পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মরা পদ্মায় বান ডেকেছে। ফারাক্কার বিরুপ প্রভাবের কারণে বছরের বেশির ভাগ বালিচরের নীচে চাপা থাকলেও আষাঢ়-শ্রাবণে ফের জেগে ওঠে। এবার একেবারে বিদায় লগ্নে আষাঢ় খানিকটা ভারী বৃষ্টি ঝরিয়েছে। সাথে ফারক্কার ওপারেও বিশেষ করে বিহার রাজ্য ও মালদায় পানির চাপ বাড়ায় ফারাক্কার কয়েকটি গেট খুলে দেয়ায় মরা পদ্মায় শুরু হয়েছে ঘোলা পানির স্রোত। পদ্মায় প্রতিদিন গড়ে ত্রিশ চল্লিশ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। গতকাল পানির মাপ ছিল প্রায় ১৩ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। বিপদসীমা হলো ১৮ দশমিক পঞ্চাশ সেন্টিমিটার। এখনো অনেক নীচেই রয়েছে পানির প্রবাহ। সাধারণত পানি বাড়ার প্রবণতা থাকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত।
পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন পদ্মায় পানি বাড়া কমা সবকিছু নির্ভর করে ভারতের ফারাক্কা ব্যারেজের উপর। এপারের বর্ষণ নদীর পানি বাড়ানোয় তেমন ভূমিকা নেই। রাজশাহী অঞ্চলে পদ্মা ও মহানন্দার পানি বৃদ্ধি পেলে বন্যা দেখা দেয়। যখন চীন ও ভারতে বেশী বৃষ্টিপাত হয় তখন পানির চাপ বাড়ে। ফারাক্কা সংলগ্ন জেলা মালদা ও বিহার রাজ্যে বন্যা দেখা দেয়। সেই বন্যার চাপ সামলাতে ফারাক্কার প্রায় সবকটি গেট খুলে দেয়া হয়। প্রবল বেগে ধেয়ে আসে পানি। আর গত সাড়ে চল্লিশ দশকে প্রমত্ত পদ্মার বুকে বালি জমতে জমতে নদীর তলদেশ আঠারো মিটার ভরে গেছে। এক সময়ের প্রমত্ত পদ্মা বছরের দশ মাস খাল সদৃশ্য রুপ নিয়ে ক্ষীণ ধারায় বয়ে চলে। ফলে বর্ষার সময় ওপারের আসা পানি ধারণ না করতে পেরে দুক‚ল ছাপিয়ে যায়। একুটুতে দেখা দেয় বন্যা। এটাই পদ্মা পাড়ের মানুষের নিয়তি হয়ে দাড়িয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, ওপারের বন্যার চাপ কমাতে ফারাক্কার সবকটি গেট এক সাথে খুলে দিলে যেমন আমাদের এখানে বন্যা হয়। আবার ওপারের বন্যার পানির চাপ কমে গেলে দ্রæত ফারাক্কার পাষান গেট গুলো ফের বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময় ক্ষতিটা আরো বেশী হয়। কার তাড়াতাড়ি পানি নেমে যাওয়ার কারণে ভাঙনের প্রবণতা বেড়ে যায়। এ সময়টা রাজশাহী নগরী পড়ে ভাঙনের ঝুঁকিতে।
পদ্মা নদী সংলগ্ন রাজশাহী মহানগরীর পাশ দিয়ে শহর রক্ষা বাঁধ রয়েছে এগারো কিলোমিটার। সোনাইকান্দি থেকে বুলনপুর, শ্রীরামপুর থেকে পঞ্চবটি পর্যন্ত তীর সংরক্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু পঞ্চবটি থেকে পূর্বে তালাইমারী পর্যন্ত তীর সংরক্ষণ করা হয়নি। গ্রোয়েন টি-বাঁধ ও পঞ্চবটি আই বাঁধ দিয়ে নদীর স্রোতকে কোল থেকে দক্ষিণে ঠেলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নদী তীর সংরক্ষণ ও গ্রোয়েন দুটির অবস্থা ভীষণ নাজুক। প্রতি বছর বন্যার সময় ঝুঁকি হয়ে দেখা দেয়। সিসিবøক জিও ব্যাগে বালির বস্তা ফেলে পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা চলে। রক্ষায় ব্যায় হয় কোটি কোটি টাকা।
গতকাল নগরীর তালাইমারী হতে সোনাইকান্দি পর্যন্ত নদীর তীর পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় পদ্মার কোলে ঘোলা পানি জমতে শুরু করেছে। মূল নদীর স্রোত রয়েছে তীর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে। তালাইমারী হতে পঞ্চবটি আই বাঁধ পর্যন্ত তীর সংরক্ষন নেই। আবার উত্তরে শহর রক্ষা বাঁধও অবৈধ দখলে। পঞ্চবটি আইবাঁধ হতে সেখেরচক হয়ে শ্রীরামপুর পর্যন্ত তীর সংরক্ষণ করা হয়েছে। সে গুলোর অবস্থাও নাজুক। ১৯৯৮ সালে নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা স্বীকার করে বলেন ১৯৯৮ সালে তীর সংরক্ষণ কাজ করার পর তেমন কিছুই আর করা হয়নি। শহর রক্ষা মূল গ্রোয়েন টি-বাঁধের পশ্চিমে বাঁধের অবস্থা ভীষন নাজুক। ঝুকির মুখে রয়েছে বাঁধ সংলগ্ন রাজশাহী পুলিশ লাইন ও মেট্রোপলিটন পুলিশ ব্যারাক।
বাঁধের অবস্থা সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, দেড়শো মিটার স্থান বেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। স্থানটি সম্পন্নভাবে নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা করে আটকোটি টাকার প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল তা অনুমোদন পায়নি। তবে এবারো ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।