Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমার নৌবাহিনীকে কেন সাবমেরিন দিচ্ছে ভারত?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০১৯, ৯:০৩ পিএম

মিয়ানমার নৌবাহিনীকে প্রথমবারের মতো নিজেদের নৌবাহিনীর বহরে থাকা রাশিয়ার তৈরি সাবমেরিন দিচ্ছে ভারত। এ বছরের শেষে সাবমেরিনটি হস্তান্তর করতে পারে ভারত। এর কয়েক সপ্তাহ আগে ইয়াঙ্গুনকে সাবমেরিন বিধ্বংসী অত্যাধুনিক হালকা টর্পেডো (টিএএল) শেয়েনা দিয়েছে ভারত।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইকনোমিকস টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কিলো ক্লাসের এই সাবমেরিনটি ১৯৮০ সালে রাশিয়া থেকে কেনে ভারত। বর্তমানে সাবমেরিনটিকে আধুনিকায়নের কাজ চলছে। সাবমেরিনটির প্রকৃত নির্মাতা রাশিয়া থেকে এর প্রয়োজনীয় আধুনিকায়ন বা মেরামতের অনুমতি নেয়া হয়েছে।এরপরই এইচএসএল কোম্পানি সাবমেরিনটিকে দেশীয় পদ্ধতিতে মিয়ানমার নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণের উপযোগী করে তৈরি করতে শুরু করে।

ভারতীয় নৌবাহিনীর সিন্ধুঘোষ ক্লাসের ডিজেল অথবা বৈদ্যুতিক শক্তির সাবমেরিন। এটিকে আইএনএস সিন্ধুভির বা এস-৫৮' নামে ডাকা হয়। এ ছাড়া সামনের বছরগুলোতে মিয়ানমার নৌবাহিনীর নিজস্ব সাবমেরিন হিসেবে এস-৫৮' দেশটির সামরিক সদস্যদের উন্নত প্রশিক্ষণ দেবে বলে কর্তৃপক্ষের আশা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,ভারতীয় হিন্দুস্থান শিপইয়ার্ড লিমিটেড (এইচএসএল)সাবমেরিনটির আধুনিকায়নের কাজ করছে।অন্ধ্র প্রদেশের কোম্পানিটি এর আধুনিকায়নের কাজ প্রায় শেষ করেছে। এরপরই এ বছরের শেষের দিকে সাবমেরিনটি মিয়ানমারকে হস্তান্তর করতে পারে ভারত।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারত ও মিয়ানমার দু'দেশের মধ্যে একাধিক উচ্চপর্যায়ের মতবিনিময় বৈঠক হয়েছিল।আর এ সব বৈঠক এখনও চলছে।এর মধ্যদিয়ে দু'দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক সুদৃঢ় হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

এদিকে, প্রতিরক্ষার সার্বিক বিষয় নিয়ে বর্তমানে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং ভারত সফর করছেন।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মিয়ানমার সিনিয়র জেনারেলের সঙ্গে আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানো, দু'দেশের মধ্যে যৌথ সামরিক মহড়া এবং প্রশিক্ষণ পর্যালোচনা করা।

এতে বলা হয়েছে, যৌথ নজরদারি ও ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সামুদ্রিক সুরক্ষা জোরদার করা এবং নতুন অবকাঠামোগত বিকাশে মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছে, এ সব উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন বা মিয়ানমারের সামরিক ক্ষমতা বাড়ানোর অংশহিসেবেই হয়তো দেশটিকে এবার সাবমেরিন দিচ্ছে ভারত।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে দ্য ডিপ্লোমেট তাদের বিশ্লেষণে বলছে, মিয়ানমারে যখন জাতিগত উৎখাত অভিযান চালায় সেনাবাহিনী তখন ভারত কোনো মন্তব্য করেনি। এ বিষয় নিয়ে কোনো উদ্বেগও প্রকাশ করেনি। ওই পরিস্থিতিতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

প্রতিরক্ষা ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের মিত্রতা এ দুইবারই প্রথম নয়। এর আগেও দেশটিতে অ্যাকোয়াস্টিক ড্রোন ও ন্যাভাল সোনারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়েছে নয়াদিল্লি।

এর আগে ১২ জুলাই মিয়ানমার নৌবাহিনীর কাছে সাবমেরিন বিধ্বংসী অত্যাধুনিক হালকা টর্পেডো (টিএএল) শেয়েনা' হস্তান্তর করে ভারত।

এর পর ১৬ জুলাই ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মিয়ানমারে টর্পেডো রফতানির জন্য ২০১৭ সালে দেশটির সঙ্গে ৩৭ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিল ভারত।এই চুক্তি অনুসারে টর্পেডোর প্রথম চালান মিয়ানমারকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ভারত ডায়নামিকস লিমিটেড (বিডিএল)এই উচ্চপ্রযুক্তির টর্পেডো বানিয়েছে।

এই প্রযুক্তির টর্পেডো ভারতীয় নৌবাহিনীর ২৫ ইউনিটে আছে। এর ওজন ২২০ কেজি এবং দৈর্ঘ্য ২ হাজার ৭৫০ মিলিমিটার ও ব্যাস ৩২৪ মিলিমিটার।এতে উচ্চমাত্রার ৫০ কেজি পরিমাণ বিস্ফোরক ভর্তি থাকে। একই সঙ্গে এর কার্যকরী দূরত্ব ৭ কিলোমিটার এবং সর্বোচ্চ গভীরতা ৫৪০ মিটার পর্যন্ত।



 

Show all comments
  • kkio ৩০ জুলাই, ২০১৯, ১১:৩৭ পিএম says : 0
    Pakistan, Bangladesh should form a joint military force which will be under Pakistan command in the Bangladeshi-branch and Bangladesh command in the Pakistani-Branch.
    Total Reply(0) Reply
  • Zafar imam ১ আগস্ট, ২০১৯, ১:৫৭ পিএম says : 0
    Indians role likes snakes!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ