পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি ৭ কলেজের অধিভুক্তি বাতিল ইস্যুতে উত্তাল ক্যাম্পাস। গতকাল মঙ্গলবার আন্দোলনের কারণে ছাত্রলীগের হাজার হাজার কর্মী ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না উল্লেখ সমস্যার সমাধান চেয়ে বিশ্ববিদ্যায় প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছে ছাত্রলীগ। এসময় আন্দোলনকারীদের সাথে থাকা ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের ওপর হামলা ও পরবর্তীতে ভিপি নুরুল হক নুরকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ করেছেন তারা। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে হুমকি থাকলেও অধিভুক্তি বাতিলসহ হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল ক্লাস, পরীক্ষা বর্জনসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আন্দোলনকারীরা।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এদিন দুপুরে ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামানের অনুপস্থিতিতে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো. সামাদের কাছে স্মারকলিপি তুলে দেয় ছাত্রলীগ। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে পালন করে সংগঠনটি। এসময় সেখানে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি নিয়ে যাওয়ার আগে তৃতীয় দিনের মত প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা লাগিয়ে কর্মসূচি পালন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় নেতারা প্রশাসনিক ভবনে গেলে সেখানে আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে বাগবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে সেখানে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক উপস্থিত হয়ে কথা বলতে এগিয়ে যান। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ছাত্রীদের সরিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে প্রশাসনিক ভবনের তালা ভেঙ্গে পেলেন। একই সময়ে প্রক্টরিয়াল বড়ির সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল ও অন্যান্য ভবনের তালা ভাঙ্গার খবর পাওয়া যায়।
আখতার হোসেনের অভিযোগ, সেখানে কথা বলতে গেলে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রলীগ কর্মীরা। ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক বলেন, শিক্ষার্থীরা গত কয়েকদিন ধরে ‘লাগাও তালা, বাঁচাও ঢাবি’ কর্মসূচি পালন করে আসছেন। ছাত্রলীগ স্মারকলিপি দিতে গেলে প্রশাসনিক ভবনে আমি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দেখতে যাই। সেখানে ছাত্রলীগের রাব্বানী ভাই, শোভন ও সাদ্দাম ভাইরা ছিলেন। তারা স্মারকলিপি দেয়ার জন্য ভেতরে যায়। তখন আমরা পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সেখান থেকে চলে আসার সময় জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক রাব্বির নেতৃত্বে আমাকে মারধর করা হয়। আখতার বলেন, তারা আমাদের মারবে। আমি ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক, সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলার জন্য আমার ওপর হামলা করার অথরিটি তাদের কে দিলো।’
ছাত্রলীগের নেতারা প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো. সামাদের কাছে সাত কলেজ নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার তড়িৎ ও স্থায়ী সমাধান দাবি করেছেন। এসময় ডাকসুকে ব্যবহার করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ অবলম্বন করায় ভিপি নুরুল হক নুর ও সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনকে ডাকসুতে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানান জিএস ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এসময় তিনি বলেন, ডাকসু থেকে আহ্বান জানানোর পরও যারা আন্দোলনে উসকানি দিয়েছে বিশেষ করে ডাকসুর একজন সম্পাদক সরাসরি জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ডাকসুর রুমে ব্যবহার করে গত তিনদিনে তারা যত তালা ও শিকল ব্যবহার করেছিলো সেটা রেখেছে। এদু’জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ডাকসুতে থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার জন্য আমরা সভাপতি বরাবর স্মারকলিপি দেব।
এদিকে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের ওপর হামলার অভিযোগ এনে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্ট প্রদিক্ষণ করে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এসে শেষ হয়। এসময় আখতারের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু বিচার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। এরপর অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে তারা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে আসলে ছাত্রলীগের কয়েক হাজার নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে এসে তাদের ঘিরে ধরে। এসময় ডাকসু ভিপিকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন রকমের গালাগালি দিতে থাতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো অনেক হামলা হয়েছে কিন্তু তার কোনটির বিচার আমরা পাই নাই। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পর আমি যখন শুনতে এসেছি তখন আপনারা দেখছেন ডাকসুর জিএসের উপস্থিতে আমার ওপর তারা কীভাবে হামলা করেছে। ছাত্রলীগ নানা ঘৃণ্য কর্মকান্ডে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। যে কারণে তারা তাদের এসব কর্মকান্ড চালিয়ে যেতে পারছে। আমরা প্রশাসনের কাছে বার বার বিচার চেয়েও কোনো বিচার পাইনি।
এদিকে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে হুমকি থাকলেও আগামীকালও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মুখপাত্র শাকিল মিয়া বলেন, আন্দোলনে সমর্থন জানানোর কারণে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে। কিন্তু আমরা পিছু হঠবো না। আগামীকালকেও আমাদের আন্দোলন চলবে। আন্দোলনে কোনো বাঁধা আসলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তা প্রতিহত করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ বলেন, আখতারের ওপর হমলার বিচারসহ অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে সকালে প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা দেয়া হবে। এরপর বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।