ধরে জবাব দিলেন অভিনন্দনের। ধারণা এবার আরও পোক্ত হলো। এটিই তাহলে শেষ! যদিও ত্রিনিদাদের পোর্ট অব স্পেনে আগে ব্যাট করে বৃষ্টির কারণে ৩৫ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ২৪০ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওই রান তাড়ায় ৯৯ বলে অপরাজিত ১১৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে ৬ উইকেটের জয় পাইয়ে দেন কোহলি।
কিন্তু সব গুঞ্জনের সমাপ্তি ম্যাচ শেষে। আলোচনার ঝড় দেখেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের টুইটার পাতায় ছোট্ট একটি ভিডিও পোস্ট করা হলো। হাসিমুখে গেইল জানিয়ে দিলেন, ‘পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত’ তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলে যাবেন। উইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডারও বললেন, ‘আমার জানা মতে, সে এখনও অবসর নেয়নি। কিন্তু তার ক্যারিয়ারের দৃষ্টান্ত তৈরি করা দিন ছিল আজ (পরশু রাতে)। তার ইনিংস ছিল অসাধারণ। আমাদের দারুণ শুরু এনে দিয়েছিল সে। গত কয়েক বছর ধরে লোকেরা যেমনটা প্রত্যাশা করেছিল, তেমন গেইলকে দেখা গেছে।’
এবার ইঙ্গিত দিয়ে বিদায় নিলেন না। এর আগে ঘোষণা দিয়েও বিদায় নেননি। গত বিশ্বকাপের আগে বলেছিলেন, নিশ্চিতভাবেই এই বিশ্বকাপ দিয়েই ইতি টানবেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের। কিন্তু বিশ্বকাপের শেষ দিকে জানান, সরে এসেছেন সেই ঘোষণা থেকে। চালিয়ে যেতে চান খেলা। অধিনায়ক জেসন হোল্ডার পর্যন্ত চমকে গিয়েছিলেন শুনে, গেইলের সিদ্ধান্ত জানা ছিল না তার। তবে ভারতের বিপক্ষে বিধ্বংসী ইনিংসটায় অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য তার আছে। কিন্তু কতদিন, সেটিই এখন দেখার।
গেইল অবসর নিলে শেষ হবে একটি কালেরও। ২০০০ সালের আগে অভিষিক্ত ক্রিকেটারদের মধ্যে কেবল তিনিই যে এখনো চালিয়ে যাচ্ছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে ওয়ানডেতে অভিষিক্ত গেইল শেষ করলেন একেবারে চূড়ায়। কিংবদন্তি ব্রায়ান লারাকে ছাপিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ওয়ানডেতে সর্বাধিক ১০৪৮০ রান (লারার ১০৪০৫) তার। ২০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ার জুড়ে বিস্ফোরক ব্যাটিং দিয়ে বিনোদনের অপর নাম ছিলেন গেইল। ব্যাটে দুর্দান্ত ঝড় তোলার সঙ্গে মাঠে তার উপস্থিতি দিত ভিন্ন আমেজ। আমুদে গেইল খেলাটাকে উপভোগ করতেন, নাচতেন, বিনোদন দিতেন যেকোনো পরিস্থিতিতে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।