Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্ব বিচ্ছিন্ন জম্মু ও কাশ্মীর

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দিত সংবিধানের যে ৩৭০ অনুচ্ছেদ, তা বিলোপের একদিন পরেও ওই এলাকা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। রাজ্যের টেলিফোন, মোবাইল এবং ইন্টারনেটের সংযোগ রোববার সন্ধ্যায়ই বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয় এবং সেগুলো এখনও ঠিক করা হয়নি। কাশ্মীরের রাস্তায় হাজার হাজার সেনা টহল দিচ্ছে। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সরিয়ে নেয়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু এমন ঘোষণায় সেখানকার মানুষ কী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে, সেবিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। স্থানীয় নেতাদের এরই মধ্যে আটক করা হয়েছে। ভারত শাসিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের বিবিসি সংবাদদাতা আমির পীরজাদা সোমবার দিল্লির প্রতিনিধির সাথে কথা বলতে সক্ষম হন। তিনি বলেন, ‘রাজ্যের অন্যান্য অংশে কী হচ্ছে তা কেউ জানে না। আমরা কারো সাথে কথাও বলতে পারছি না। মানুষ ভীষণ চিন্তিত। তারাও জানে না আসলে এখন কী হচ্ছে এবং কী হতে যাচ্ছে।’ ভারতের অন্যান্য স্থানে থাকা কাশ্মীরিরা তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না এবং সেবিষয়ে তাদের শঙ্কার বিষয়ে জানিয়েছেন। দিল্লিতে থাকা এক ছাত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকাকে জানিয়েছেন যে তিনি স্থানীয় পুলিশের সাথেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন - কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। অনেক কাশ্মীরি মনে করেন, সংবিধানের যে ৩৭০ অনুচ্ছেদ কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দিত, সেটিই ছিল রাজ্যটির ভারতের অংশ থাকার পেছনে প্রধান যুক্তি। আর ওই অনুচ্ছেদ বিলোপের মাধ্যমে দিল্লির সাথে কাশ্মীর অঞ্চলের সম্পর্কের যে ক্ষতি হয়েছে, তা অপরিবর্তনীয়। অনুচ্ছেদ ৩৭০ কাশ্মীর রাজ্যকে বিশেষ ধরণের স্বায়ত্তশাসন ভোগ করার সুযোগ দিত যার ফলে তারা নিজস্ব সংবিধান, আলাদা পতাকা এবং আইন প্রণয়নের অধিকার রাখতো। যদিও পররাষ্ট্র বিষয়ক সিদ্ধান্ত, প্রতিরক্ষা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল কেন্দ্রীয়স সরকারের হাতে। যার ফলে, জম্মু ও কাশ্মীর নাগরিকত্ব, সম্পদের মালিকানা এবং মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত আইন নিজেরা তৈরি করার ক্ষমতা রাখতো। ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মানুষকে জম্মু ও কাশ্মীরে জমি কেনা এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করা থেকেও বিরত রাখতে পারতো ওই অনুচ্ছেদের বদৌলতে। ভারত এবং পাকিস্তান দুই দেশই সম্পূর্ণ কাশ্মীরের অধিকার দাবি করলেও দুই দেশই রাজ্যটির কিছু নির্দিষ্ট অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ভারত শাসিত কাশ্মীরে অনেকদিন ধরেই বিদ্রোহ হয়ে আসছে যার ফলে এখন পর্যন্ত বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। ভারতের সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অনুচ্ছেদ ৩৭০ এর বিলোপের ঘোষণা দেয়ার কয়েকদিন আগে থেকেই কাশ্মীর উপত্যকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ওই অঞ্চলে থাকা বিবিসি সংবাদদাতা জানান, স্থানীয়রা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে কয়েকমাসের খাবার মজুদ করে রাখেন। সব ধরণের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে ধারণা করে পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য স্যাটেলাইট ফোন বরাদ্দ করা হয়। রোববার রাতে দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রীকে গৃহবন্দী করার সময়ই সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ