মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
শত্রু সেনাবাহিনীর কোনও সদস্যকে বাহাদুরি আর অসীম সাহসের জন্য সম্মান জানাচ্ছেন বিপক্ষের এক সেনা অফিসার, এমন ঘটনা বিরল। তার ওপর আবার সেই শত্রু দেশের কাছে সুপারিশও করছেন যাতে ওই সৈনিককে বীরের সম্মান জানানো হয়। ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধে এমন এক ঘটনা ঘটেছিল। টাইগার হিলের যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এক ক্যাপ্টেন, কর্নেল শের খানের বীরের মতো লড়াই দেখে ভারতীয় বাহিনীও মেনে নিয়েছিল যে তিনি সত্যিই এক ‘লৌহপুরুষ’।
সম্প্রতি কার্গিল যুদ্ধের ওপরে ‘কার্গিল: আনটোল্ড স্টোরিজ ফ্রম দা ওয়ার’ (কার্গিল: যুদ্ধ ক্ষেত্রের না বলা কাহিনী) নামের একটি বই লিখেছেন রচনা বিস্ত রাওয়াত। সেখানে তিনি জানান, ‘ক্যাপ্টেন কর্নেল শের খান পাকিস্তানি বাহিনীর নর্দার্ন লাইট ইনফ্যান্ট্রির সদস্য ছিলেন। টাইগার হিলের ৫টি জায়গায় তারা নিজেদের চৌকি তৈরি করেছিল। প্রথমে ভারতের ৮ নম্বর শিখ রেজিমেন্টকে ওই পাকিস্তানি চৌকিগুলো দখল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা ব্যর্থ হয়। তারপরে ১৮ নম্বর গ্রেনেডিয়ার্সদেরও শিখ রেজিমেন্টের সঙ্গে পাঠানো হয়। তারা কোনওরকমে একটি চৌকি দখল করে। কিন্তু ক্যাপ্টেন শের খান পাল্টা হামলা চালান পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে।
প্রথমবারের জবাবী হামলায় ব্যর্থ হয় পাকিস্তানি বাহিনী। কিন্তু সেনা সদস্যদের আবারও জড়ো করে দ্বিতীয়বার হামলা চালান তিনি। যারা ওই লড়াইয়ের ওপরে নজর রাখছিলেন, সকলেই বুঝতে পারছিলেন যে এটা আত্মহত্যার সামিল। সবাই বুঝতে পারছিল যে ওই মিশন কিছুতেই সফল হবে না, কারণ ভারতীয় সৈনিকরা সংখ্যায় অনেক বেশি ছিল।’
সেদিনের ওই যুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ব্রিগেডিয়ার এম এস বাজওয়া। তিনি বলেন, ‘সেদিন যখন টাইগার হিলের লড়াই শেষ হয়েছিল, ওই পাকিস্তানি অফিসারের অসীম সাহসকে স্যালুট না করে উপায় ছিল না। আমি ৭১-এর যুদ্ধেও লড়াই করেছি। কিন্তু কখনও পাকিস্তানি বাহিনীর কোনও অফিসারকে একেবারে সামনে থেকে লড়তে দেখি নি।’ তার কথায়, ‘শের খান অসীম সাহসের সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছিলেন। তাকে থামাতে আমাদের এক সৈনিক মৃতের ভান করে পড়ে ছিল। শের খান কাছে আসলে মাত্র ১০ গজ দূর থেকে সে ফায়ার করে। তার মৃত্যুতে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলার জোর কমে যায়। ওই লড়াইয়ের শেষে আমরা ৩০ জন পাকিস্তানি সৈনিককে দাফন করেছিলাম। কিন্তু আমি সেখান থেকে শের খানের লাশ নীচে নামিয়ে ব্রিগেড হেড-কোয়াটারে রাখার ব্যবস্থা করি।’
শের খানে লাশ পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর সময় তার জামার পকেটে একটা ছোট্ট চিরকুট দিয়েছিলেন ব্রিগেডিয়ার বাজওয়া। তাতে লেখা ছিল, ‘১২ নম্বর নর্দার্ন লাইট ইনফ্যান্ট্রির ক্যাপ্টেন কর্নেল শের খান অসীম সাহসের সঙ্গে লড়াই করেছেন। তাকে তার প্রাপ্য সম্মান জানানো উচিত।’
পাকিস্তানে যখন ক্যাপ্টেন শের খানের দেহ পৌঁছিয়েছিল, তার বড় ভাই আজমল শের তখন বলেছিলেন, ‘আল্লাহর রহমত, যে আমাদের শত্রু দেশেরও দয়া-মায়া আছে। কারণ তারা ঘোষণা করেছে শের খান একজন বীর।’ কর্নেল শের খানকে পাকিস্তানের সব থেকে বড় সম্মান ‘নিশান-এ-হায়দার’ দেওয়া হয়েছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।