Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কংগ্রেসের আশার আলো প্রিয়াঙ্কা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০১৯, ৬:৫৫ পিএম

পাঁচ বছর আগের অবস্থা অপরিবর্তিত৷ তলানিতে ঠেকেছে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস৷ কার্যত দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে৷ এখন রাহুল গান্ধীকে ছাপিয়ে দলকে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তার বোন প্রিয়াঙ্কা৷

সুষ্ঠু গণতন্ত্রে বিরোধী দল আবশ্যিক৷ কিন্তু, ভারতে প্রধান বিরোধী দলের হাল শোচনীয়৷ নির্বাচনী ফলাফলে ধরাশায়ী৷ তার ওপর দলের কান্ডারি নিজেই পদ ছাড়তে চেয়ে অনড়৷ নতুন সভাপতি নিয়ে বিশেষ হেলদোল চোখে পড়ছে না৷ স্বভাবতই দেশের প্রচীনতম রাজনৈতিক দলটির মুমূর্ষু দশা নিয়ে চিন্তার অন্ত নেই আম জনতার৷ এই পরিস্থিতিতে কোথাও যেন দলীয় কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে আশার আলো দেখাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী৷ দলীয় সমর্থকরা শ্লোগান তুলেছেন, ‘ময়দান মে উতর গেয়ি বহেন প্রিয়াঙ্কা, বিজেপি-রাজ অব বনেগি লঙ্কা৷’

ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধীর কন্যা প্রিয়াঙ্কা৷ গত লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন৷ কিন্তু, সফল হননি৷ সম্প্রতি দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশে জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে গুলি চালানোর ফলে ১০ জনের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমেছেন তিনি৷ ছুটে গেছেন সোনভদ্র এলাকার উদ্দেশে৷ কিন্তু, মাঝপথে তার রাস্তা আটকায় পুলিশ৷ এখানেই প্রিয়াঙ্কা অত্যন্ত দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন৷ তিনি ঘোষণা করেন, নিহতদের পরিবারবর্গের সঙ্গে দেখা না করে ফিরবেন না৷ গ্রেপ্তার হন৷ অন্ধকার ঘরে রাত কাটান৷ পুলিশের সঙ্গে টানা ২৪ ঘণ্টা টানাপোড়েন চলে৷ শেষমেশ তার জেদের কাছে নতি স্বীকার করতে হয় সরকারকে৷ নিহতের পরিবারের সদস্যদের প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে দেখা করার বন্দোবস্ত করে পুলিশ৷

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও কংগ্রেস প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক দীপ্তেন্দ্র রায়চৌধুরি ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সত্যাগ্রহ আন্দোলন করে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন৷ দেশ-বিদেশের সংবাদমাধ্যমের নজর কেড়েছেন৷ যা দলকে বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছে৷ এর থেকেই প্রমাণ হয়, প্রিয়াঙ্কা তার দাদা রাহুল গান্ধীর চেয়ে অনেক বেশি পরিণত মনস্ক রাজনীতিক৷’

এই ঘটনায় শুধু উত্তর প্রদেশ নয়, গোটা দেশে কংগ্রেস কর্মীরা উজ্জীবিত৷ আড়াই বছর পর উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন৷ মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নাম উঠে আসছে প্রিয়াঙ্কার৷ বিষয়টিকে মোটেই লঘু করে দেখছে না রাজনৈতিক মহল৷ মনে করা হচ্ছে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে ক্রমাগত আইন-শৃঙ্খলার অবনতিকে হাতিয়ার করে প্রিয়াঙ্কার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার বার্তা বেশ স্পষ্ট৷

ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেছেন, ‘কংগ্রেস এখনও শেষ হয়ে যায়নি৷ দুর্দিনে দলকে ঘুরে দাঁড় করাতে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী৷ বলা যেতেই পারে, প্রিয়াঙ্কা দলের সভাপতি রাহুল গান্ধীর তুলনায় অনেক বেশি রাজনৈতিক বিচক্ষণ৷ এমনিতেই প্রিয়াঙ্কার প্রতি তার দলের কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি দেশের সাধারণ মানুষের বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে৷’

সোনভদ্র-কাণ্ডে কংগ্রেসই প্রথম রাজনৈতিক দল, যারা নিহতদের পাশে দাঁড়িয়েছে৷ রাজ্যের আরও দুই বিরোধী দল সপা ও বসপা বিবৃতি দেওয়া ছাড়া এখনও অবধি কোনও পদক্ষেপ করেনি৷ রাজনৈতিক মহল মনে করছে, প্রিয়াঙ্কাকে সামনে রেখে যোগীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গতি আনবে কংগ্রেস৷ রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল হয়ে উঠতে পারে৷ অনেকে আবার এই ঘটনার সঙ্গে অতীতে ইন্দিরা গান্ধীর দলকে ‘শেষ থেকে শুরু’করার উদাহরণ টেনে আনছেন৷ আপাতত বলা যেতেই পারে, দলে রাহুলের বিকল্প হিসেবে নিজেকে মেলে ধরলেন প্রিয়াঙ্কা৷



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রিয়াঙ্কা

২২ জানুয়ারি, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ