বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শ্বশুরবাড়ির সালিশী বিচারে অপমানিত হয়ে গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে রাউজানে এক জীপচালক আত্মহত্যা করেছেন। তবে তার পরিবার এটাকে হত্যা বলে অভিযোগ করেছে। নিহত জীপচালকের নাম মোহাম্মদ তারেক (৩০) বলে জানা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায়। আগে গোপনে বিয়ে করে অন্য জায়গায় রাখা ও ঘরের স্ত্রীর ওপর নির্যাতনের অভিযোগে রাউজানের আলীখীল রহমত পাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে সালিশি বৈঠকে ডেকে নেয়া হয়েছিল জীপচালক তারেককে। সেখানকার সমাজপতিরা তাকে চর থাপ্পড়ে মেরে নানাভাবে অপমান করার পর একটি কক্ষে বসিয়ে রাখার অপমানে তারেক ওই কক্ষে একটি শাড়ি গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। তারেক কাউখালী উপজেলার গোদারপাড় এলাকার জনৈক আবদুর রহমানের পুত্র। গত দেড় বছর আগে তিনি রাউজান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের আলীখীল এলাকার রহমত পাড়ার মোহাম্মদ ফোরকানের কন্যা শিল্পি আকতারকে বিয়ে করেন।
শুক্রবার রাত সাড়ে আটটায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তারেকের মা-ভাইসহ নিকট আত্মীয়স্বজন রহমত পাড়ায় ঘরে-উঠানে বসে আহজারি করছেন। তাদের অভিযোগ, তারেকের শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করে তাকে হত্যার পর শাড়িতে ঝুলিয়ে রেখেছে। যে ঘরে ঘটনাটি ঘটেছে সেই ঘরে পরিদর্শনের সময় কোনো পুরুষ সদস্য না থাকায় কারো সাথে কথা বলা যায়নি। তবে তারেকের স্ত্রী শিল্পি আকতার কান্নাকাটি করে বলেছেন, তার স্বামী এ বাড়ীতে এসেছিলেন বিকাল তিনটার দিকে। ওই সময় সমাজের লোকজন তাকে বকাঝকা করে সন্ধ্যার পর সালিশী বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য বলে। এরপর তারেক ঘুমানোর কথা বলে একটি কক্ষে প্রবেশ করে ভিতরে হুক দিয়েছিল। সন্ধ্যা হয়ে গেলে তাকে ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে দরজার হুক খুলে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাওয়া যায়। উঠানে বসে বিলাপ করে তারেকের মা তাসমিনা আকতার অভিযোগ করেন, সালিশী বৈঠকের কথায় তাকে ও তার ছেলেকে ডেকে আনা হয়েছিল। তিনি সাথে নিয়ে এসেছিলেন ছেলে বউ শিল্পিকেও। ধারণা ছিল ভুল বুঝাবুঝি নিষ্পত্তি করে ছেলে ও বউকে আবার সাথে নিয়ে যাবেন। সকাল ১১টার দিকে তারেকের মা-বাবা এক সাথে এসেছিলেন পুত্রবধূ শিল্পিকে নিয়ে বেয়াই বাড়িতে। দুপুরে খাওয়া-দাওয়াও করেছেন বলে জানান তারা। বিকালের দিকে তাদের বসিয়ে রাখা হয় উঠানে। বাবাকে পাঠানো হয় ঢালামুখের মেম্বারকে ডেকে আনতে।
এরমধ্যে তারেক শ্বশুরবাড়িতে এসে উপস্থিত হয় সাড়ে ৩ টার দিকে। জামাই আসার সংবাদ দিয়ে এখানে ডেকে আনা হয় রহমত পাড়ার সর্দার কামাল ও আলমগীরকে। তারা এসে তারেককে ডেকে বউয়ের সাথে তার ঝগড়া করার কারণ জানতে চান। আগে বিয়ে করার কথা কেন গোপন করে শিল্পিকে বিয়ে করে দেড় বছর নির্যাতন করছে। এটা নিয়ে তারা তারেকের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে তারেককে চড়থাপ্পর মেরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার কথা বলে অপমান করে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। এসময় তারেকের মাকে উঠানে বসিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনার পর বাড়ি ছেড়ে চলে যান সর্দার কামাল ও আলমগীর। যাওয়ার সময় তারা বড় সর্দার ইউনুচ আসলে সন্ধ্যার পর এটা নিয়ে সালিশ হবে বলে জানান। এই অবস্থার মধ্যে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে রাউজান থানা থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধারে ঘটনাস্থলে গেছেন বলে জানা যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।