Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে প্রস্তুতি খুব সামান্য

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০১৯, ১২:০১ এএম

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার মতো পরিবেশ এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি মিয়ানমার। দেশটি যে ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে তা খুবই যৎসামান্য। স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তৈরি করা এক নতুন প্রতিবেদনে এমন দাবি করা হয়েছে। বুধবার গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে ক্যানবেরাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল সাইবার পলিসি সেন্টার অব দ্য অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রাটেজিক পলিসি ইন্সটিটিউট (এএসপিআই)। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। এদের সঙ্গে রয়েছেন ১৯৮২ সাল থেকে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্যে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া আরও প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা। সব মিলে রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখের বেশি। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হয়। একই বছরের ৬ জুন নেপিদোতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মধ্যেও সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের পর দীর্ঘদিন পার হলেও এর আওতায় কোনও শরণার্থী নিজ দেশে ফিরে যায়নি। মানবাধিকার গ্রুপগুলো দাবি করে আসছে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে বসবাসের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এবার অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এএসপিআই-প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকার যৎসামান্য প্রস্তুতি নিয়েছে। ‘ম্যাপিং কন্ডিশন্স ইন রাখাইন স্টেট’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘চলমান সহিংসতা, অস্থিতিশীলতা, ইন্টারনেট ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে বিঘ্ন ঘটা এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে তথ্যের স্বল্পতা থাকার কারণে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।’ ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত রাখাইনে প্রত্যাবাসনের এলাকার স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণের ভিত্তিতে গবেষণাটি পরিচালনা করেছে এএসপিআই। ২০১৭ সালের সহিংসতায় পুড়ে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও ধ্বংস হয়ে গেছে-ইউএনওস্যাট কর্তৃক শনাক্তকৃত এমন ৩৯২টি রোহিঙ্গা বসতি নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। ফলাফলে দেখা গেছে এসব বসতির মধ্যে ৩২০টির বেশি বসতি পুনগর্ঠনের কোনও আলামত নেই। কমপক্ষে ৪৫টি ক্যাম্প নির্মাণ কিংবা বর্ধিতকরণ করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত, প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গা কিংবা দুই ধরনের মানুষের জন্যই ক্যাম্পগুলো তৈরি হয়েছে। এছাড়া সাবেক রোহিঙ্গা বসতির ওপর ছয়টি সন্দেহমূলক সামরিক ফ্যাসিলিটি নির্মাণ ও বর্ধিত করা হয়েছে। এএসপিআই বলছে, ইউএনওস্যাট ডাটার পাশাপাশি তারা অন্তত ৫৮টি বসতি এলাকা শনাক্ত করেছে যেগুলো ২০১৮ সালে নতুন করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০১৯ সালেও অন্য কিছু বসতিতে ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে। এএসপিআই’র গবেষক নাথান রুসার বলেন, ‘আমাদের স্যাটেলাইট বিশ্লেষণে ২০১৮ এবং ২০১৯ সাল জুড়ে জনবসতির এলাকায় অব্যাহত ধ্বংসযজ্ঞের আলামত পরিষ্কারভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের সদিচ্ছার ব্যাপারে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।’ রয়টার্স, এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ