পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রসাদ খাইয়ে স্কুলে মন্ত্রপাঠ করানো অন্যায়-বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, একটা এনজিও স্কুলে খাবার বিতরণ করতে পারে। কিন্তু জোর করে বা প্রলোভন দেখিয়ে যদি প্রসাদ খাওয়ায় তাহলে সেটি অন্যায়। তবে আমরা কোনো ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। এর আগে শবে-বরাত নিয়েও আমরা হস্তক্ষেপ করিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান এবং বিচারপতি কে.এম. কামরুল কাদেরের ডিভিশন বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট বারের আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার ‘দৈনিক ইনকিলাব’ এ প্রকাশিত ‘প্রসাদ খাইয়ে স্কুলে শিক্ষার্থীদের হরে কৃষ্ণ হরে রাম মন্ত্রপাঠ’ শীর্ষক সংবাদটি তুলে ধরে আদালতের দৃষ্টিতে আনেন। আদালতের সামনে তিনি প্রকাশিত সংবাদের পুরোটা পাঠ করেন। আদালত মনযোগসহকারে রিপোর্টটি শোনেন। পরে অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার আদালতে বলেন, এক ধর্মের রীতিনীতি অন্য ধর্মের মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়া আমাদের সংবিধান সমর্থন করে না।
এ পর্যায়ে আদালত বলেন, একটি এনজিও স্কুলে খাবার বিতরণ করতেই পারে। কিন্তু জোর করে বা প্রলোভন দেখিয়ে যদি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রসাদ খাওয়ায় তাহলে সেটা অন্যায়। তবে আমরা কোনো ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। এর আগে শবে-বরাত নিয়েও আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করিনি। এখন যদি বিসমিল্লাহ বলে কেউ অন্য কোনো ধর্মের মানুষকে খাওয়ানো হয় সেটা কেমন হতো? আপনারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেন। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি আছে, স্থানীয় প্রশাসন আছে তাদেরকে বলুন।
তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, আদালত আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল। আমরা আগে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাবো। সেখানে প্রতিকার না পেলে আমাদের আবার আপনাদের কাছে (আদালত) আসতে হবে।
প্রসঙ্গত: গতকাল বৃহস্পতিবার ‘দৈনিক ইনকিলাব’ এ ‘প্রসাদ খাইয়ে স্কুলে শিক্ষার্থীদের হরে কৃষ্ণ হরে রাম মন্ত্র পাঠ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কুলে শিক্ষার্থীদের প্রসাদ খাওয়ালো আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ-ইসকন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রথযাত্রা উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী ‘ফুড ফর লাইফ’ কর্মসূচির আড়ালে গত ১১ জুলাই থেকে চট্টগ্রাম নগরীর অন্তত: ৩০টি স্কুলের শিক্ষার্থীর মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। ইসকন কর্মীদের শেখানো মতে, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’ মন্ত্র পাঠ করে এ প্রসাদ গ্রহণ করে। শোক-মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রসাদ গ্রহণে উৎসাহিত করায় অনেক শিক্ষার্থী তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরণের নজিরবিহীন কর্মসূচিতে বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে এ ধরনের ঘটনায় বিস্ময় ও নিন্দা প্রকাশ করে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত কৃষ্ণ কুমারী স্কুলে প্রসাদ বিতরণ করে ইসকন কর্মীরা। ওই স্কুলে তখন ৮০০ ছাত্রী উপস্থিত ছিল। শিক্ষার্থীরা জানান, ইসকনের কর্মীরা তাদের প্রসাদ গ্রহণ করার আগে মন্ত্রপাঠ করতে বলে। হিন্দু শিক্ষার্থীদের অনেকে মন্ত্র পাঠে খাবার গ্রহণ করলেও মুসলিম এবং বৌদ্ধ মেয়েদের অনেকে তাতে বিরক্তি প্রকাশ করে। অনেকে খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক আহমেদ হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, রথযাত্রা উপলক্ষে ইসকনের কর্মীরা স্কুলের ছাত্রীদের মাঝে খাবার বিতরণ করেছে। শিক্ষার্থীদের অনেকে ইসকন কর্মীদের শেখানো নিয়ম অনুযায়ী এ খাবার খেয়েছে। তবে অনেকে খাবার খায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।