প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
হুটহাট করে যখন কেউ আলোচনায় চলে আসে তখন আমার খুব আফসোস হয়। মনে মনে ভাবি এই মানুষ টাকেই আবার কিছুদিন পরে হুট করে নামিয়ে দেয়া হবে। হুট করে প্রশংসায় ভাসিয়ে যেমন আমরা কাউকে একদম আকাশে তুলে ফেলি ঠিক তেমনি সেই মানুষটাকে একদম মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলতেও আমরা দুইবার ভাবার প্রয়োজন বোধ করি না। এটা যেনো একটা চিরাচরিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
ক’জন ভেবেছিলো যে নোবেল কে নিয়ে এত মাতামাতি হয়েছে, যে নোবেল কে তৃতীয় বানানোর জন্যে সা রে গা মা পা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, মাত্র দুই দিন আগেও যার জনপ্রিয়তা ছিলো আকাশ চুম্বী আজ সেই নোবেলকে নিয়ে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। কেনো? কি কারণ? তার দোষ টা কি?
নোবেলকে নিয়ে যখন সবাই প্রচন্ড মাতামাতি করছে তখন সত্যি বলতে গেলে আমি বেশ বিরক্তই হয়েছি। কোন কিছু নেই অতি বাড়াবাড়ি আমার পছন্দ না। নোবেল ভালো শিল্পী, গায় ভালো এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু তাকে নিয়ে আমরা একটু বেশী বাড়াবাড়িই করেছি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে কিছুদিন আগে যে মানুষ গুলো নোবেল কে নিয়ে বলছিলো “জেমসের ২য় সংস্করণ” হিসেবে। আজ তারাই বলছে জেমসের ধারের কাছেও নোবেল নেই। আরে ভাই নোবেল কি নিজে কোনদিন বলেছে যে সে জেমসের মতো গান গায়? আপনারাই বলেছেন। আবার দিন শেষে আপনারাই সমালোচনা করছেন। আসলে আপনাদের সমস্যা ঠিক কোন জায়গায়?
এবার আসি জেমস প্রসঙ্গ তে।
নোবেল জেমস কে নিয়ে অভিযোগ করেছে জেমসের ম্যানেজার তাকে ফোন দিয়ে জেলে ঢুকানোর হুমকি দিয়েছিলো। কারণ কি? কারণ হচ্ছে “পাগলা হাওয়া” গানটা যেনো সে পারফর্ম না করে। জেমস নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের একজন লিজেন্ড তারকা। নিঃসন্দেহে এরকম নোবেলের তার ধারের কাছেও যাওয়ার মতো যোগ্যতা রাখে না। শিল্পী হিসেবেও তিনি অত্যন্ত উঁচু মানের। এত কিছুর পরেও তবে তিনি ঠিক কি কারণে একজন উঠতি তারকা কে এধরনের কথা বললেন তা আমার বোধগম্য নয়। যদিও তিনি এ কথা বলার অধিকার অবশ্যই রাখেন। কিন্তু সিনিয়র হিসেবে তিনি এ বিষয় টিকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখলেই পারতেন। কোন গানের রিয়েলিটি শো তে তো আর কেউ নিজের লেখা গান কেউ গায় না। কাজেই কেউ যদি রিয়েলিটি শো তে যায় তাহলে তার নিজ দেশের বড় কোন তারকার হিট কোন গান গাইবে এটাই কি স্বাভাবিক না?
আর নোবেল কেনো? এ জায়গায় যদি আপনি নিজে থাকতেন? বুকে হাত রেখে বলুন তো আপনার কি কষ্ট লাগতো না? যে মানুষ টা সর্বদা আপনার স্বপ্নের রাজ্যে ঘোরাফেরা করে সে মানুষ টার কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ দেখলে যে কারোর ই কষ্ট লাগাটাই স্বাভাবিক। নোবেল কে ও ব্যাপার টা কষ্ট দিয়েছে। যার জন্যে সে বলেছে। কিন্তু তার কোন কথায় আমি এমন কিছু দেখিনি যা জেমস কে ছোট করা হয়েছে। সে যথেষ্ট সম্মান নিয়েই কথা গুলো বলেছে।
এবার আসি আমাদের দেশের জাতীয় সংগীত প্রসঙ্গে। জাতীয় সংগীত নিয়ে একটি ইন্টারভিউ তে নোবেল বলেছেন প্রিন্স মাহমুদের লেখা ও জেমসের গাওয়া “আমার সোনার বাংলা” গানটি আমাদের জাতীয় সংগীতের চেয়েও বেশী দেশকে তুলে ধরে। পাশা পাশি সে এটাও বলে আমাদের জাতীয় সংগীত রূপক অর্থে অনেক কিছু বোঝায় কিন্তু জেমসের এই গানটি সহজ সরল ভাবে দেশ কে তুলে ধরে। এখানে জাতীয় সংগীত কে কিভাবে অপমান করা হলো আমার বুঝে আসে না। অথবা তার এ কথার মধ্যে কিভাবে দেশ দ্রোহিতা অথবা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে অপমান করা হলো আমি ঠিক জানিনা। ধরুন কেউ যদি বলে “বাংলাদেশের ঢাকার থেকে আমার প্যারিস অনেক বেশি ভালো লাগে” । এটাতে কি ঢাকা কে অপমান করা হলো? নাকি বাংলাদেশ কে অপমান করা হলো? এখানে শুধুমাত্রই কারো নিজস্ব ভালো লাগা কে তুলে ধরা হয়েছে। কাউকেই ছোট করে কিছু বলা হয় নি।
এখন শুধু মাত্র এই একটা কারণে আজকে যদি নোবেল কে এইভাবে গালাগালি আর সমালোচনা করা হয় তাহলে এটা সত্যিই বেশ লজ্জার । আর নোবেল উঠতি তারকা। বয়স ও অনেক কম। মিডিয়ার অনেক কিছুই এখনো বুঝতে শিখেনি । সে যদি ভুল কিছু ও বলে থাকে তাহলেও এই ছোট্ট একটা ভুলের জন্য এত বড় শাস্তি তাকে দেয়া উচিত নয় । তবে এ ঘটনা নিঃসন্দেহে নোবেলের জন্য বিরাট বড় একটি শিক্ষা। ভবিষ্যতে কোন কথা বলার আগে নোবেল আশা করছি দশ বার ভাববে।
আর যারা কোন কিছু না জেনে অথবা না বুঝে হুজুগে লাফালাফি করেন। আপাতত এগুলো বন্ধ করুন। চোখ দিয়ে দেখতে শিখুন। মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করুন। আপনাদের এই হুজুগে পনার কারণে প্রতিনিয়ত এদেশের মানুষদের বিপদে পরতে হয়। একেক বার একেক ধরনের গুজবে আপনারা সর্বশক্তি দিয়ে ঝাপিয়ে পরেন। আর ভুক্তভোগী হতে হয় সাধারণ মানুষ গুলোকে।
সব শেষে ,নোবেল আমাদের সন্তান। ওকে বড় হতে দিন। ওর প্রতিভাবে বিকশিত হতে দিন। অহেতুক বিভিন্ন অভিযোগ তুলে শুরুতেই একটা প্রতিভা ধ্বংস করে দিবেন না। নোবেল কে যেতে হবে দূর থেকে বহু দূর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।