Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘সন্ত্রাসবাদের মতোই তিন তালাকও অপরাধ’

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০১৯, ৩:০৭ পিএম

সন্ত্রাসবাদ ও তিন তালাকের অপরাধকে কার্যত একই বন্ধনীতে টেনে এনে ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার জানিয়ে দিলো, সন্ত্রাসবাদী কাজে জড়িত থাকলে যেমন জেলে যেতে হয়, তেমনই তিন তালাক দিলেও জেলে যেতে হবে।

বৃহস্পতিবার লোকসভায় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি তিন তালাক বিলের পক্ষে সওয়াল করে বলেন, সন্ত্রাসবাদ যেমন অপরাধ, তিন তালাকও অপরাধ। অপরাধ করলে জেলে যেতেই হবে।

কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস দাবি তোলে, সন্ত্রাসবাদ আর তিন তালাককে একসঙ্গে জুড়বেন না। সেই যুক্তি অবশ্য মানেনি সরকার। বিপুল সংখ্যাধিক্যের কারণে তৃতীয় বারের জন্য তিন তালাক বিল পাস হয়েছে লোকসভায়। তবে রাজ্যসভায় এ নিয়ে বিরোধীরা ফের আপত্তি জানাবেন বলে জানিয়েছে দিয়েছে।

তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধের তকমা দিয়ে তিন বছরের কারাদণ্ডের ব্যবস্থা করার প্রতিবাদে এদিন কংগ্রেস, তৃণমূলসহ বিরোধী দলগুলির পাশাপাশি বিজেপির শরিক দল জেডিইউ-ও লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করে।

জেডিইউ সাংসদ রাজীব রঞ্জন বলেন, ‘তিন তালাকের মতো অপরাধ ঠেকাতে সামাজিক চেতনা বাড়ানো দরকার। গৃহবধূদের ওপর নির্যাতন, পণপ্রথার বিরুদ্ধে আইন করেও এ সব ঠেকানো যায়নি। বরং এর অপব্যবহার হচ্ছে। একই ভাবে তিন তালাক আইনেরও অপব্যবহার হবে।’

মোদি সরকারকে কটাক্ষ করে জেডিইউ সাংসদ বলেন, ‘আমরা সরকারের আসল উদ্দেশ্য জানি। আপনারা জনমত পেয়েছেন। কাজ করুন। এ সব না হয় আবার ভোটের আগে করবেন।’

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার বলছে, ২০১৭-র ২২ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট তাৎক্ষণিক তিন তালাককে ‘অসাংবিধানিক’ বলে রায় দিয়েছিল। এর পর মোদি সরকার তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধের তকমা ও তিন বছরের জেলের নিদান দিয়ে বিল আনে।

কংগ্রেস এবং তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, মুসলিম পুরুষদের হীন বলে প্রতিপন্ন করতে মোদি সরকার তাৎক্ষণিক তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধের তকমা দিয়ে কারাবাসের ব্যবস্থা করছে। কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈয়ের প্রশ্ন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কোথায় লেখা রয়েছে, তাৎক্ষণিক তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধের তকমা দিতে হবে? ২২টি মুসলিম রাষ্ট্রে তিন তালাক নিষিদ্ধ। কিন্তু কোথাও তাকে ফৌজদারি অপরাধের তকমা দেওয়া হয়নি। একমাত্র বাংলাদেশে তা রয়েছে। কিন্তু সেখানেও মাত্র এক বছরের জেলের নিদান রয়েছে। তিন তালাকের অপরাধ বধূ নির্যাতন প্রতিরোধ আইন দিয়েই ঠেকানো যেত। হিন্দু, পার্সিদের ক্ষেত্রে স্বামী তার স্ত্রীকে ছেড়ে গেলেও এই রকম শাস্তির ব্যবস্থা নেই। সেখানে দুই বছর পরে স্ত্রী শুধু বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করতে পারেন। তা হলে শুধু মুসলিমদের ক্ষেত্রে এমন আইন কেন?

গৌরব বলেন, ‘মোদি সরকার এখন সবকা সাথ, সবকা বিকাশের সঙ্গে সবকা বিশ্বাসের কথা বলছে। বিশ্বাস জিততে হলে গণপিটুনির বিরুদ্ধে আইন আনুন।’

এমআইএম সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়েইসির প্রশ্ন, স্বামী যদি তিন তালাকের অপরাধে জেলেই চলে যান, তা হলে তিনি খোরপোষ দেবেন কীভাবে? স্বামী তিন বছর জেলে গেলে তত দিন স্ত্রীকে কেন তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে? কেন মুসলিমদের বিয়ের নিকাহনামাতেই তিন তালাকের বিরুদ্ধে শর্ত লিখিয়ে নিতে বলা হচ্ছে না?



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ