নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দেশের ফুটবল নিয়ে শহীদ শেখ কামালের স্বপ্ন ছিল আকাশ ছোঁয়া। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র হিসেবে নয়, একজন প্রকৃত ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেই বাংলাদেশের খেলাধুলাকে এগিয়ে নেয়ার নিরলস প্রচেষ্টা ছিল শেখ কামালের। তিনি ছিলেন লাল-সবুজ ক্রীড়াঙ্গনের প্রাণপুরুষ। নিজ উদ্যোগে গড়ে তোলেন আবাহনী ক্রীড়া চক্রের মতো স্বনামধন্য ক্লাব। যে ক্লাব পরবর্তীতে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে ধারাবাহিকভাবে রেখে যাচ্ছে অনন্য অবদান। আবাহনীকে নিয়ে যেমন ঠিক তেমনি দেশের খেলাধুলা, বিশেষ করে ফুটবল নিয়ে শেখ কামালের স্বপ্ন ছিল একদিন ফুটবলে এশিয়ার শক্তিশালী দল হবে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার ১৫ আগস্ট ছিল জাতীয় শোক দিবস। এই দিনটি বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কময় একটি দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে বাংলাদেশ হারিয়েছে জাতির পিতা, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ওই দিন ঘাতকরা নির্মমভাবে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী এবং তিন পুত্রসহ পরিবারের আরো ১৮ সদস্যকে। বঙ্গবন্ধু পরিবারের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকীতে জাতি গভীরভাবে স্মরণ করেছে বঙ্গবন্ধুসহ সেই দিনের সব শহীদকে। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামাল ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বন্ধুবৎসল। সালাউদ্দিনকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করতেন তিনি। শেখ কামালকে ঘিরে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে বাফুফে সভাপতির। শুধু কামালই নয়, বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গেও মধুর সম্পর্ক ছিল কাজী সালাউদ্দিনের। তাই তো বৃহস্পতিবার জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধু এবং শেখ কামালকে স্মরণ করে অনেক কথাই বললেন বাংলাদেশ ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তী, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য এবং বাফুফে’র তিনবারের সভাপতি কাজী মো: সালাউদ্দিন। এদিন দুপুরে মতিঝিলস্থ বাফুফে ভবনে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে গরীব ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণের পর সালাউদ্দিন মিডিয়াকে বলেন, ‘প্রথমেই আমি বলবো বঙ্গবন্ধুর কথা। এই দিনে জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছে। আজকের এই দিনটা বাঙালি জাতি এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে কালো দিন। আমি মনে করি, পৃথিবী যতো দিন থাকবে বাঙালি এবং বাংলাদেশের মানুষের জন্য এরচেয়ে বড় কালো দিন আর আসবে না। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা যে, এই দিনটা আমাদের জীবনে এসেছে। আমাদের যে কতটা ক্ষতি হয়েছে তা বর্ণনা করে বোঝানো যাবে না।’
দেশের খেলাধুলার প্রাণপুরুষ শহীদ শেখ কামালকে স্মরণ করে সালাউদ্দিন বলেন, ‘শেখ কামালের সঙ্গে আমার শেষ কথা হয় ১৯৭৫ সালের ৮ আগস্ট, বিমানের মধ্যে। আমরা তখন মালয়েশিয়া যাচ্ছিলাম মারদেকা কাপ টুর্নামেন্ট খেলতে। দলের ম্যানেজার হয়ে শেখ কামালেরও আমাদের সঙ্গে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একটা রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের কারণে তার যাওয়া হয়নি। আমরা রওয়ানা হওয়ার সময় শেখ কামাল আমাকে একটা কথাই বলেছিল, ‘তুই এবার যা। ক্যাপ্টেইন হয়ে যাচ্ছিস, যতদিন ভবিষ্যতে খেলবি আমি ম্যানেজার থাকবো আর তুই ক্যাপ্টেনই থাকবি। আমাদের চোখ এশিয়ায়। আমরা এশিয়াতে বাংলাদেশকে পাওয়ারফুল ফুটবল দল হিসেবে গড়ে তুলবো।’ কথাগুলো ৪৪ বছর পরও মনে পড়ে। মনে হয় কালকেই যেন আলাপ হয়েছে।’
শেখ কামালকে হারানো বাংলাদেশ ক্রীড়াঙ্গনের জন্য বিশাল ক্ষতি বলে উল্লেখ করেন কাজী সালাউদ্দিন। তার কথায়,‘কামালকে হারিয়ে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের বিরাট ক্ষতি হয়েছে। এখনো প্রাইম মিনিস্টার বলেন, মিনিস্টার বলেন আমাদের সাপোর্ট দেন। কিন্তু কামাল সবকিছু দেখতেন গভীরভাবে। তিনি আমাদের সব কিছু বুঝতেন। আমাদের প্রচুর সময়ও দিতেন। সব কিছু জানতেন বলে কোনো সমস্যা হলে দ্রæত সমাধানও দিতে পারতেন। এখন এটা তো সম্ভব নয় যে, রোজ রোজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়া এবং গিয়ে সবকিছু বলা। কামাল ছিলেন প্র্যাকটিক্যাল। উনার বয়স যখন ২৩/২৪ বছর, তখন আবাহনীর মতো একটা ক্লাব গড়ে তুলেছেন। আবাহনী এখন বাংলাদেশের খেলাধুলায় একটা ইনস্টিটিউট। সুতরাং বোঝা যায় কামালের ভিশনটা কোথায় ছিল।’
সালাউদ্দিন আরো বলেন, ‘আমি বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর কামালকে খুব বেশি মিস করছি। সে থাকলে আমাদের অনেক সমস্যা হয়তো একদিনে সমাধান হয়ে যেতো। এখনো সমাধান হয়; কিন্তু কামালতো প্র্যাকটিক্যাল মানুষ ছিলেন। এখন যেটা সমাধান হতে লম্বা সময় লাগে, কামাল থাকলে তা এক/দুই দিনেই হয়ে যেতো।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।