Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহামারী আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু- বিএমএ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০১৯, ৮:২৫ পিএম | আপডেট : ৮:২৬ পিএম, ২৪ জুলাই, ২০১৯

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেছেন, রাজধানীতে এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ মহামারী আকার ধারণ করেছে। তিনি বলেন, ঢাকায় ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছে। এক্ষেত্রে জনগণের অসচেতনতা এবং সিটি করপোরেশনের মশা মারার ওষুধ কার্যকর নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। সিটি করপোরেশনের ব্যার্থতায় মশা নিধনের ক্ষেত্রে আমরা সফল হতে পারছি না। এক্ষেত্রে বিএমএ’র সঙ্গে আলোচনা করে এই কাজ সম্পাদন করতে পারত, তাহলে সঠিক প্রক্রিয়ায় কাজ করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখা যেত। এদিকে আক্রান্তদের সেবায় চিকিৎসকরা যথার্থ ভূমিকা পালন করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বুধবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিএমএ আয়োজিত এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু জ্বরের যথোপযুক্ত চিকিৎসা, নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন বিভাগের সাবেক ডীন প্রফেসর ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গু এখনও মহামারি আকার ধরে নি। মহামারীর পথে রয়েছে। বর্তমানে এর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে বলা যেতে পারে। কেননা এবারের ডেঙ্গুর ধরণ ভিন্ন। আর সিটি কর্পোরেশন যেভাবে মশা নিধনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সেভাবে কোনদিনই মশা নিধন সম্ভব নয়। এক এলাকায় ওষুধ দিলে অন্য এলাকায় মশা চলে যাবে। এক্ষেত্রে সমণ্বিত পদক্ষেপ দরকার। আবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও প্রস্তুত ছিল না এমন কিছুর জন্য। তারা আগে থেকে সারভিলেন্স চালু রাখলে এমনটা হত না। সর্বপরি জনগণকে সবার আগে সচেতন হতে হবে। এখন জ্বর হলেই ডেঙ্গু পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।

ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের ক্ষেত্রে চিকিৎসদের করণীয় সম্পর্কে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে প্লাটিলেট দেয়া একেবারেই জরুরী না। আমি হাজার হাজার ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা করিয়েছি প্লাটিলেট দেয়া ছাড়াই। তরল খাবার খাওয়ালে এমনিতেই প্লাটিলেট বাড়ে। প্যারাসিটামল ছাড়া রোগীদেরকে অবশ্যই রোগ নিরাময়ে অন্য যে কোন ওষুধ ইনজেকশন দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। খুব প্রয়োজন হলে দেয়া যাবে। কোনভাবেই এন্টিবায়টিক দেয়া যাবে না। যে কোন সার্জারী করানোর আগে অবশ্যই ডেঙ্গু টেস্ট করিয়ে নিতে হবে। আর টাইপ ১ ধরনের ডেঙ্গু রোগীদেরকে তাদের নিজ বাসায় রেখে পরামর্শ দেয়ার মাধ্যমে চিকিৎসা করানো সম্ভব আর টাইপ ২ বা এর চেয়ে মারাত্মক ডেঙ্গু হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করাতে হবে।

সেমিনারে বিএসএমএমইউ’র রিউমাটোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. সৈয়দ আতিকুল হক বক্তব্যে বলেন, ডেঙ্গু লিভার, কিডনি, মস্তিষ্ক,এমনকি হার্টকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে বমি, পেটে ব্যাথা, আচরণগত পরিবর্তন, অস্থিরতা, নিদ্রাহীনতা, রক্তক্ষরণ বা নাক মুখ দিয়ে রক্ত পড়া, পানিশুন্যতা, অতিরিক্ত ঘাম, প্রসাব না হওয়া ইত্যাদি। গর্ভবতী, শিশু, বয়স্ক, হাই প্রেসার, হৃদরোগ, রক্তে সমস্যা জনিত রোগীদের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ’র সাবেক ভিসি প্রফেসর ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এডিস মশার কামড় আমরা প্রতিদিনই খাচ্ছি। কিন্তু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে আমরা বেচে যাচ্ছি। প্রাইমারী ইনফেকশনে আমাদের কিছু না হলেও সেকেন্ডারি ইনফেকশনে আমরা অসুস্থ্য হয়ে পড়ছি।

বিএমএ’র সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএমএ’র সেমিনার সিম্পোজিয়াম ও সিএমই উপ-পরিষদের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, বিএমএ’র মহাসচিব প্রফেসর ডা. কামরুল ইসলাম সহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএমএ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ