মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভোটে বিপর্যয়ের পর দিশা হারাতে বসা ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস গান্ধী পরিবারের বাইরে নতুন কাউকে কাণ্ডারি হিসেবে খুঁজে নিতে পারল না, সভাপতি পদে ‘আপাতত’ ফিরতে হল সোনিয়া গান্ধীকেই।
এনডিটিভি জানিয়েছে, নয়া দিল্লিতে শনিবার কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির দীর্ঘ বৈঠক শেষে ‘অন্তর্বতীকালীন’ সভাপতি হিসেবে সোনিয়া গান্ধীর নাম ঘোষণা করা হয়।
কংগ্রেস নেতা গুলাম নবী আজাদ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান, নতুন একজন স্থায়ী সভাপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত সোনিয়া গান্ধীই ভারতের শতাব্দী প্রাচীন এ রাজনৈতিক দলের সভাপতির কাজ চালিয়ে নেবেন।
প্রায় দুই দশক ভারতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্ব দিয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ছেলে রাহুল গান্ধীর কাঁধে দলের নেতৃত্ব ছেড়ে সভাপতির পদ ছেড়েছিলেন গান্ধী পরিবারের পুত্রবধূ সোনিয়া।
কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির দায় কাঁধে নিয়ে রাহুল গান্ধী সভাপতির পদ ছেড়ে দেওয়ায় দেড় বছরের মাথায় আবার হাল ধরতে হচ্ছে সোনিয়াকে।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে মাত্র ৫২টি আসনে জয় পায় কংগ্রেস। অন্যদিকে ৩০৩ আসনের জয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতের ক্ষমতায় আসে নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপি।
রাহুলের পদত্যাগের পর আড়াই মাস ধরে দলের ছোট-বড় নেতারা তার মত বদলের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। রাহুলের বোন প্রিয়াঙ্কাও ‘না’ বলে দেন। মা সোনিয়া গান্ধীও সে সময় নেতৃত্বে ফিরতে রাজি ছিলেন না।
এ অবস্থায় তৃতীয়বারের মত নেহেরু-গান্ধী পরিবারের বাইরের কারো হাতে কংগ্রেসের নেতৃত্ব যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সুশীল কুমার সিন্ধে, মুকুল ওয়াসনিক আর মল্লিকার্জুন খারগের নাম বেশ জোরের সাথেই শোনা যাচ্ছিল।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, মুকুল ওয়াসনিককে সভাপতি করার বিষয়টি মোটামুটি ঠিকই করে ফেলেছিলেন কংগ্রেস নেতাদের একটি অংশ। কিন্তু শনিবার রাহুলই তাতে আপত্তি তোলেন।
ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে আবারও রাহুলকে সভাপতি পদে থেকে যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু রাহুল সিদ্ধান্তে অটল থাকলে আলোচনার জন্য অঞ্চলভিত্তিক নেতাদের নিয়ে পাঁচটি কমিটি করা হয়।
সেই আলোচনার প্রক্রিয়া শুরুর আগেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান সোনিয়া ও রাহুল। অঞ্চলভিত্তিক পাঁচ কমিটির মতামত নিয়ে রাতে আবার ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসলে দেখা যায়, অধিকাংশ নেতা রাহুলকেই সভাপতি পদে চান।
আনন্দবাজার লিখেছে, “রাহুল কিছুতেই রাজি হননি। সভাপতি বাছাই নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন তিনি বৈঠকে ছিলেনও না। মাঝে এক ঘণ্টার জন্য আসেন কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে। এই অবস্থায় সোনিয়ার দ্বারস্থ হন কংগ্রেস নেতারা।
“তারা বলেন, গান্ধী পরিবারের বাইরে কেউ সভাপতি হলে দল ভেঙে যাবে। ফলে সোনিয়া বিনা গতি নেই। দীর্ঘ অনুরোধ-উপরোধের পরে নরম হন সনিয়া। তবে জানিয়ে দেন, এই ব্যবস্থা নেহাতই অস্থায়ী। যত শীঘ্র সম্ভব নতুন সভাপতি বাছতে হবে।”
কখনও সরকারের কোনো পদ না নিলেও ৭২ বছর বয়সী সোনিয়াকে ভারতের সবচেয়ে ক্ষমতাবান নারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার নেতৃত্বেই কংগ্রেস ২০০৪ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় যায়। কিন্তু নিজে প্রধানমন্ত্রী না হয়ে মনমোহন সিংকে দেশ চালানোর দায়িত্বে পাঠান সোনিয়া।
ইতালীয় বংশোদ্ভূত সোনিয়ার স্বামী রাজীব গান্ধী ১৯৯১ সালে এক নির্বাচনী প্রচারাভিযানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হন। রাজীবের মা ইন্দিরা গান্ধীও ১৯৮৪ সালে দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হন। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর গান্ধী পরিবারের সদস্যরাই বেশিরভাগ সময় দেশটির শাসন ক্ষমতায় ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।