Inqilab Logo

বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কেন রাতারাতি কাশ্মীরে বাড়তি দশ হাজার সেনা মোতায়েন করছে ভারত সরকার?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০১৯, ৯:০০ পিএম

ভারত শাসিত কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় সরকার হঠাৎ করে অতিরিক্ত দশ হাজার সেনা মোতায়েন শুরু করার পর গোটা উপত্যকা জুড়ে তীব্র আতঙ্ক ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

সরকার যদিও একে রুটিন সেনা মোতায়েন বলেই দাবি করছে।

তবে পর্যবেক্ষকরা অনেকেই ধারণা করছেন ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপের চেষ্টা হলে কাশ্মীর উপত্যকায় যে অস্থিরতা সৃষ্টির সম্ভাবনা আছে তার মোকাবিলাতেই সেখানে বাড়তি সেনা নিয়ে আসা হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই কাশ্মীরে মেহবুবা মুফতি বা শাহ ফয়সলের মতো রাজনীতিবিদরা এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছেন, কাশ্মীর থেকে দলে দলে পর্যটকরা ফিরে আসছেন বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে।

গত ২৫ জুলাই ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিশেষ নোটে অবিলম্বে কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর অতিরিক্ত দশ হাজার সদস্য মোতায়েনের নির্দেশ জারি করে।

ঐ নোটে বলা হয়, কাশ্মীরে জঙ্গি দমন অভিযানে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) ৫০টি কোম্পানি, সশস্ত্র সীমা বলের ৩০ কোম্পানি এবং বিএসএফ ও ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশের দশটি করে বাড়তি কোম্পানিকে অবিলম্বে এয়ারলিফট করে আনা হচ্ছে।

দুদিন পরে সেই নির্দেশের কথা জানাজানি হতেই কাশ্মীরে তার তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে।

সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি যেমন এতে হিতে বিপরীত হবে বলে মনে করছেন।

মিজ মুফতির মতে, "কাশ্মীর সমস্যার কোনও সামরিক সমাধান সম্ভব নয়।"

"যতক্ষণ না সংলাপ শুরু হচ্ছে এবং তাতে পাকিস্তানকেও যুক্ত করা হচ্ছে, ততক্ষণ এসব করে কোনও লাভ নেই।"

"সেনাবাহিনীর শক্তিতে জোর করে সাময়িক শান্তি আসতে পারে, কিন্তু স্থায়ী সমাধানের জন্য কাশ্মীর নিয়ে আলোচনাই একমাত্র পথ" বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।

ঘটনা হচ্ছে, গত সপ্তাহে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের সাথে জরুরি বৈঠক সেরে ফেরার পরই এই বাড়তি সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।

সিআরপিএফের মহাপরিচালক রবিদীপ শাহি অবশ্য বলছেন, "সৈন্যসংখ্যা বাড়ানো বা কমানো চলতেই থাকে।"

"আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বা জঙ্গি দমন অভিযানের প্রয়োজনের নিরিখে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এটা নিয়মিত ব্যাপার, বিশেষ কিছু নয়।"

কিন্তু অতিরিক্ত সেনাবহর কাশ্মীর উপত্যকায় ঢুকতে শুরু করা মাত্র দুটো জল্পনা তীব্র হয়েছে।

এক, হয়তো জঙ্গিদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই বিরাট ও ব্যাপক কোনও অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে।

আর দুই, ভারতীয় সংবিধানের যে ৩৭০ ধারা কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেয়, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তা বিলোপ করার পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।

বস্তুত দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পার্লামেন্টে মাসখানেক আগেই ঘোষণা করেছেন, "৩৭০ ধারা কিন্তু ভারতীয় সংবিধানের একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা।"

"এটা যে পাকাপাকি কিছু নয় - সেটা মনে রাখতে হবে", সেসময় একথাও বলেছিলেন তিনি।

বিগত সাধারণ নির্বাচনে বিজেপির ইশতেহারেও প্রতিশ্রুতি ছিল যে ক্ষমতায় এলে তারা এবার সেই ধারা বিলোপ করার লক্ষ্যেই কাজ করবে।

ভারত শাসিত কাশ্মীরে অনেকেই এখন ধারণা করছেন সেই সময় বোধহয় এসে গেছে।

জম্মু ও কাশ্মীর পিপলস মুভমেন্টের প্রধান ও সাবেক আমলা শাহ ফয়সল যেমন বলছিলেন, "এই বাড়তি সেনা মোতায়েনের নির্দেশে গোটা কাশ্মীর কিন্তু উদ্বিগ্ন!"

"একেবারে নজিরবিহীন, খুব সাংঘাতিক খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে ভেবে তারা শঙ্কিত।"

"সরকারের এখন উচিত মানুষকে সব কিছু খোলাসা করে বলা, পরিষ্কার করে জানানো যে ৩৭০ ধারা বা আর্টিকল ৩৫-এ বিলোপ ঘটতে যাচ্ছে কি না।"

কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এখনও কিছুই স্পষ্ট করেনি - আর এদিকে শ্রীনগর বিমানবন্দরে ফেরার টিকিটের জন্য পর্যটকদের হুড়োহড়ি শুরু হয়ে গেছে।

পাশাপাশি কাশ্মীর উপত্যকার বিভিন্ন জায়গায় চলছে বাড়তি সেনা মোতায়েনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভের প্রস্তুতি।

সূত্র : বিবিসি বাংলা।



 

Show all comments
  • MD.Mehedi hasan ২৯ জুলাই, ২০১৯, ১০:২৬ এএম says : 0
    আমার প্রিয় পএিকা ইনকিলাব!
    Total Reply(0) Reply
  • MD.Mehedi hasan ২৯ জুলাই, ২০১৯, ১০:২৭ এএম says : 0
    আমার প্রিয় পএিকা ইনকিলাব!
    Total Reply(0) Reply
  • alim ৩০ জুলাই, ২০১৯, ৯:৩৪ পিএম says : 0
    Only one solution.Free kashmeer. If india fights a war it will loose very badly.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাশ্মীর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ