Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বেচা-কেনা

খুলনা-মংলা সড়কের পাশে তিন বাজার

মংলা থেকে মনিরুল ইসলাম দুলু | প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৭ এএম

খুলনা-মংলা মহাসড়কের পাশে প্রায় ৪০ বছর ধরে চলছে দিগরাজ বাজার, ভাগা ও গুনাই বাজার। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এলাকাবাসীকে বাজারে আসতে হচ্ছে। প্রায় নিয়মিত ছোট-খাটো দুর্ঘটনা ঘটলেও ২০০৮ সালে ভাগা বাজারের রাস্তার পাশে ট্রাক ওঠে গিয়ে মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাণহানি ঘটে চারজনের আর আহত হন ১১ জন। এরকম ঝুঁকিপূর্ন স্থানে বাজার থাকলেও বিষয়টি নিয়ে কোন পদক্ষেপ নেই জনপ্রতিনিধিদের।

এলাকাবাসীর সাথে আলোচনা করে জানা যায়, বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের দিগরাজ বাজার ও রামপাল উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাগা ও গুনাই বাজার ১৯৮০-৮১ সাল থেকে খুলনা- মংলা মহাসড়কের পাশে বসছে। ভাগাবাজার সপ্তাহের প্রতি শুক্র ও মঙ্গল, গুনাই বাজার সোম ও শুক্র এবং দিগরাজ বাজার রোববার ও বৃহস্পতিবার বসে। মহাসড়কের দুই পাশেই বাজার বসে। প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে অন্য কোন বাজার না থাকায় বাজার সংশ্লিষ্ট চার-পাঁচ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার লোক সপ্তাহের বাজার করতে এই বাজারে আসে।

সরেজমিনে বাজারে দেখা যায়, সড়কের দুই পাশেই বাজার বসছে। কাঁচা বাজার থেকে শুরু করে মাছ-মাংস সবই বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা রাস্তা পার হয়ে দুই পারেই গিয়ে সদাই কিনছেন। অনেকে সচেতনভাবে রাস্তা পার হলেও অধিকাংশই রাস্তা পার হচ্ছেন বেখেয়ালে। বাজারের কাছে এসে সব ধরনের যানবাহনই গতি মন্থর করতে বাধ্য হচ্ছে। কোন কোন সময় গাড়ি একদম বন্ধ করে দিতে হচ্ছে।

কাটাখালী গ্রাম থেকে আসা সবজি ব্যবসায়ী রাকিবুল, তাহের, লিয়াকতসহ আরো বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, মংলা বন্দর গতিশীল হওয়ায় খুলনা-মংলা মহাসড়ক এখন ব্যস্ততম সড়ক। প্রতিদিনই মংলা বন্দর ও মংলা ইপিজেড-এর পণ্য বোঝাই অসংখ্য ট্রাক, লরী, বাস এ পথে যাতায়াত করে। মহাসড়কের পাশে বলে সারাক্ষণই আমরা ঝুঁকির মুখে থাকি। না জানি কখন গাড়ি আমাদের গায়ের ওপর উঠে বসে।

ভাগা বাজারে বাজার করতে আসা ভাগা গ্রামের স্কুল শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন ও দিগরাজ বাজারে বাজার করতে আসা একটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সপ্তাহের বাজার করতে এলাকাবাসীকে এখানে আসতেই হয়। এরকম ব্যস্ত মহাসড়কের পাশে বাজার মানেই তো দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
খুলনা-মংলা বাস সার্ভিসের চালক সেলিম শেখ ও ট্রাক চালক সোহাগ শেখ বলেন, ‘দুই পাশের বাজারের দোকানগুলো প্রায়শই রাস্তার ওপরে ওঠে আসে। বাজার করতে আসা লোকজনের ভিড়ে গাড়ি চালানো যায় না। আমাদের খুব আতংকের মধ্যে গাড়ি চালাতে হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামপাল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিল হাসান জামু বলেন, আমরা সরকারি কিছু খাস জায়গা নির্ধারণ করে সরকারের কাছে সেখানে বাজার স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছি। তবে মংলা-খুলনা সড়ক চার লেনে উন্নিত হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সেটি শেষ হলেই বাজার মহাসড়কের পাশ থেকে স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

মংলা উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিখিল চন্দ্র রায় বলেনÑ আমরা স্থানীয় প্রশাসন, সড়ক ও জনপথ বিভাগকে বিষয়টি জানিয়েছি। দিগরাজ বাজার স্থানান্তরের জন্যে আমরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি জায়গার জন্যে আবেদন করেছিলাম। কিন্তÍ কোন সাড়া মেলেনি।

এ বিষয়ে মংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মো. রাহাত মান্নান জানান, দিগরাজ বাজারটি রোডস এন্ড হাইওয়ের জমিতে বসে, এজন্য উপজেলা প্রশাসনের করনীয় ক্ষমতা কম। তারপরেও জনগনের জানমালের কথা বিবেচনা করে পরবর্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জীবন

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ