Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাধার মুখে সদ্য বদলি হওয়া এমডি ফজলুর রহমান খনি অফিসে ঢুকতে পারেনি

দিনাজপুর সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৯, ৭:৫৫ পিএম

অদক্ষতা, বিধি বহির্ভূত নানা কর্মকাণ্ডে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভের মুখে পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি-চলতি দায়িত্ব) ফজলুর রহমানকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এমডি ফজলুর রহমানকে গতকাল মঙ্গলবার কয়লা খনি এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে।

গতকাল বুধবার সকাল থেকে খনির কর্মকর্তা-কর্মচারীতে খনি গেটে অবস্থায় নেয় যাতে করে ফজলুর রহমান খনিতে প্রবেশ করতে না পারে। সেই সাথে এমডি’র দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ অবস্থায় খনি গেটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বেলা ২ টার দিকে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহানুল হক ও পার্বতীপুর মডেল থানার ভারপ্তাপ্ত কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান খনিতে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শান্ত থাকার আহবান জানান।

বিসিএমসিএল শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ জানান- এমডি ফজলুর রহমান অফিস করলেই তাদের ক্ষতি করবে। এমডি’র অত্যাচারে তারা অতিষ্ঠ হয়ে তাকে কয়লা খনিতে অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হয়েছে। এরপরও তিনি যদি খনিতে প্রবেশের চেস্টা করেন তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অশান্ত হয়ে উঠবে। এ ব্যাপারে ফজলুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, গত বছরের আগস্টে ফজলুর রহমান বিসিএমসিএল-এ ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে যোগদান করেই ব্যবস্থাপক (মাইনিং) মোশাররফ হোসেনের প্ররোচনায় নানা অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ করেন একাধিক খনি কর্মকর্তার। গত জানুয়ারী মাসে প্রফিট বোনাস আটকে রেখে খনির ১৪৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রত্যেকের নিকট ৪০ হাজার টাকা করে প্রায় ৬০ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু বিষয়টি কয়েকটি সংবাদপত্রে ফাঁস হয়ে গেলে তা ভেস্তে যায়। তবে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ নিজ বিভাগে টাকা জমা দিয়েছেন যা তারা আজও ফেরত পাননি। ক্ষুব্ধ এমডি সংবাদকর্মীদের ভবিষ্যতে কোনো তথ্য না দিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্কপত্র, বদলি, গণহারে শো’কজ, পরামর্শপত্র ও এসিআর খারাপ দেয়ার হুমকি প্রদান অব্যাহত রাখে বলে অভিযোগ উঠেছে। ৬০ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল বলে পেট্রোবাংলা কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি প্রমাণ পায়। পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) জোবায়েদ আলীর নেতৃত্বে গঠিত ওই তদন্ত কমিটি কয়লা উৎপাদন পরিকল্পনা ও সুষ্ঠভাবে কোম্পানী পরিচালনা কাজে অধিকতর গুরুত্ব দেওয়ার পরিবর্তে সাধারণ কারণে বদলী, কারণ দর্শানো, পরামর্শপত্র প্রদান, কোম্পানীর পূর্ববর্তী কর্মকর্তাদের বিষয়ে বিরুপ সমালোচনার মাধ্যমে গ্রæপিং সৃষ্টি এবং কোন কোন কর্মকর্তাকে নিয়ম বহির্ভূত সুবিধা প্রদান করায় খনির ভবিষ্যৎ অগ্রগতি বাধাগ্রস্থ হতে পারে বলে সম্প্রতি প্রতিবেদন দিয়েছে।

এছাড়া, কোল মাইন অফিসার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন ও বিসিএমসিএল শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন এমডির অপসারণ দাবি করে লিখিত অভিযোগ দাখিল করে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যানের নিকট। এসব কিছু বিবেচনায় নিয়ে গত সোমবার বিকেলে পেট্রোবাংলা এক অফিস আদেশে ফজলুর রহমানকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনিতে বদলি করে। একই সাথে মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনির এমডি মো: যাবেদ চৌধুরীকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এমডি’র (চলতি দায়িত্ব) দায়িত্ব দেওয়া হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাধা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ