Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০১৯, ১২:০০ এএম

বরগুনায় আলোচিত রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী নিহতের স্ত্রী মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। গতকাল আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শুনে এবং নিম্ন আদালতের নথি পর্যালোচনা করে জেলা ও দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামান মিন্নির জামিন আবেদনটি নাকচ করেন। গত ২১ জুলাই বিচারিক আদালতে মিন্নির জামিন আবেদন খারিজ হবার পরে ২৫ জুলাই জেলা জজ আদালতে আবেদন করা হয়। জেলা জজ ৩০ জুলাই জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন। এর আগে ২২ জুলাই মিন্নির ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দি প্রত্যাহার ও তার চিকিৎসার আবেদনটিও নাকচ করে দেয় বিচারিক আদালত।

গত ২৬ জুন বরগুনা শহরে কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে প্রকাশ্য দিবলোকে স্ত্রীসহ কয়েকশ’ লোকের সামনে নৃশংসভাবে কুপিয়ে রিফাতকে জখম করে ঘাতকের দল সদর্পে এলাকা ত্যাগ করে। মিন্নি প্রাণপণ চেষ্টা করেছে স্বামীকে রক্ষা করতে। যা ভিডিও ফুটজেও দেখা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে বরগুনা সদর থানার দূরত্ব দশ মিনিটের। ঘাতকরা রিফাতকে কুপিয়ে জখম করে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে যাবার পরে এলাকাবাসী ও তার স্ত্রী হাসপাতালে নেয়ার পরেই ঘটনাস্থ’লে পুলিশ পৌঁছে। তবে বরগুনার এসপি দাবি করেছেন, পুলিশই রিফাতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এক্ষেত্রে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের অভিমত, গত কয়েক বছর ধরে দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও বিরোধী দল কোন কর্মসূচি পালন করতে পারেনি পুলিশের তড়িৎ পদক্ষেপে। অতি দ্রæত ও কঠোর তৎপরতার সাথে পুলিশ রাজনৈতিক কর্মকান্ড প্রতিহত করার কৃতিত্ব অর্জন করলেও পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে রিফাতের ওপর নারকীয় হামলা চালিয়ে সন্ত্রাসীরা নিরাপদে চলে গেলেও সেই পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়েনি।

প্রকাশ্য দিবালোকে কয়েকশ’ মানুষের সামনে ১২-১৪ জন বখাটে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করলেও কেউ এগিয়ে না আসার বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, হামলাকারী নয়ন বন্ডসহ তার সহযোগীদের ‘গড ফাদার’ বরগুনা শহরে এতটাই প্রভাবশালী যে, কেউ ঐসব খুনিদের কাছ থেকে রিফাতকে উদ্ধারে এগিয়ে যাবার সাহস করেনি।

রিফাত হত্যাকান্ডের পরে দেশজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। খোদ প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। দেশের উচ্চ আদালত থেকেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে রিফাতের এ নৃশংস হত্যাকান্ড দক্ষিণাঞ্চলে সন্ত্রাসী ও মাস্তানদের স্বরূপ কিছুটা হলেও প্রকাশ্যে এনেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।

গত কয়েক বছর ধরে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে এক শ্রেণির বখাটেসহ ছিচকে মাস্তানের যে অভ্যুদয় ঘটেছে, তা নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদাসীনতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এতদিনের উদাসীনতায় এসব মাস্তান ও বখাটেরা ক্রমশ বেপরোয়া হয়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। যার শেষ পরিণতি রিফাত হত্যা বলে সাধারণ মানুষ মনে করলেও কতিপয় বিবেকহীন রাজনৈতিক নেতার টনক নড়বে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বার বার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ