Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত যারা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৯:৪১ পিএম

প্রকৃতির নানা জটিল বিষয়কে সহজ-সাবলীল এবং আনন্দময় করে উপস্থাপনের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পাওয়া ব্রিটিশ টেলিভিশন উপস্থাপক ডেভিড অ্যাটেনবরো, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং বেলারুশের ভিন্নমতাবলম্বী ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা রাজনীতিবিদ সেভেৎলানা টিখানোভস্কায়া চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন। নরওয়ের আইনপ্রণেতারা চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য তাদের নাম মনোনীত করেছেন।-রয়টার্স

অতীতে নরওয়ের এই আইনপ্রণেতাদের মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে থেকে অনেকের নোবেল জয়ের রেকর্ড রয়েছে। শেষ মুহূর্তের ঘোষণায় দেখা গেছে, মনোনীত অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে খ্রিস্টান ধর্মের রোমান ক্যাথলিক শাখার ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস, গত বছরের সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের বিরোধীদের গঠিত জাতীয় ঐক্যের সরকার এবং টুভালুর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিমন কোফি আছেন। প্রত্যেক বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, সাবেক নোবেলজয়ী এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদসহ লাখ লাখ মানুষ ভিন্ন ভিন্ন নোবেল পুরস্কারের জন্য পছন্দের প্রার্থীদের মনোনীত করেন। চলতি বছরের নোবেল পুরস্কারের মনোনয়নের সময় সোমবার শেষ হয়েছে। তবে মনোনীত হওয়া মানেই নোবেল কমিটির অনুমোদন আছে বিষয়টি তেমন নয়।

নরওয়ের আইনপ্রণেতারা ২০১৪ সাল থেকে যাদের মনোনয়ন দিয়েছেন; তাদের মধ্যে থেকেই প্রায় প্রত্যেক বছরই নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী পাওয়া গেছে। তবে এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ২০১৯ সাল ব্যতিক্রম ছিল। গত বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন যৌথভাবে দু’জন। তাদের মধ্যে একজন হলেন ফিলিপিনো সাংবাদিক মারিয়া রেসা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নরওয়ের আইনপ্রণেতাদের মনোনয়ন দেয়ার ধরনটি বেশ ঈর্ষান্বিত হওয়ার মতো। তবে শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত বিজয়ী কারা হবেন সেবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন নরওয়ের নোবেল কমিটি; এই মনোনয়নের ব্যাপারে তারা কোনও মন্তব্য করেন না। গত ৫০ বছরে যারা মনোনীত হয়েছেন এবং হতে পারেননি তাদের নাম গোপন রেখে এসেছে এই কমিটি। মনোনীতদের মধ্যে থেকে চূড়ান্ত বিজয়ী বেছে নিতে পারে নোবেল কমিটি।

‘লাইফ অন আর্থ’ এবং ‘দ্য ব্লু প্ল্যানেট’সহ প্রাকৃতিক বিশ্বকে চিত্রিত করে বানানো বেশ কিছু ঐতিহাসিক টেলিভিশন সিরিজের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত ৯৫ বছর বয়সী অ্যাটেনবরো। বিশ্বব্যাপী জীববৈচিত্র্য পরিস্থিতি মূল্যায়নকারী অলাভজনক সংস্থা ইন্টারগভর্নমেন্টাল সায়েন্স-পলিসি প্ল্যাটফর্ম অন বায়োডাইভার্সিটি অ্যান্ড ইকোসিস্টেম সার্ভিসেসের (আইপিবিইএস) সঙ্গে যৌথভাবে মনোনয়ন পেয়েছেন ব্রিটিশ এই টেলিভিশন উপস্থাপক। মনোনয়নের প্রস্তাবকারী নরওয়েজিয়ান গ্রিন পার্টির প্রধান উনে বাস্তথলম বলেছেন, পৃথিবীর প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য সম্পর্কে নীতি-নির্ধারকদের জানানো এবং তা রক্ষা করায় তাদের প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা টেকসই এবং শান্তিপূর্ণ সমাজের পূর্বশর্ত।

পোপ ফ্রান্সিসের বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট সমাধানে সহায়তা প্রচেষ্টার পাশাপাশি শান্তি ও পুনর্মিলনের কাজের জন্য তার নাম মনোনীত করেছেন নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক সাবেক মন্ত্রী ড্যাগ ইনগে আলস্টেইন। গত নভেম্বরে কপ২৬ জলবায়ু সম্মেলনে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র টুভালুর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন কোফে সাগরে দাঁড়িয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা তুলে ধরে বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছেন। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এমন অভিনব উদ্যোগের জন্য নরওয়ের লিবারেল পার্টির গুড়ি মেলবি সাইমন কোফেকে মনোনীত করেছেন। গত দুই বছর ধরে বিশ্বজুড়ে মানুষের উদ্বেগের কেন্দ্রে রয়েছে করোনাভাইরাস মহামারি। এই মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কাজে নিযুক্ত জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত বছরের মতো এবারও নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছে।

অসলোর পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক হেনরিক উর্ডাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি মনে করি, চলতি বছরের পুরস্কারের জন্য কমিটিতে ডব্লিউএইচও নিয়ে আলোচনা হতে পারে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলে নেয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। সেনাবাহিনীর এই অভ্যুত্থানের পর দেশটির বিরোধীদলীয় নেতারা ‘জাতীয় ঐক্যের সরকার’ নামে ছায়া সরকার গঠন করে। মিয়ানমারের এই ঐক্যের সরকারও এবার নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছে।

দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ আন্দোলনের ডাক দেয়া বেলারুশের রাজনীতিবিদ সেভেৎলানা টিখানোভস্কায়া বর্তমানে নির্বাসনে রয়েছেন। নিজ দেশে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্য তার ‌‌‘সাহসী, বিশ্রামহীন ও শান্তিপূর্ণ কাজের’ জন্য টানা দ্বিতীয় বছরের মত এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন সেভেৎলানা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের জরিপ অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ গোপন মার্কিন নথি ফাঁস করে বিশ্বজুড়ে সাড়া জাগানো ও বিতর্কিত ওয়েবসাইট উইলিকস, রাশিয়ার দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের নেতা কারাবন্দি অ্যালেক্সি নাভালনি, চেলসি ম্যানিং, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো, আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা কেয়ার, ইরানি মানবাধিকার কর্মী মাসিহ আলীনেজাদ নোবেল শান্তি পুরস্কারের মনোনীতদের তালিকায় রয়েছেন। চলতি বছরে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম আগামী অক্টোবরে ঘোষণা করা হবে।



 

Show all comments
  • ম নাছিরউদ্দীন শাহ ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১০:৫৫ পিএম says : 0
    বাংলাদেশের দশ ভাগের একভাগ পার্বত্য চট্টগ্রামের যুদ্ধের পরিস্থিতি ছিল। রক্তাক্ত জনপদ ছিল লাশের সারিবদ্ধ চিত্র ছিল। ভয়াবহ ভয়ানক পরিস্থিতি কে শান্তির পায়রা উড়িয়ে শান্তি প্রতিষ্টা করে ছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এটি শান্তির পক্ষে শান্তিতে নোবেলজয়ী কাজ। আন্তর্জাতিক কিছু ষড়যন্ত্র কারীর জন্যে বঞ্চিত হলো শান্তি জন্যে নোবেল প্রাইজ। সমগ্র পৃথিবীর ইলেকট্রনিক মিডিয়া দেখেছিলাম মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ গনহত‍্যা আগুনের লেলিহান শিখা ভয়ানক পরিস্থিতি লক্ষ লক্ষ নারী পুরুষ শিশু বৃদ্ধার জীবন বাচানোর আর্তনাদ। নারী শিশুর কান্না আকাশ ভারী হয়ে গিয়েছিল।ঠিক তখনই মানবতার দিশারী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বাচানোর জন্যে ঘোষণা দিলেন প্রযোজনে একবেলা খাব। বাংলাদেশের মাঠিতে ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত মানুষ গুলো স্থান দিলেন বিশ্বের সকল দেশ প্রশংসনীয় কাজের জন্যে প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন জানালেন আন্তর্জাতিক সাহায্য সহযোগিতাও করলেন ইত্যাদি। বিশ্বের বিবেকবান মানুষ। শান্তির পক্ষের মানুষ। মানবতার পক্ষের মানুষ শতভাগ নিশ্চিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশালাকার শান্তি নিরাপত্তার কাজের জন্যে এবার নোবেল শান্তি পুরুস্কার পাবেন। নরওয়ের শান্তি কমিটির অন্ধ বধির কিছুই দেখলেন না। এবার ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের জন্যে বাংলাদেশ শান্তির পক্ষের মর্যাদাবান পুরুস্কার থেকে বঞ্চিত করা হলো। অথচ সুদের ব‍্যবসা হালাল কারীদের কে শান্তি পুরুস্কার দিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন সেমিনারে বাংলাদেশের অগ্রগতি উন্নয়ন বিশালাকার অর্থনীতি বাংলাদেশ বিশ্বের মাঝে শান্তির পক্ষে শক্তিশালী দেশের কাতারে নিয়ে বিশ্বের মাঝে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শান্তিতে নোবেলজয়ী হবে সেদিনের অপেক্ষায়। উন্নয়ন অগ্রগতির শক্ররা পরাজিত হবেই
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ