Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আলোড়ন সৃষ্টি করা ফিলিস্তিনির কোরআনে হাফেজা চার যমজ বোনের প্রশংসায় মুসলিম বিশ্ব

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০১৯, ৮:২৯ পিএম

দিমা, দিনা, সুজান ও রাজান—ফিলিস্তিনের চার যমজ বোন। তাদের বয়স এখন ১৮ বছর।

একসঙ্গে যেমন তাদের জন্ম, তেমনি একসঙ্গেই তারা বেড়ে উঠছে। একই শ্রেণিতে পড়ছে। এমনকি মাধ্যমিক স্কুল পরীক্ষায় চার বোনের স্কোরও সমান। এর চেয়ে বিস্ময়ের কথা হলো, যমজ এই চার বোন একই সঙ্গে কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করেছে।

দিমাদের জন্ম অধিকৃত জেরুজালেম নগরীর উম্মে তুবা গ্রামে। একটি দরিদ্র পরিবারে তাদের জন্ম। তাই বলে মেয়েদের শিক্ষাদীক্ষায় যত্নের অভাব নেই দিমা-দিনার মা-বাবার। একই সঙ্গে মেয়েরা ধর্মীয় শিক্ষায়ও পিছিয়ে থাকুক, তা-ও চান না তাঁরা। এ জন্য স্কুলে পড়ার পাশাপাশি পবিত্র কোরআনেরও হাফেজ হয়েছে চার বোন।

একসঙ্গে শুরু করে একই সঙ্গে কোরআনের হিফজ সমাপ্ত করে তারা। মানিকজোড়ের মতো একই সঙ্গে থাকে তারা। তাদের ব্যাপারে বলা হয়, ‘যেন এমন উজ্জ্বল একটি হার, যার পুঁতি ও পাথরগুলো পরস্পর সাদৃশ্যপূর্ণ। তবে পৃথক হলে স্বতন্ত্র চারটি হার হয়ে উঠবে। ’

রাজান-সুজানদের মা নাজাহ আশ শানিতি (৫৪) জানান, তাঁর মেয়েরা জেরুজালেমের আবু বকর সিদ্দিক (রা.) বালিকা বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। সদ্যঃপ্রকাশিত পরীক্ষার ফলাফলে সবার গড় নব্বইয়ের ঘরে। চার বোনের পারস্পরিক মিল, লেখাপড়ার প্রতি গভীর মনোযোগ ও সাফল্যে তিনি খুবই আনন্দিত। তিনি তাঁর মেয়েদের নিয়ে গর্বিত।

শানিতি আরো বলেন, ‘মেয়েদের মধ্যে পার্থক্য খুব সামান্যই। দোলনায় থাকতে আমিই ওদের পৃথক করতে হিমশিম খেতাম। এ জন্য চার মেয়ের জামায় আলাদা রঙের সুতা দিয়ে নকশা করে রাখতাম। তবে এখন আর তার প্রয়োজন হয় না। কণ্ঠস্বর শুনেই আমি বুঝতে পারি কোনটা কে। ’

তিনি বলেন, ‘খুবই অদ্ভুত ব্যাপার হলো, মেয়ে চারটি একসঙ্গে অসুস্থ ও সুস্থ হয়। তারা মিলেমিশে খেলাধুলা করতে ভালোবাসে আর আমিও চার বোনকে একই রকম পোশাক পরিধান করার জন্য জোর দিই। তবে তাদের শিষ্টাচারের ব্যাপারে বেশি কড়াকড়ি করতে চাই না। ’

চার মেয়ের হাফেজ হওয়ার ব্যাপারে শানিতি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই কোরআন মুখস্থ করার জন্য তাদেরকে গ্রামের মসজিদে পাঠিয়ে দিতাম। একরঙা পোশাক পরে তারা মসজিদে পড়তে যেত। সেই দৃশ্য আমার চোখ শীতল করত। ’

নিজেদের কোরআন হিফজ করার ব্যাপারে দিনা বলে, ‘১৩ বছর বয়সে আমরা চার বোন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) হিফজ মারকাজে ভর্তি হই এবং ১৭ বছর বয়সে মাধ্যমিক স্কুল শেষ করার এক বছর আগে হিফজ সম্পন্ন করি। ’ দিমা বলে, ‘একসঙ্গে হিফজ শেষ করতে পেরে আমরা চার বোনই খুব আনন্দিত।

এ ছাড়া ইসলামী শিষ্টাচার, নৈতিকতা ও আরবি ভাষায় আমরা একই সময়ে শিক্ষা গ্রহণ করেছি। কোরআন হিফজ শুরু করার পর আমরা সব কিছুতেই বরকত লাভ করি। বিশেষত লেখাপড়া ও সময়ে।

’ চার বোনের স্বপ্ন হলো, তারা ফিলিস্তিনের কোনো প্রসিদ্ধ ইউনিভার্সিটিতে ইঞ্জিনিয়ারিং বা ডাক্তারি পড়বে। তাদের বাবা মুরয়ি আশ শানিতি (৫৮) সন্তানদের স্বপ্ন পূরণ করতে চান। এ জন্য তিনি আল্লাহর সাহায্য এবং সবার দোয়া কামনা করেন।



 

Show all comments
  • আককাস আলী ২৫ জুলাই, ২০১৯, ৯:৫৩ পিএম says : 1
    আল্লাহ আপনার নেক আশা পুরণ করুন আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • মাজহারুল হক ৩০ জুলাই, ২০১৯, ১:৫৯ এএম says : 0
    তারা হাফেজা হয়েও যদি ডাক্তারি বা ইন্জিনিয়ারিং পড়তে পারে তাহলে আমরা কেন পারি না ইসলামি শিক্ষার সাথে সাথে আধুনিক ,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষায় পারদর্শি হতে,,
    Total Reply(0) Reply
  • মাজহারুল হক ৩০ জুলাই, ২০১৯, ২:০০ এএম says : 0
    তারা হাফেজা হয়েও যদি ডাক্তারি বা ইন্জিনিয়ারিং পড়তে পারে তাহলে আমরা কেন পারি না ইসলামি শিক্ষার সাথে সাথে আধুনিক ,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষায় পারদর্শি হতে,,
    Total Reply(0) Reply
  • মাজহারুল হক ৩০ জুলাই, ২০১৯, ২:০২ এএম says : 0
    তারা হাফেজা হয়েও যদি ডাক্তারি বা ইন্জিনিয়ারিং পড়তে পারে তাহলে আমরা কেন পারি না ইসলামি শিক্ষার সাথে সাথে আধুনিক ,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষায় পারদর্শি হতে,,
    Total Reply(0) Reply
  • S M Mozharullah Miah ৩০ জুলাই, ২০১৯, ৪:০৮ এএম says : 0
    Masha Allah সুন্দর জীবন ও দীরঘায়ু কামনা করছি
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ আব্দুস সালাম ৪ আগস্ট, ২০১৯, ৮:০৩ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ। আমি মহান রবের নিকট তাদের চার বোনদেরকে জন্য দোয়া আল্লাহ যেন তাদের আরও উন্নতি দান করেন। সেই সাথে মুসলিম বিশ্বের সকল মা বাবার প্রতি আহবান জানাই আমরাও যেন এ থেকে উপলব্দি কির আমাদের সন্তানদেরকেও শিশুবেলাতেই আল্লাহ পাকেন দ্বীনি পড়াশুনা তারপর অন্যান্য বিষয়। তাহলেই মুসলিমরা তাদের সোনালী যুগে ফিরে যেতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আল্লাহ তুমি সবাইকে বুঝার তৌফিক দান কর।
    Total Reply(0) Reply
  • মূজৗবূৱ ৱহমান ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ৭:৩৭ পিএম says : 0
    জাযাকাল্লাহ া
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফিলিস্তিন


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ