বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঈদুল আজহা বা কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে কুমিল্লায় জমতে শুরু করেছে পশুর হাট। তবে পশু বেচাকেনা সেভাবে জমে উঠেনি। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার বড় হাটের মধ্যে নগরীর চকবাজারে স্থানীয় খামারীসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে বেপারীদের অনেকেই উন্নত জাতের গরু নিয়ে আসছেন।
জেলার অন্যান্য পশুহাটেও গরু, ছাগল উঠেছে। কোন কোন হাটে খুঁটি বসানো, মাটি ফেলাসহ সামিয়ানা টানানোর কাজ চলছে। এবারে স্থানীয় খামারী ও কৃষকদের লালনপালন করা তিন লক্ষাধিক গরু, ছাগলে পশুর হাটগুলো জমিয়ে তুলতে প্রস্তুতির পাশাপাশি গরুর দাম বেশি থাকবে বলে জানিয়েছেন হাট ইজারাদার সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল শনিবার দুপুরে নগরীর চকবাজার হাটে গিয়ে দেখা যায়, বড় ও উন্নতজাতের গরু খুঁটি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সকালে চকবাজার হাটে কুমিল্লা সদরের আড়াইওড়া গ্রামের হাজী আসলাম মিয়া খামারের দেশিয় প্রক্রিয়ায় মোটাতাজা করা ৪০টি গরু তুলেছেন মালিক জহির মিয়া। খামারের কেয়ারটেকার বিল্লাল জানান, প্রতিটি গরু তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকায় বিক্রি করা হবে। দুপুরে গরু কিনতে আসা নগরীর রেইসকোর্সের জাহিদুর রহমান তিন লাখ টাকা দাম হাঁকা একটি গরু দুই লাখ টাকা দর বলেছেন। কিন্তু বিক্রেতা রাজি হননি। চকবাজার হাটে পশু আসতে শুরু করলেও কুরবানিদাতা ক্রেতারা কিন্তু দলবেঁধে আসছেন না। তবে যারা কিনতে আসছেন তারে শুরুতে দাম বেশি বলে জানিয়েছেন। উত্তরাঞ্চলের কুষ্টিয়া জেলা থেকে চকবাজার হাটে সিন্ধি, ফিজিয়ান, শাহীআওয়াল, সুরমা, নেপালীসহ উন্নতজাতের দেশি গরু নিয়ে এসেছেন বেপারী রতন মিয়া। তিনি জানান, হাটে গরু জমতে শুরু করলেও বেচাবিক্রি জমে উঠেনি।
এবারেও কুরবানিতে প্রাধান্য পাবে স্থানীয় খামারে পালিত দেশি জাতের গরু-ছাগল। কুমিল্লায় এবারে চাহিদার চেয়ে প্রায় ৫০ হাজারের বেশি কুরবানির পশু রয়েছে। তবে পশু পরিচর্যা, গো-খাদ্যের দাম বেশি ও শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় দাম গতবারের চেয়ে বেশি থাকবে বলে জানিয়েছেন হাট সংশ্লিষ্ট ইজারাদার ও গরু ব্যবসায়িরা। চকবাজারের ইজারাদার হাজী ওসমান গণি শাহিদ জানান, বেশিরভাগ ক্রেতা হাটে এসে দরদাম হাঁকিয়ে কুরবানির পশুবাজার বোঝার চেষ্টা করছেন। যাদের বাসায় গরু রাখার জায়গা আছে, কেবল তারাই এখন দামে সুবিধা হলে গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। রোববার থেকেই হাটে কুরবানির পশু কেনাবেচা জমে উঠবে বলে মনে করেন তিনি। এদিকে গতবছর কুমিল্লায় চাহিদার চেয়ে কুরবানির পশুর পরিমাণ বেশি ছিল। যে কারণে শেষের দিকে এসে অনেক খামারীকে লোকসান দিয়ে পশু বিক্রি করতে হয়েছে। এরকম বেশকিছু খামারী লোকসানের কারণে এবছর ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। যারা অধিক খরচ করে খামার টিকিয়ে গরু হাটে তুলেছেন বা তুলবেন তারা লাভবান হতে পারবেন কিনা এনিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
কুমিল্লায় কুরবানির বড় পশুহাটগুলোর মধ্যে রয়েছে সদরের চকবাজার, বিবির বাজার, গোলাবাড়ি, কালীরবাজার হাই স্কুল মাঠ, চাঁনপুর গোমতীর বাঁধ, মুন্সিরহাট, বাজগড্ডা ও শিবেরবাজার। সদর দক্ষিণের বাগমারা, সুয়াগঞ্জ বাজার, চাঙ্গিনিবাজার, আশ্রাফপুরের করিম স্কুল ও নেউরা। চৌদ্দগ্রামের মিরশান্নি, চৌদ্দগ্রাম বাজার, একতা বাজার, দেড়কোটা বাজার, মুন্সিরহাট ও চিওড়া বাজার। বরুড়ার ফকির বাজার, বরুড়া বাজার ও চন্ডিমূড়া বাজার। চান্দিনার এতবারপুর, চান্দিনা বাজার, শ্রীমন্তপুর বাজার, মাধাইয়া বাজার, রসুলপুর, মহিচাইল, নবাবপুর ও রামমোহনপুর। বুড়িচংয়ে নিমসার কাবিলা বাজার, ময়নামতিবাজার, কংশনগর, বানাসুয়া, ফকিরবাজার ও শংকুচাইল। ব্রাহ্মণপাড়ায় ব্রাহ্মণপাড়া বাজার, সাহেবাবাদ, শশীদল ও বাগরাবাজার। নাঙ্গলকোটে হেসাখাল বাজার, বাগড্ডা বাজার, নাঙ্গলকোট বাজার ও যুক্তিখোলাবাজার। মনোহরগঞ্জে পুমগাঁও, দৈয়ারা বাজার ও মনোহরগঞ্জ বাজার। মুরাদনগরে রামচন্দ্রপুর বাজার, যাত্রাপুর, গাজীর হাট ও টংকিবাজার। দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ ও গৌরিপুর বাজার। এবারে জেলার হাটগুলোতে ভারতীয় গরুর প্রভাব না পড়ার সম্ভাবনা থাকায় বেশ ফুরফুরে মেজাজেই রয়েছেন জেলার খামারী, বেপারী ও গৃহস্থ পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।