২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয় গ্রন্থি থেকে ইনসুলিন হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন খাদ্যের গøুকোজ ভেঙ্গে শক্তির জোগান দেয়। কিন্তু কোনও কারণে যদি প্যানক্রিয়াস থেকে পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি না হয়, তাহলে খাদ্যের গøুকোজ রক্তেই বাড়তে তাকবে। দেখা দেবে ডায়াবেটিস। এই অসুখে ছাড় নেই শিশুদেরও।
শিশুরা সাধারণত টাইপ-১ ডায়াবেটিসের শিকার হয়। এক্ষেত্রেও প্যানক্রিয়াসের যে বিটাকোষ থেকে ইনসুলিন তৈরি হয় সেগুলোকেই নষ্ট করে ফেলে শরীরের অ্যান্টিবডি। এই ধরনের ডায়াবেটিস শনাক্ত করা কঠিন নয়। তা সত্তে¡ও টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগ কিন্তু সহজেই ধরা যায় না। এ ছাড়া, বর্তমানে শিশুদের মধ্যে এর প্রকোপ বাড়ছে। ইনসুলিন তৈরিতে সমস্যা তো থাকেই, সেই সঙ্গে শরীরেও কোনও কারণে একটা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়। আর সেই কারণেই সমস্যাটা জটিল হয়ে পড়ে।
টাইপ-১- ডায়াবেটিস মেলিটাস সব চেয়ে বেশি হয় ৫ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। তবে এই অসুখটি আরও কম বা বেশি বয়সে হতে পারে। এক্ষেত্রে ইনসুলিনই একমাত্র চিকিৎসা। এই অসুখের ক্ষেত্রে সাধরণত ওজন কমে যায়। অতিরিক্ত পানি তেষ্টা পাওয়া, জ্বর বা কোনও শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে সাঙ্গাতিক অবস্থার সৃষ্টি হয়। এই অসুখ হলে সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
টাইপ-২ ডায়াবেটিস মেলিটাস আগে বয়স্কদের মধ্যে দেখা যেত। বর্তমানে জীবনযাপনের পরিবর্তনের ফলে এটা অনেক কম বয়সেই দেখা যাচ্ছে। এটি খুব চিন্তার বিষয় এবং এর কারণ হতে পারে প্রধানত শারীরিক পরিশ্রম না-করা, ফাস্ট ফুড খাওয়া, অতিরিক্ত মোটা হওয়া।
এ ছাড়াও জেনেটিক বা বংশগত কারণে, সেকেন্ডারি ডায়াবেটিস বাচ্চাদের মধ্যে দেখা যায়।
করণীয়ঃ-
টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে চিকিৎসা ইনসুলিন। সব চেয়ে জরুরি ইনসুলিনের মাপ এবং কতবার তা শিশুকে দিতে হবে। এ ছাড়া নির্ভর করে আক্রান্ত শিশুদের জীবনযাত্রা।
প্রয়োজনীয় খাদ্যাভ্যাস: টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাাস নির্ভর করে শিশুদের বয়স, শারীরিক প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী ক্যালোরি নির্ভর করে। তবে এসব ক্ষেত্রে শর্করা জাতীয় খাদ্য একদম কমিয়ে আনা উচিত। ডায়াবেিিটস নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে লাইফস্টাইল বা জীবনযাত্রার পরিবর্তন প্রয়োজন। এর কোনও বিকল্প নেই।
টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে লাইফস্টাইল ইন্টারভেশন এবং ক্যালারি কমানো। টাইফ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত বেশির ভাগ শিশুর ওজনই যেহেতু স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হয়, সেহেতু ডায়েটিং বা শরীরচর্চা করে এদের অন্তত দশ শতাংশ ওজন কমানো প্রয়োজন। বাড়িতে নিয়মিত রক্তের গøুকোজ পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে। বাবা-মায়ের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। ডায়াবেটিস আক্রান্ত শিশুদের সুবিধা-অসুবিধার দিকে লক্ষ রাখা প্রয়োজন। শিশু শারীরিক বা মানসিক দিক থেকে কতটা পরিণত সেদিকে লক্ষ রেখে তাদের অসুখের বিষয়ে জানিয়ে রাখতে হবে। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ডায়াবেটিসের শিকার এমন শিশুদের দশ বছর বয়স হলে বছরে অন্তত একবার কিডনি পরীক্ষা করতে হবে। সেই সঙ্গে ইউরিনে মাইক্রোঅ্যালবুমিন কতটা বেড়েছে তাও পরীক্ষা করা প্রয়োজন। ৩ থেকে ৫ বছর বয়স হলেই চোখ পরীক্ষা প্রয়োজন।
প্রয়োজনীয় খাদ্যাভ্যাস- এসব ক্ষেত্রে কম চর্বিযুক্ত খাবার খেতে বলা হয়। যেহেতু এইসব শিশুদের ওজন বেশি হয় এজন্য বেশী ক্যালোরি জাতীয় খাবার কম খাওয়া উচিৎ। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, মায়ের দুধ খেলে শিশুদের মধ্যে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা কমে।
সাংবাদিক-কলামিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।