মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বৌদ্ধবাদ ও জাতীয়তাবাদের প্রতিচ্ছেদ গবেষক ডেনমার্কের আরহাস বিশ^বিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানী মিকায়েল গ্রেভারস বলেন, বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বলছেন যে তারা কখনোই সহিংসতা অনুমোদন করেন না। কিন্তু একই সাথে তারা বলছেন যে বৌদ্ধবাদ বা বৌদ্ধ রাষ্ট্রকে যে কোনো উপায়ে রক্ষা করতে হবে।
পিউ রেসার্চ সেন্টারের মতে শ্রীলংকা, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, লাওস ও থাইল্যান্ড- এই পাঁচটি দেশে থেরাভাদা বৌদ্ধরা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ। শুনে আশ্চর্য মনে হতে পারে যে তারাও নিজেদের অবরুদ্ধ বলে মনে করে। বৌদ্ধবাদ অনুসারীরা বিশে^র ধর্মানুসারীদের মাত্র ৭ শতাংশ হলেও এটাই একমাত্র ধর্ম যার জনসংখ্যা আগামী কয়েক দশকেও ব্যাপক সংখ্যায় বাড়বে না। এদিকে মুসলিমরা বিশ^ জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ হলেও তাদের সংখ্যা দ্রæত বাড়ছে যার অন্যতম কারণ উচ্চ জন্মহার। পিউ-এর হিসাবে, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশে^ মুসলমানরা সংখ্যার দিক দিয়ে খ্রিস্টানদের কাছাকাছি পৌঁছবে। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মুসলিমদের এই প্রবণতা নিয়ে বহু কথা বলেছে ও বলছে যে তাদের ধর্ম এখন অস্তিত্ব সঙ্কটের সম্মুখীন।
জিনটোটায় তার দেয়াল ঘেরা আস্তানায় সুমেধানন্দ থেরো এক বিবর্ণ পূর্বাভাস দেন। তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তির মৃত্যু গ্রহণযোগ্য। কিন্তু কোনো জাতি বা ধর্মের মৃত্যু হলে আপনি তা কখনোই ফিরে পাবেন না। মে মাসে মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে হাজার হাজার লোকের সমাবেশে বৌদ্ধ ভিক্ষু অশিন উইরাতু সামরিক বাহিনীর প্রশংসা করেন। মুসলিম বিদ্বেষী মন্তব্যের জন্য একবার তার জেল হয়েছিল। ২০১৭ সাল থেকে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। সেনাবাহিনী ও তাদের মিত্ররা, বৌদ্ধ জনতা ও দেশের নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা করেছে। পুরুষদের হত্যার পর পরিবারের নারীদের ধর্ষণ করে। শত শত গ্রাম সম্পূর্ণ রূপে নিশ্চিহ্ন করে তাদের বিরুদ্ধে জাতিগোষ্ঠীগত নির্মূলকরণ অভিযান চালায়।
অশিন উইরাতু বৌদ্ধ ধর্মের অহিংসার শিক্ষাকে প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি সমাবেশে বলেন, সামরিক বাহিনীর ঘনিষ্ঠ আইন প্রণেতারা বুদ্ধের মত মর্যাদা লাভের দাবি রাখেন। তিনি আরো বলেন, একমাত্র সামরিক বাহিনীই আমাদের দেশ ও ধর্ম উভয়কে রক্ষা করতে পারে।
অক্টোবরে আরেক প্রতিবাদ সমাবেশে অশিন রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের জন্য মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসির মামলা দায়েরের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেন। তারপর তিনি অস্ত্র হাতে নেয়ার আহŸান জানান। নিউইয়র্ক টাইমসের সাথে এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, আইসিসি যেদিন এখানে আসবে সেদিন আমি হাতে অস্ত্র তুলে নেব।
জাতিসংঘে বিশেষজ্ঞরা বলেন, মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেলদের গণহত্যার জন্য বিচার করা উচিত। তবে দেশের নৈতিক বিবেক হিসেবে পরিচিত মিয়ানমারের বৌদ্ধ ধর্মীয় ভিক্ষুদের কয়েকজন এ রক্তপাতের নিন্দা করেছেন। তার পরিবর্তে তারা রোহিঙ্গাদেরকে বৌদ্ধদের সোনার দেশ লুন্ঠনকারী বলে উল্লেখ করেন।
গত মে মাসে সামরিক বাহিনীর সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগি করা মিয়ানমারের বেসামরিক সরকার অশিন উরাতুর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তবে তার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ আনা হয়নি। বরং তার বিরুদ্ধে অং সান সু চি বিরোধী রাষ্ট্রদ্রোহী মন্তব্য করার অভিযোগ করা হয়েছে।
তবে অশিন পালাবার জন্য তেমন কোনো চেষ্টা করেননি এবং সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করা অব্যাহত রেখেছেন। যদিও পুলিশ বলছে যে তাকে তারা খুঁজে পাচ্ছে না। অনুপস্থিতিতেই তার বিচার করা হবে। অশিন উইরাতুর মত ভিক্ষুরা বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদের উগ্রপন্থার পতাকা উড়িয়েছেন। কিন্তু তাদের সাথে যোগ দিয়েছেন আরো আরো বহু সম্মানিত ধর্মনেতাও। (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।