Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইহ্সানকারীদের আল্লাহ ভালোবাসেন

ফিরোজ আহমাদ | প্রকাশের সময় : ১২ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৭ এএম

ইহ্সান মানুষের চরিত্রের ন্যায় অমুল্য সম্পদ। ইহ্সানের গুনাবলীর জন্যেই মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। ইহসানের গুনাবলী সম্পন্ন মানুষকে আল্লাহ ভালোবাসেন। ইহ্সানকারীদের আল্লাহ ভালোবাসেন বলেই, তাঁরা সমাজ রাষ্ট্রে ষ্মরণীয়-বরণীয় হয়ে থাকেন। একজন মোমিনের দৈনন্দিন ব্যক্তিগত, পরিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ইহসানের গুরুত্ব অপরিসীম। ইহ্সানের গুনাবলী একজন সাধারণ মানুষকে অনন্য মহৎ মানুষের স্বীকৃতি এনে দেয়। আল্লাহ তায়ালা একে অপরের প্রতি ইহ্সান করার জন্যে নির্দেশ দিয়েছেন। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ইহ্সান কর। কেননা আল্লাহ ইহ্সানকারীদের ভালোবাসেন।’ (সূরা বাকারা:১৯৫)।

যারা একে অপরের প্রতি ইহ্সান করবে, আল্লাহ তায়ালা দুনিয়া ও আখেরাতে ইহ্সানকারীদের সাথে থাকবেন। মহান আল্লাহ তায়ালা যদি ইহকাল ও পরকালে কারো সাথে থাকেন, তাহলে ঐ ব্যক্তির কোথাও কোনো ভয় নেই। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ইহ্সানকারীদের সাথে আছেন।’ (সূরা আনকাবূত:৬৯)।

ইহ্সানের সাথে যারা আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পন করবে, তারাই সফলকাম। ইহ্সানের গুনাবলী অর্জন করা ছাড়া কখনও একজন ব্যক্তি পরিপূর্ণ আত্মসমর্পনকারী হতে পারবে না। এজন্যে তাসাউফ অনুশীলনকারী ব্যক্তি মাত্রই ইহ্সানকে পথ চলার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেন। তারা সদা-সর্বদা অপরের প্রতি ইহ্সান প্রদর্শন করে থাকেন। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘ইহ্সানকারীরূপে যে ব্যক্তি পূর্ণাঙ্গভাবে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পন করে সে ব্যক্তি দৃঢ়ভাবে মজবুত হাতল ধারন করেছে।’ (সূরা লুকমান:২২)।

ইহ্সানের পুরস্কার প্রাপ্ত ব্যক্তিই ইনসানে কামেল। ইহ্সানের গুনাবলী সম্পন্ন ব্যক্তিই কামেল সাধক অলী আউলিয়া। অন্যের প্রতি ইহ্সানকারী ব্যক্তি সব সময় আল্লাহ তায়ালার ক্ষমা প্রদর্শনের কথা বলেন। আল্লাহর করুণা লাভের পথে আহŸান করেন। যে ব্যক্তি অপরের প্রতি ইহ্সান করবে, আল্লাহ তার প্রতি ইহ্সান করবেন। যে ব্যক্তি অপরের প্রতি ইহ্সান প্রদর্শন করবে না, আল্লাহও ঐ ব্যক্তির প্রতি ইহ্সান করবে না। এজন্যে কামেল অলী আউলিয়ারা তাদের ঘোর বিরোধী দুশমনের প্রতিও কঠোর হন না। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘উত্তম কাজের জন্য উত্তম পুরস্কার ছাড়া আর কি হতে পারে?’ (সূরা রহমান:৬০)।

ইহ্সান আল্লাহর ভালোবাসা লাভের অনন্য উপায়। হযরত আবূ হোরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা:) এরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন তখন তিনি হযরত জিবরাইল (আ:)কে ডেকে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন, অতত্রব তুমিও তাকে ভালোবাস। তখন হযরত জিবরাইল (আ:) ও তাকে ভালোবাসেন। এরপর হযরত জিবরাইল (আ:) আসমানবাসীদের মধ্যে ঘোষনা করে দেন যে, আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন, সুতরাং তোমরাও তাকে ভালোবাস। তখন আসমানবাসীও তাকে ভালোবাসতে থাকে। এরপর পৃথিবীতেও তাকে গ্রহণ করার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।’ (বোখারি:২৯৮২)। সুতরাং আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে আমাদেরকে একে অপরের প্রতি ইহসান করতে হবে। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুক। আমীন।
(লেখক: ইসলামিক চিন্তাবিদ ও গবেষক)।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আল্লাহ

৩১ জুলাই, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ