নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশ্বকাপের প্রাথমিক পর্ব থেকে বিদায় নেওয়ার পর শ্রীলঙ্কা সিরিজেও ভরাডুবি হয়েছে বাংলাদেশের। এর কারণ খুঁজতে গেলে পাওয়া যাবে বেশ কয়েকটি। নিয়মিত একাদশের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে স্কোয়াডে থাকা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের ফর্মহীনতা, দুর্বল বোলিং ও ফিল্ডিং পারফরম্যান্স। যে ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তাক লাগিয়ে দিয়েছিল, লঙ্কানদের বিপক্ষে তা ছিল একেবারে সাদামাটা মানের। বিশ্বকাপের পরপরই প্রধান কোচ স্টিভ রোডস বিদায় নেওয়ায় অন্তঃবর্তীকালীন কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের অধীনেই লঙ্কাদ্বীপে খেলতে হয়েছে দলকে। তিনি ইতিবাচক কিছু করে দেখাতে পারেননি। নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার শেষ সময়ের চোটে ছিটকে যাওয়ায় দলকে নেতুত্ব দিয়েছেন তামিম ইকবাল। সবমিলিয়ে বেশ কঠিন সময় পার করছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।
২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতির গ্রাফটা বেশ ঊর্ধ্বমুখী। ওই আসরে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার পর ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেমিফাইনালে খেলে টাইগাররা। সবশেষ বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাতে পারলে পঞ্চম স্থানে থেকে আসর শেষ করার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু তা হয়নি, উল্টো সেমির লক্ষ্য নিয়ে গিয়ে অষ্টম হয়ে ফিরতে হয়েছে ইংল্যান্ড থেকে। এরপর লঙ্কানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে বিবর্ণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে বেজায় হতাশ ‘বিশ্রামে’ থাকা সাকিব আল হাসান। কেননা ফলগুলো বলে দিচ্ছে, উন্নতির গ্রাফে হঠাৎ ছেদ পড়েছে। সেটা উপলব্ধি করে বিশ্বকাপে চোখ ধাঁধানো পারফর্ম করা বাঁহাতি তারকা অলরাউন্ডার তাগিদ অনুভব করছেন একটি পরিকল্পনার, যার মধ্য দিয়ে সামনের দিকে যাবে বাংলাদেশের ক্রিকেট, ‘আমরা যখন বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে খেলিনি (ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হওয়ায়), তখন সবাই ভেবেছে আমাদের দুই পয়েন্ট নিশ্চিত ছিল। কিন্তু এই সিরিজেই প্রমাণ হয়েছে যে, তা নিশ্চিত ছিল না। অর্থাৎ বিশ্বকাপে হয়তো জিততেও পারতাম, হারতেও পারতাম। এই সিরিজের কথা যদি বলি, তাহলে খুবই হতাশাজনক। সিরিজ হারলেও আমরা একটা ম্যাচও যদি জিতে আসতাম, তাহলে আমাদের আত্মবিশ্বাসের জন্য তা সহায়ক হতো। কিন্তু তা হয়নি। হয়তো এখন সময় এসেছে ভালোভাবে চিন্তা করে পরবর্তী তিন-চার বছরের জন্য একটা পরিকল্পনা করা। এখন সময় এসেছে। আমি নিশ্চিত যে, বিসিবিতে যারা দায়িত্বে আছেন, তারা এটা নিয়ে ভাবছেন। এরই মধ্যে দুজন কোচও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। হয়তো পুরো কোচিং স্টাফ একসঙ্গে হলে এটা নিয়ে তারা পরিকল্পনা করবেন এবং বোর্ডকে তা দিতে পারবেন। আমার মনে হয় যে, তাহলে আমাদের ক্রিকেট গত চার-পাঁচ বছরে যতদূর এগিয়ে এসেছে সে অবস্থান থেকে সামনের দিকে আরও আগাবে।’
শুধু দলের পারফরম্যান্সই নয়, সাকিবকে হতাশ করেছে তামিমের ব্যাটিং। বিশ্বকাপ থেকেই ব্যাট হাতে বিবর্ণ দেশসেরা ওপেনার। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে তার কাঁধে ওঠে বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব। নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকা তামিম এই বাড়তি দায়িত্বের চাপ সামলাতে না পেরে হয়ে পড়েন আরও বিবর্ণ। তিন ম্যাচে করেন যথাক্রমে ০, ১৯ ও ২ রান। এই ফর্মহীন অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দেশসেরা ওপেনারকে ‘বিশ্রাম’ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ^সেরা অলরাউন্ডার, ‘এমন সময় একজন ক্রিকেটারের যেতেই পারে। আমার মনে হয়, ওর (তামিমের) জন্য এখন উচিত হবে খুব ভালো একটা বিশ্রাম নেওয়া। নিজের ছন্দ ফিরে পাওয়া, টগবগে হওয়া এবং দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ানো। আমি নিশ্চিত, ও এটা করবে।’
‘বিশ্রাম’ কেন জরুরি সে বিষয়ে নিজের কিছু যুক্তি তুলে ধরেন বাঁহাতি তারকা, ‘আমি একটা বিষয় বিশ্বাস করি, আমার ব্যক্তিগত ধারণা যে, একজন খেলোয়াড়ের তখনই খেলা উচিত, যখন সে তৈরি থাকে। যখন তৈরি না থাকে কেউ, তখন খেলা উচিত না। পুরো ফিট না থাকলেও খেলা উচিত না। আমি মনে করি, পারফরম্যান্সের ওপর বড় ভূমিকা রাখে আপনি কতটা ফিট কিংবা কতটা আনফিট।’
নিজের বক্তব্যকে জোরালো করতে সাকিব টেনে আনেন প্রতিবেশী ক্রিকেট পরাশক্তি ভারতের উদাহরণ, ‘যখন কোনো খেলোয়াড় বলে তার নিজের বিশ্রাম নেওয়া উচিত বা কোচিং স্টাফ বলে তার বিশ্রাম নেওয়া উচিত, তখন খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফদের উভয় পক্ষের তা বোঝা উচিত। আমি ভারতের গেল চার বছরের পরিসংখ্যানটা বলতে পারি, ওদের দলের সবচেয়ে কম খেলোয়াড় চোটে পড়েছে। কারণ ওরা বাই রোটেশন (ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে, বিশ্রাম দিয়ে) পদ্ধতিতে খেলেছে। এতে ওদের অনেক খেলোয়াড় তৈরি হয়েছে, অনেক নতুন খেলোয়াড়ের আবির্ভাব ঘটেছে। একই সময়ে ওদের যে খেলোয়াড় যখন খেলার সুযোগ পেয়েছে, সে তখন টগবগে অবস্থায় পারফর্ম করতে পেরেছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।