পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ-ভারত গঙ্গার পানিচুক্তির দুই যুগপূর্ণ হয়েছে। তবে চুক্তি অনুয়ায়ী কোনো বছরেই ভারত বাংলাদেশকে পানি দেয়নি। প্রতিবেশি দেশটি বাংলাদেশকে পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে সবসময়ই বঞ্চিত করে আসছে। চুক্তির দুই যুগপূর্তির বছর এবারও গত বছরের তুলনায় ১৪ হাজার কিউসেক পানি কম পেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ-ভারত গঙ্গা পানিচুক্তির আলোকে গতকাল পদ্মা নদীতে যৌথ পর্যবেক্ষণ দলের পানি পরিমাপ শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের ছয় সদস্যের বিশেষজ্ঞ টিম পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি পরিমাপের কাজ শুরু করছেন। ৩১ মে পর্যন্ত এ পরিমাপ ও পর্যবেক্ষণ চলবে। গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় এবার একই সময়ে পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে অন্তত ১৪ হাজার কিউসেক পানি কম বিদ্যমান রয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী রইচ উদ্দিন গতকাল ইনকিলাবকে জানান, প্রতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ শুরু হয়। কিন্তু এবার বছরের প্রথম দিন শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় ২ জানুয়ারি থেকে পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ শুরু হয়েছে। গতকাল পরিমাপ করা হয়েছে ৭৮ হাজার ২শ’ ৪৪ কিউসেক। তিনি বলেন, এ পানির পরিমাপের চেয়ে প্রকৃত পানি প্রাপ্তির পরিমাপ আরও কম হবে। কারণ আমরা পদ্মায় যে পানি পাচ্ছি সেটা মহানন্দা হয়ে আসছে। আর পদ্মায় যখন পানি মাপা হচ্ছে তখন আমাদের নদীতে আগে যে পরিমাণ পানি ছিল সেটা ধরে মাপা হচ্ছে। তাই আমাদের নদীতে যে রিজার্ভ পানি ছিল সেটা বাদ দিলে ভারত থেকে প্রকৃত পানি প্রাপ্তির পরিমাণ আরও কম হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, ভারত থেকে দু’জন আর বাংলাদেশ থেকে চারজনের বিশেষজ্ঞ টিম পর্যবেক্ষণে কাজ করছেন। ভারতের প্রতিনিধিরা হলেন- সেদেশের কেন্দ্রীয় নদী কমিশনের (সিডবিøউসি) উপ-পরিচালক (ডিডি) শ্রী ভেংক্টেশ্বর লুই এবং সিডবিøউসির সহকারী পরিচালক (এডি) নগেন্দ্র কুমার। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে রয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুদ্দিন আহমদ, নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম, নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন মিয়া এবং উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সিব্বির হোসেন।
পাউবোর তথ্যমতে, বর্তমানে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে প্রায় ৭৮ হাজার কিউসেক পানি বিদ্যমান। গত বছর ১ জানুয়ারি থেকে প্রথম ১০ দিনে ফারাক্কা পয়েন্টে গঙ্গায় এক লাখ ৬১ হাজার কিউসেক পানি ছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল ৬০ হাজার ৬১ কিউসেক এবং ভারতের ৪০ হাজার কিউসেক পানি। একই সময় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির পরিমাণ ছিল এক লাখ দুই হাজার ৫৭৪ কিউসেক পানি। গত বছরের তুলনায় এবার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে অন্তত ১৪ হাজার কিউসেক পানি কম বিদ্যমান। চুক্তির শর্তানুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে প্রতি ১০ দিন পর পর পানি প্রাপ্তির তথ্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে এবং তা ৩১ মে পর্যন্ত চলবে।
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ৩০ বছর মেয়াদি পানিচুক্তি স্বাক্ষর হয় ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের হায়দারাবাদ হাউজে। পরবর্তী বছর ১৯৯৭ সালে ১ জানুয়ারি থেকে দু’দেশের মধ্যে ভারতের অংশে গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগি চুক্তি কার্যকর শুরু হয়। বাংলাদেশের পক্ষে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের পক্ষে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
চুক্তির সিডিউল অনুযায়ী প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমের পাঁচ মাস অর্থাৎ ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত এ চুক্তি কার্যকর হবে। পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে এ পানির প্রবাহ পরিমাপ করা হয়। দু’দেশের প্রকৌশলী ও পানি বিশেষজ্ঞরা প্রতি মাসে তিন দফা অর্থাৎ ১০ দিন পর পর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি প্রবাহের পরিমাপ রেকর্ড করে তা যৌথ নদী কমিশনের কাছে উপস্থাপন করেন। যদিও চুক্তি অনুয়ায়ী কোনো বছরেই ভারত বাংলাদেশকে পানি দেয়নি। তারা বাংলাদেশকে পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করে আসছে। ফলে দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প, পাবনা সেচ ও পানি উন্নয়ন প্রকল্প, পানাসি প্রকল্প, বরেন্দ প্রকল্পসহ দেশের বৃহত্তম বিভিন্ন প্রকল্পের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে আধুনিক প্রযুক্তি ও সেচ পাম্প ব্যবহার করেও জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ অঞ্চলের ছোট ছোট নদীগুলোও ক্রমশ মরে যাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।