পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরে বাহিরে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তাদের হাইব্রিড, কাউয়াসহ নানা নামে অভিহিত করা হয়েছে। এদের দল থেকে বাদ দেয়া হবে, বের করা হবে বলে নানান হুমকি ধামকিও দেয়া হয়েছে। দেশব্যাপি শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে বলেও জানানো হয়েছিল। কিন্তু আদৌ কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আবার সম্প্রতি বিএনপি থেকে আসা দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হয়েছেন। এ নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রশ্ন তাহলে অনুপ্রবেশকারীদের কি হবে?
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে রয়েছে দুই মত। এক পক্ষের মতে, সারাদেশে তালিকা করে অনুপ্রবেশকারীদের বাদ দেয়া হবে। আরেক পক্ষের মতে, অনুপ্রবেশকারী বলতে কিছু নেই। এ নিয়ে কথা বলারও দরকার নেই। সংগঠন সংগঠনের গতিতে চলছে। প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর পূর্ণ করে গত ২৩ জুন থেকে ৭১-এ পা রেখেছে আওয়ামী লীগ। সাত দশকে দলটির গৌরব, ঐতিহ্য, সাফল্য ও অর্জনের অজস্র ইতিহাস ও স্মারক থাকলেও নেতাদের বিতর্কিত কর্মকাÐ ও অন্য দল থেকে এসে কমিটিতে পদ পাওয়া অর্থাৎ অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে বেজায় অসন্তুষ্ট ক্ষমতাসীনরা। বিভিন্ন সময়ে নেতাদের বিতর্কিত কর্মকাÐের কারণে দলের সমালোচনা হলেই উঠে আসে ওই নেতা বিএনপি বা জামায়াত থেকে দলে অনুপ্রবেশ করেছে এবং পরিকল্পিতভাবে বিতর্কিত কাজ করে দলের ইমেজ ক্ষুণœ করছে- এমন দাবি করতে দেখা গেছে ক্ষমতাসীন নেতাদের।
তবে এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি। দলের নীতি-নির্ধারণী সূত্র বলছে, সরাসরি কোন ব্যবস্থাই নেয়া হবে না কিন্তু ধীরে ধীরে বিতর্কিতদের বাদ দেয়া হবে তবে তা সময় ও পরিস্থিতি সাপেক্ষ। কিন্তু তালিকা করে অনুপ্রবেশকারীদের দল থেকে বাদ দেয়া কঠিন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন সম্পাদক মÐলীর সদস্য বলেন, তালিকা করে অনুপ্রবেশকারীদের সরাসরি দল থেকে বাদ দেয়া কঠিন। এতে দলের শৃঙ্খলা নষ্ট হবে। এছাড়া কে অনুপ্রবেশকারী তা খুঁজতে গেলে কাউকেই পাওয়া যায় না কারণ সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক তাদের পক্ষে অবস্থান নেন এবং তাদের রক্ষা করেন। এক্ষেত্রে টেকনিক্যালী অনুপ্রবেশকারীদের বাদ দিতে গেলেও কয়েকটি কমিটি গঠন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একটি দৃষ্টি ভঙ্গি হল জেলা বা মহানগরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক যাদের নিয়ে সংগঠন চালাতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন তাদেরকে নিয়েই কমিটি করবেন। এতে ভারসাম্য থাকে। তবে অবশ্যই বিতর্কিত কেউ যেন কমিটিতে না আসে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখে কেন্দ্র।
আরেকজন সম্পাদক মÐলীর সদস্য ইনকিলাবকে বলেন, দলের মূল পদ থেকে বিতর্কিতদের রাখা হবে না। আবার তাদের বাদও দেয়া হবে না। অর্থাৎ উপদেষ্টা বা অগুরুত্বপূর্ণ পদে তাদের রাখা হবে। তিনি বলেন, এটা দলের কৌশল। বিরুপ পরিস্থিতিতে যেন তাদের আবার কাজে লাগানো যায়।
সূত্র জানায়, যেকোন এলাকায় রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের দুইটি প্যানেল কাজ করে। একটি সভাপতি আরেকটি সাধারণ সম্পাদকের। তারা তাদের সুবিধা মত নিজের হাতকে শক্তিশালী করতে একটি কর্মীবাহিনী তৈরী করেন। এখানে নিজের স্বার্থে তারা যে কাউকে নিয়ে নেন।
সূত্র আরো জানায়, যারা ত্যাগী বা নিবেদিত বলে নিজেদের দাবি করেন তাদেরও দোষ রয়েছে। যেখানে নতুন কমিটি হয়, সভাপতি সাধারণ সম্পাদক নতুন দায়িত্ব পান; এসব ত্যাগীরা তাদের কাছে না যেয়ে তাদের সমালোচনা করেন, দাম দিতে চান না। ফলে পদ পাবার পর নিজেকে শক্তিশালী করতে অনেক সময় দলের সিনিয়র ও ত্যাগী কর্মীদের কাছে না পেয়ে যাকে তাকে নিজের কাছে স্থান দেন।
গতকাল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কর্মী সমাবেশে বক্তারা দাবি জানান, কোন হাইব্রিড, অনুপ্রবেশকারীকে যেন পদ দেয়া না হয়। ত্যাগীদের যেন মূল্যায়ন করা হয়। এখানেও কর্মীদের মূল্যায়ন ও অবমূল্যায়ন নিয়ে নানা কথা রয়েছে। এখানে তিনিট গ্রæপ সক্রিয় একটি-সভাপতি আবুল হাসনাত, দ্বিতীয়টি সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের, তৃতীয়টি ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র সাঈদ খোকনের। মহানগর নেতাদের সঙ্গে কথা বললে অনেকে মন্তব্য করেন, সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের রাজনীতি না করে তৃতীয় আরেকজনের রাজনীতি করলে কিভাবে ওই নেতা পদ পাবেন।
সম্প্রতি ঢাকা উত্তর ছাত্রলীগের কয়েকটি থানার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। দক্ষিণ খান থানার ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন নাহিদুল হক ডিয়ার। তিনি আগের কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ছিলেন। তিনি কোন পূণাঙ্গ কমিটির কোন পদ পাননি কারণ বর্তমান সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক কারো রাজনীতি তিনি না করে সরাসরি সভাপতি পদপ্রার্থী হয়েছিলেন। অথচ থানার পূণাঙ্গ কমিটিতে পদ পেয়েছে কৃষক দল ও যুবদলের দুইজন কর্মী। কৃষক লীগের কর্মী আমানউল্লাহ হয়েছেন থানার সহ-সভাপতি এবং যুবদলের কর্মী ও নাশকতা মামলায় জেলখাটা আসামী শেখ আবির হয়েছেন থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ কয়েক নেতা জানান, টানা ১০ বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকায় দলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শবিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অনেক অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছেন। যারা বিভিন্ন সময়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। গত দশ বছরে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠাকিভাবে সারা দেশে জামায়াত-শিবির, বিএনপি ও অন্যান্য দলের কমপক্ষে ৬০ হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক আওয়ামী লীগে যোগ দেন। অনেকে অতীতের পরিচয় গোপন করছেন, আবার অনেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে দলে ভিড়েছেন বলেও অভিযোগ আছে। অতীতের নানা মামলা থেকে রেহাই পেতেও অনেকে এখন সরকারি দলের ছায়ায় আছেন।
অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে সম্প্রতি বেশ সোচ্চার আওয়ামী লীগের সভাপতিমÐলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, এখন সবাই আওয়ামী লীগ হয়ে গেছে। এদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান দলের সাংগঠনিক সফর সম্পর্কে বলেন, সংগঠনের ভেতরে কোনো অশুভ শক্তি আছে কি না, কোনো অনুপ্রবেশকারী আছে কি না, এসব বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ ইনকিলাবকে বলেন, দলের অনুপ্রবেশ বলতে কিছু নেই। সভাপতিমÐলীর সদস্য কর্ণেল (অব.) ফারুক খান ইনকিলাবকে বলেন, আজ দলের উপদেষ্টা ও কার্যনির্বাহি কমিটির বৈঠক আছে। আগামী দিনে সংগঠন কিভাবে চলবে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ হবে এবং সংগঠনের বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।